মসজিদে সম্প্রীতির বার্তা পৌঁছে দিল সেনাবাহিনী

প্রকাশিত: ২৬ অক্টোবর ২০১৮, ১১:৪২ পিএম

শান্তি, সম্প্রীতি আর উন্নয়নের মূলমন্ত্রকে বুকে ধারণ করে দেশের ভূখণ্ড রক্ষার পাশাপাশি পাহাড়ে নানা ধরণের ব্যতিক্রমী উদ্যেগে নানা রুপে আবির্ভূত হতে দেখা যায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। কখনো মন্দিরে, কখনো কিয়াং, কিংবা কখনো মসজিদের দরজায়, নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তার হাত বাড়িতে দিতে কার্পণ্য করেনি সেনারা।

আর এবার নতুন রুপে পাহাড়ের বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে শান্তির বার্তা নিয়ে হাজির সেনা সদস্যরা।

শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য পবিত্র দিন, বিশেষ প্রার্থনার দিন, আর মসজিদে মসজিদে হয়ে থাকে জুমার জামাত, যাকে বলা হয় গরীবের হজ।

‘শান্তির সংকল্পে ঐক্যবদ্ধ সিন্দুকছড়ি’ এই মূলমন্ত্রকে সামনে রেখে সকাল থেকেই খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ২৪ আর্টিলারি ব্রিগেড ও গুইমারা সেনা রিজিয়ন অধিনস্ত ১৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি সিন্দুকছড়ি জোন আওতাভুক্ত গুইমারা, রামগড় ও মানিকছড়ির বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে ইমাম সাহেবদের কাছে চিঠি পাঠাতে ব্যস্ত দেখা গেছে সিন্দুকছড়ি জোনের সেনা সদস্যদের। এছাড়া জুমার নামাজের আগেই চিঠিটি হুবুহু মুসল্লীদের পড়ে শোনাতে ইমামদের প্রতি অনুরোধও ছিলো তাদের।

রহস্যের অন্তরা ঘাটতে গিয়ে দেখা মিললো, সেনাবাহিনীর আদর্শ ও সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। জামাত শুরু হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে দেখা মেললো রহস্যজনক চিঠির আসল রুপ। আসলে সেখানে লেখা ছিল পাহাড়ে, পাহাড়ী-বাঙ্গালীর সম্প্রীতির কথা, ভ্রাতৃত্বেও কথা, ধর্মের কথা, মানবিকতার কথা।

মূলত সেখানে সিন্দুকছড়ি জোন অধিনায়ক লে: কর্ণেল রুবায়েত মাহমুদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো, গত ২২ এবং ২৩ অক্টোবর রাতে দুর্বৃত্তদের হাতে ভাংচুর হওয়া গুইমারার কুকিছড়ার বৌদ্ধ মন্দিরটির কথা।

অধিনায়ক শুরুতেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সালাম জানিয়ে মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, ইসলাম তথা মুসলিমের হাতে সর্বদা অন্য ধর্ম নিরাপদ, ইসলামে হানা-হানি, রক্তপাত এসব কখনো মেনে নেয়া হয়না।

কুকিছড়ায় সন্ত্রাসী গোষ্ঠী কর্তৃক বৌদ্ধ মূর্তি ভেঙ্গে ফেলার পর বর্তমানে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অনূভূতি আর আর কোন দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক মুসলমানদের মসজিদ ভেঙ্গে ফেলার অনুভূতি একই। তাই সকল ধর্মপ্রাণ ও শান্তিপ্রিয় মুসলিম ভাইদেরকে তাদের মর্মাহত বৌদ্ধ ভাইদের পাশে দাড়ানোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া চিঠিতে জোন অধিনায়ক রিজিয়ন কমান্ডার ব্রি. জেনারেল এ কে এম সাজেদুল ইসলামের পক্ষ হতে যেকোন ঘটনায় সকল মুসলমানদের মানবিকতার দৃষ্টিকোন থেকে কোনরুপ বিশৃঙ্খলা না করে ধৈর্য ধারণ করে একে অন্যের প্রতি বিশ্বাস রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন।

&dquote;&dquote;এদিকে সেনা কর্মকর্তাদের সম্প্রীতির এমন দৃষ্টান্ত দেখে বিস্ময়ে হতবাক পাহাড়বাসী, অনুভূতি প্রকাশকালে স্থানীয় এক মুসল্লি জানান, বর্তমানে শান্তি, সম্প্রীতি আর মূল্যবোধ যেন সোনার হরিণ, কিন্তু জোন অধিনায়ক মহোদয় সবাইকে আবারও মনে করিয়ে দিয়েছেন ইসলাম কি? কেন? এবং কিসের ওপর প্রতিষ্ঠিত।

সেনাবাহিনীর এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয়দের প্রত্যাশা, সন্ত্রাস দমনের পাশাপাশি ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনীর এমন মহৎ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে পাহাড়বাসীর জন্য।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: