আ’লীগের মন্ত্রীর ছেলে নির্বাচন করবে ধানের শীষে

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ১১:০৫ এএম

হবিগঞ্জ-১ আসনে (নবীগঞ্জ-বাহুবল) হঠাৎ করে ‘ধানে শীষ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে আলোড়ন তুলেছেন প্রয়াত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া তনয় ড. রেজা কিবরিয়া। এ নিয়ে নবীগঞ্জ-বাহুবল নির্বাচনী এলাকায় আলোচনা শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ, বিএনপি উভয় দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে কৌতুহল বিরাজ করছে রেজা কিবরিয়ার প্রার্থীতার ঘোষণা নিয়ে।

গত শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘নবীগঞ্জ-বাহুবল থেকে নির্বাচন করতে চান ড. রেজা কিবরিয়া’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে তিনি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন। দলীয় অনেক নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ ড. রেজা কিবরিয়া সম্পর্কে ইতিবাচক মতামত প্রকাশ করেন।

তারা বলেন, হবিগঞ্জের উন্নয়নে তার পিতার অনেক অবদান রয়েছে। ব্যক্তি জীবনে ড. রেজা কিবরিয়া ক্লিন ইমেজের মানুষ। তিনি নির্বাচিত হলে পিতার মতই অবদান রাখবেন বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া পুত্র ড. রেজা কিবরিয়া বিগত ১/১১ এর সময়ে আওয়ামী লীগের সংস্কার পন্থী দলে থাকায় শেখ হাসিনার রোশানলে পড়েন ফলে বিগত ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের জন্য লবিং করেও দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হন। এতে করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রার্থী হিসাবে অংশগ্রহণ করবেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এর অন্যতম শরীক গণফোরাম থেকে মনোনয়ন পেতে শুক্রবার (১৬ নভেম্বর) তিনি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তিনি নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এ প্রতিনিধির সাথে শুক্রবার সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি আরও জানান জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনয়ন দিলে শতভাগ নিশ্চিত তিনি ধানের শীষ প্রতিকে নির্বাচন করবেন। হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।

ড. রেজা কিবরিয়া নবীগঞ্জ উপজেলার দেবপাড়া ইউনিয়নের জালালসাপ গ্রামের এক মুসলিম পরিবারে ১৯৫৭ সনের ৬ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। জালালসাপ গ্রামেই তার শৈশব কেটেছে। কৈশোর আর যৌবনের বেশির ভাগ সময় কেটেছে বিদেশে। তিনি বর্তমানে জাতিসংঘে কাজ করছেন এবং তিনি কম্বোডিয়ার সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে এখনও কর্মরত আছেন। তার বাবা শাহ এএসএমকিবরিয়া ছিলেন জাতিসংঘের সেক্রেটারী আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জের বৈদ্যারবাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। এরপর ২০০৬ সালে ইয়াজ উদ্দিন সরকারের অধীনে নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন পান। পরে সংস্কারপন্থী দলে চলে যাওয়ায় তার পরিবর্তে ২০০৮ সালে দেওয়ান ফরিদগাজীকে এ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১০ সালে দেওয়ান ফরিদগাজী মৃত্যুরবণ করলে উপ-নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শেখ সুজাত মিয়া নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জাতীয় পার্টির এম.এ মুনিম চৌধুরী বাবু নির্বাচিত হন।

এ ব্যাপারে ড. রেজা কিবরিয়ার চাচাতো ভাই শাহ গোলাম মুর্শেদ বলেন, ড. রেজা কিবরিয়া ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচন করবেন জনগণ যদি তাকে মূল্যায়ন করে তার বাবার মতো সেও এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

এ বিষয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ.ক.ম ফখরুল ইসলাম বলেন, ড. রেজা কিবরিয়া প্রার্থী হয়ে আসলে ভোটের হিসাব নিকাশে উলটপালট হবে এখানে কে নির্বাচিত হবে সেটা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে রেজা কিবরিয়ার প্রার্থীতার ঘোষণায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

এদিকে ফেসবুকে রেজা কিবরিয়ার পক্ষে বিপক্ষে প্রচারণা হচ্ছে- বিএনপির নেতা কর্মীরা কেউ স্বাগত জানিয়ে পোষ্ট করছেন আবার কেউ বিএনপি নেতা সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়ার পক্ষে পোষ্ট করছেন।

এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব ছাবির আহমদ চৌধুরী বলেন, এখনো কোন গ্রীন সিগনাল আমরা পাইনি দলের হাই কমান্ড কি সিদ্ধান্ত নেয় সেই অপেক্ষায় আমরা আছি। আমি মনে করি ড. রেজা কিবরিয়ার বাবা হত্যা মামলার আসামি বিএনপি নেতাকর্মী এবং সেই রেজা কিবরিয়া ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করনে এটা নিয়ে আমরা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। আমাদের এখানে দলীয় ভাবে শেখ সুজাত সাহেবই যোগ্য প্রার্থী। আমরা তাকেই ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসাবে দেখতে চাই।

নবীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আহমদ বলেন, ড. রেজা কিবরিয়া ঐক্য ফ্রন্টের প্রার্থী হয়ে আসলে কেন্দ্রীয় নির্দেশ আমাদের মানতে হবে। কেন্দ্রে যাকে ধানের শীষ দেবে আমরা তার পক্ষেই কাজ করবো।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: