মনোনয়ন নিয়ে মিছিল শো-ডাউনে ইসির মানা

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:২৮ এএম

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তফসিল আচরণবিধি প্রতিপালনে নির্বাহী হাকিম ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে নির্দেশ দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এরই মধ্যে অংশ নিতে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মিছিল, শোভাযাত্রা ও শো ডাউন বন্ধের ব্যবস্থাও নিচ্ছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

সোমবার (১২ নভেম্বর) আচরণ বিধি প্রতিপালনে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা একজন করে নির্বাহী হাকিম নিয়োগে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ইসির যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান। সেই সঙ্গে ‘তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তির মিছিল-শোডাউন আচরণবিধি লঙ্ঘন’ উল্লেখ করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি মহা পুলিশ পরিদর্শকের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি দিচ্ছে ইসি।

ইসির নির্বাচন কমিশন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানান, রাজনৈতিক দলের ফরম সংগ্রহকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রার্থী ও সমর্থকদের মিছিল-শোভাযাত্রার বিষয়টি নজরে এসেছে কমিশনের। দলগুলোর কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে ঘিরে চলছে শোডাউন। এ ধরনের কর্মকান্ড আচরণবিধি লঙ্ঘন।

এ বিষয়ে পুলিশকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, পুলিশ সদর দপ্তর ও ডিএমপি কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ফলাফল গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে নজর দেবে কমিশন। এরমধ্যে প্রতীক পেয়ে বিধি মেনে প্রচারণার সুযোগ রয়েছে। আচরণবিধিতে বলা হয়েছে- কোনো বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন বা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহনসহ মিছিল কিংবা কোনোরূপ শোডাউন করতে পারবে না।

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল-শোডাউন করা যাবে না। জনগণের চলাচল বিঘ্ন করে এমন কোনো সড়কে জনসভা বা পথ সভা করা যাবে না।

দলের সভা করতে হলে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে স্থান, সময় সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে। যাতে ওই স্থানে চলাচল ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। ৮ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে রাজনৈতিক দলগুলো দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করেছে।

মনোনয়ন প্রত্যাশীরা দিনভর দলে দলে মিছিল, শোভাযাত্রা,শোডাউন করছে। রাস্তাঘাট আটকে উৎসাহীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছে; আবার এলাকায় ফিরছে দলবল নিয়ে। এসময় রাজধানীর অধিকাংশ এলাকায় দীর্ঘ সময় যানজটের কবলে দুর্ভোগে পড়ছে নাগরিকরা।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে মিছিল, শোডাউন ও ৫ জনের বেশি লোক নিয়ে আসায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করলে প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তিকে ৬ মাসের কারাদন্ড বা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার জরিমানা এবং সর্বোচ্চ শাস্তি প্রর্থিতা বাতিলের ক্ষমতা ইসির রয়েছে। রাজনৈতিক দল বিধি লঙ্ঘন করলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।

প্রতি উপজেলায় এখন থেকে একজন নির্বাহী হাকিম: জনপ্রশাস সচিবের কাছে লেখা চিঠিতে ইসির যুগ্মসচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, মোবাইল কোর্ট আইনের আওতায় আচরণবিধি প্রতিপালনার্থে প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী হাকিম নিয়োগের জন্য ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৩০০ নির্বাচনী এলাকায় ভোটের পরের দিন পর্যন্ত তারা নিয়োজিত থাকবেন।

প্রতিটি উপজেলায় একজন, সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি ৩ থেকে ৪টি ওয়ার্ডের জন্য একজন, সিটি করপোরেশন ছাড়া জেলা সদরে প্রতি পৌর এলাকায় এক থেকে দু’জন এবং পাবর্ত্য এলাকায় ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি অবস্থিত ৩ থেকে ৪টি উপজেলার জন্য একজন করে নিরর্বাহী হাকিম থাকবে। সংসদ নির্বাচনে ৬৪ জেলায় ৩০০ আসনে ৬৬ জন রিটার্নিং অফিসার (বিভাগীয় কমিশনার ২ জন ও ৬৪ জেলা প্রশিাসক) এবং ৫৭৯ জন সহকারি রিটার্নিং অফিসার (উপজেলা নির্বাহী অফিসার) নিয়োগ করা হয়েছে।

জোটভুক্ত প্রতীক ব্যবহারে আরও ৩ দিন সময়: জানতে চাইলে ইসির জনসংযোগ পরিচালক যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান জানান, ৮ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১১ নভেম্বরের মধ্যে জোটভুক্ত দলগুলোর অভিন্ন প্রতীক ব্যবহারের সুযোগ ছিল। পুনতফসিল হওয়ায় এবার ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত দলগুলো ফের সুযোগ পাবে। এ বিষয়ে দলগুলোকে কমিশন আবার চিঠি দেবে।
প্রচারণা শুরু হবে ১১ ডিসেম্বর থেকে: পুনতফসিল অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পরদিন ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ করবে রিটার্নিং অফিসার। ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, সেক্ষেত্রে দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থির১১ ডিসেম্বর থেকে প্রচারে নামতে পারবে। ভোটের দিনের পূর্ববর্তী তিন সপ্তাহ (২১ দিন) আগে প্রার্থীদের প্রচারণায় আরপিও ও আচরণবিধিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/এআই/এসএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: