যে কারণে ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে ঐক্যফ্রন্টের আপত্তি

প্রকাশিত: ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৫৬ এএম

নির্বাচন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণের নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

জোট থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না দিলেও ফ্রন্টের একজন নেতা বলছেন, এক মাস না পেছালে বিদেশী পর্যবেক্ষকের সংখ্যা কমে আসার আশঙ্কা রয়েছে।

এর আগে তারা রোববার (১১ নভেম্বর) নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার সময় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এ তফসিল এক মাস পেছানোর দাবি জানিয়েছিল।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ গণমাধ্যমকে বলছেন, কমিশনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে তাদের দাবির প্রতিফলন ঘটেনি এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজই তারা বৈঠকে বসবেন।

তিনি বলেছেন, ‘এটা আরও অনেক পিছাতে পারতেন। তাদের আইনগত কোন বাধা ছিল না এবং কোন তাড়াহুড়াও ছিল না। কেন তারা মাত্র সাতদিন বাড়ালেন এটা বোঝা মুশকিল। আমরা দলীয়ভাবে এটার একটা প্রতিক্রিয়া জানাবো।’

গত আটই নভেম্বর জাতীর উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে ২৩শে ডিসেম্বরকে ভোট গ্রহণের তারিখ রেখে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

আজ সেটি পরিবর্তন করে ৩০শে ডিসেম্বরকে নির্বাচনের নতুন তারিখ হিসেবে ঘোষণা করেছেন তিনি। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট হিসেবে সিইসি বলেন বিএনপি, বিকল্প ধারা ও ঐক্যফ্রন্ট সহ অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বলেন তারা এ সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন এবং তাদের বিশ্বাস ছিল সব দল অংশ নিবে। সে আলোকেই নির্বাচন কমিশন তফসিল পুন:নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আরেকজন নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না গণমাধ্যমকে বলছেন তার ভাষায় দুটি যৌক্তিক কারণেই নির্বাচন এক মাস পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তারা। কমিশনের সেটি মেনে নেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

মান্না বলেন, ‘তিনশোটা আসনে মনোনয়ন দেয়া, বিভিন্ন দল মিলে একটা সমন্বিত কিছু করা, আসনগুলো বণ্টন করা, এগুলো সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। সাতদিন পিছিয়ে দেয়াটা যথেষ্ট নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘দ্বিতীয় আরেকটা বিষয় আমাদের বিবেচনায় ছিল যে যেহেতু একটা খুবই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের পরে আমরা চাচ্ছি একটা প্রশ্ন মুক্ত, গ্রহণযোগ্য হয়। সেই জন্য যাতে বিদেশি পর্যবেক্ষকরা অবাধে আসতে পারেন, পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। কিন্তু এরকম একটা সময় নির্বাচন হচ্ছে যখন ওদের বড়দিন শেষ করে তাদের আসবার সুযোগই খুব বেশি থাকবে না।’

কিন্তু নির্বাচন কমিশন সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা ও বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলছেন, কোনোভাবেই নির্বাচন আর পেছানো ঠিক হবে না।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তব সম্মত। ৩০ শে ডিসেম্বরের পরে আমাদের সরকারের সময় থাকে মাত্র ২৮ দিন, ২৮শে জানুয়ারি পর্যন্ত। এর মধ্যে কোন নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন স্থগিত হতে পারে। আবার পুনঃ নির্বাচন হতে পারে। সেজন্য একটা সময়ের প্রয়োজন। আমার মতে ৩০ তারিখ বাস্তব সম্মত হয়েছে। এর পরে যাওয়া বাস্তবসম্মত হবে না।’

তবে দীর্ঘকাল ধরে নির্বাচন-কালীন পরিস্থিতির পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করা সংস্থা ব্রতীর নির্বাহী পরিচালক শারমিন মুরশিদ অবশ্য বলছেন, নির্বাচন কমিশন তার অবস্থান থেকে একটু সরে এসেছে সেটাই একটা ইতিবাচক বার্তা দিবে।

তিনি বলছেন, ‘যে রাজনৈতিক দলগুলো, যারা চাপ বোধ করছিলো, যারা বোধ করছিলো যে সময় খুব কম, যারা নিজেদেরকে গুছিয়ে উঠতে পারেন নি, তাদের দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নির্বাচন কমিশন এই কাজটি করে পরিবেশটাকে আর একটু ভালো করলো।’

শারমিন মুরশীদ বলেন কমিশন সব দলকে যতটা বেশি সম্ভব এক মতের জায়গায় নিয়ে আসতে পারবে নির্বাচন সবার কাছে ততটা বেশি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হবার সম্ভাবনা তৈরি হবে। সূত্র: যুগান্তর।

বিডি২৪লাইভ/এসএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: