কৃষক ‘মাশরাফি’
‘শহরে দম বন্ধ হয়ে আসে।’ প্রায়ই মাশরাফি বিন মুর্তজার কণ্ঠে শোনা যায় এমন আক্ষেপের কথা। তাই সুযোগ পেলেই ছোটেন নিজ গ্রাম নড়াইলে। যান উত্তাল পদ্মায় স্পিড বোটে চড়ে। রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চারের সাধ নিয়ে। তিনি নিজ গ্রামে আছেন আর মাঠে খেলছেন না এমন দৃশ্য খুব বিরল। ভুলে যান শহুরে পোশাকের কথা। জার্সি, ট্রাউজার ছেড়ে লুঙ্গিতেই যেন আনন্দ পান বেশি। এখানেই শেষ নয়, বিশ্বের অন্যতম ওয়ানডে অধিনায়ক হয়ে যান একজন কৃষকও।
ক্রিকেট মাঠের ২২ গজে তিনি যেমন দেশের জন্য স্বপ্নের ফসল ফলান। তেমন গ্রামের পুকুরে মাছ, নিজের ক্ষেতের নান রকম সবজি চাষ সবই করেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন বাবা গোলাম মুর্তজা। মূলত বাবার কাছ থেকেই তিনি উৎসাহ পেয়েছেন গ্রামের মাটিতে ও পুকুরে স্বপ্ন ফলানোর। আর তাতেই এখন শহরে বসে কিনে খেতে হয় না মাছ কিংবা সবজি। ৮ই নভেম্বর ২০০১ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জাতীয় দলে তার অভিষেক। এরপর ধীরে ধীরে হয়ে উঠেন নড়াইল ‘এক্সপ্রেস’। ১৭ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে কত দেশ, কত শহর, অর্থ, বিত্ত-বৈভব পেয়েছেন মাশরাফি। পেয়েছেন গোটা ক্রিকেট বিশ্বের ভালোবাসা। কিন্তু তিনি ভোলেননি মাটির টান, গ্রাম বংলার সবুজের প্রতি ভালোবাসা। যে কারণে সবার জন্য তিনি সত্যিকারের ‘মাটির মানুষ’।
খুলনা বিভাগের নড়াইল শহরের অদূরে জুড়ালিয়া গ্রামে মাশরাফির বাবা গোলাম মুর্তজা ১৬ বছর আগে কিনেছিলেন একটি পুকুর। তার বাবা সেই পুকুরেই মাছ চাষ শুরু করেন। তা দেখেই উৎসাহ পেয়ে মাশরাফি নিজেও কিনে ফেলেন আরো ৬টি পুকুর। বলতে গেলে মাশরাফির মাছ চাষের স্বপ্ন এখন ৭টি পুকুর জুড়ে। বিশাল জায়গাজুড়ে পুকুরগুলোতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির নানা রকমের মাছ চাষ। কি নেই সেখানে! কই, শিং, মাগুর, পাবদা, পুঁটি, টেংরাও। আবার বড় মাছ রুই-কাতলার জন্য আলাদা আলাদা পুকুর আছে। এখানেই শেষ নয়, পুকুর পাড়ের খালি জমিও বাদ রাখেননি মাশরাফি। সেখানে শুরু করেছেন সবজির চাষ। লাউ থেকে শুরু, পটোল, ডাটা, পেপে সবই আছে। আছে নানা রকম শাকও। যে কারণে শহরে থাকলেও সবজি ও মাছ কিনে খেতে হয় না মাশরাফির। নিজের গ্রাম থেকে এসব মাছ ও সবজি চলে আসে তার ঢাকার বাসায়। শহরে বসেই তিনি স্বাদ নেন তার প্রিয় গ্রামের মাটিতে ফলা ফসলের।
মাশরাফি ক্রিকেট জীবনে যতই বড় হয়েছেন তার স্বপ্নের একটি কোনো জুড়ে রয়েছে তার গ্রাম নড়াইল ও নড়াইলের মানুষ। কিছুদিন আগেই তিনি চালু করেছেন নড়াইল ফাউন্ডেশন। তবে সেখানে ক্রিকেট নয় প্রাধান্য পেয়েছে ফুটবল। সেখানেই তিনি গড়ে তুলছেন ফুটবলের জন্য প্রশিক্ষণের কেন্দ্র। করা হচ্ছে জিম, নেয়া হচ্ছে নামি-দামি কোচ। প্রতি ঈদেই তিনি ছুটে যান গ্রামে। সবার সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন। মাশরাফি যখন ক্রিকেট নিয়ে কথা বলেন সেখানেও ফুটে উঠে গ্রামের কথা। নড়াইলে গেলেই নাকি তিনি সুস্থ হয়ে উঠেন। খোলা বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে খুঁজে পান অপার্থিব শান্তি! সূত্র: মানবজমিন
বিডি২৪লাইভ/আরআই
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: