জরিনা হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন

প্রকাশিত: ১৭ নভেম্বর ২০১৮, ০১:০৬ পিএম

সাভারের আশুলিয়া এলাকায় বাসে এক নারী যাত্রীকে হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) ঢাকা জেলা।

এ ঘটনা সংক্রান্তে মামলার বাদী সহ অপর দুই পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বাসটি আটক করেছে পিবিআই ঢাকা জেলা পুলিশ। এ ঘটনার পর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মামলার বাদী আশুলিয়া গাজীরচট এলাকার মো: নুর ইসলাম (২৯), একই এলাকার মোছা: আমেনা বেগম (৪৮), মো: মতিয়ার রহমান, এবং সিরাজগঞ্জের চৌহালী করোয়াজানি এলাকার মো: স্বপন (৩৫)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ জেলার চৌহালী থানার খাসকাওলী গ্রামের মৃত মহির উদ্দিনের স্ত্রী ভিকটিম জরিনা খাতুন তাহার পিতা আকবর আলী মন্ডল (৭০) সহ গত ৯ নভেম্বর দুপুরে আশুলিয়া থানার গাজীরচট মুন্সীপাড়া এলাকায় ভিকটিমের মেয়ের জামাই মামলার বাদী নুর ইসলাম এর বাড়িতে বেড়াতে আসে। ওইদিন তারা দুপুরের খাবার খেয়ে বিকাল আনুমানিক ৫টার সময় নিজ বাড়ি সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে বের হয় এবং টাঙ্গাইলগামী একটি মিনিবাসে উঠে। কিছুক্ষণ পর বাসে থাকা হেলপার ও আরো কয়েকজন লোক মারধর করে আলী মন্ডলকে আশুলিয়া মরাগাং এলাকায় নামিয়ে দেয়। জরিনা খাতুনকে নিয়ে বাস চলে যায়। আকবর আলী বিষয়টি তার আত্মীয় স্বজনকে জানায়। সংবাদ পাওয়ার পর ভিকটিম জরিনার মেয়ের জামাই নুরুল ইসলাম সহ আকবর আলীর আত্মীয় স্বজন এসে আশুলিয়া ব্রিজের ৫০০ গজ উত্তর পার্শ্বে মরা গাং এলাকায় জরিনা বেগমের মৃতদেহ খুঁজে পায়।

এ ঘটনা সংক্রান্তে ভিকটিমের মেয়ের জামাই নুর ইসলাম বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

&dquote;&dquote;এ মামলাটি প্রথমে আশুলিয়া থানা পুলিশ তদন্ত করে। মামলাটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা হওয়ায় পরবর্তীতে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স এর আদেশে পিবিআই ঢাকা জেলা তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে জানা যায়, মামলার ভিকটিম মৃতা জরিনা খাতুনের মেয়ে রোজিনার সাথে বিয়ের পর থেকে তার জামাই এবং শ্বশুর শ্বাশুড়ির কলহ চলে আসছিল। গত সপ্তাহ খানেক আগে এই কলহ মারাত্মক আকার ধারণ করে। এক পর্যায়ে ভিকটিমের মেয়ে রোজিনাকে তার স্বামী নুর ইসলাম ব্যাপক মারধর করে।

এ ঘটনাটি জানাজানি হলে এই নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। রোজিনার স্বামী এবং তার শ্বাশুড়ি তাদের পরিবারের কলহের জন্য রোজিনার মাকে দায়ী করে এবং নিজেদের মধ্যে পরামর্শ করে তাকে কিভাবে সরিয়ে দেওয়া যায় তা পরিকল্পনা করতে থাকে।

পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মামলার বাদী নুর ইসলাম এবং তার মা আমেনা বেগম ভিকটিম জরিনার বিয়াই স্বপন এর সহযোগিতায় ১০ হাজার টাকার চুক্তিতে একটি মিনি বাস (ঢাকা মেট্রো জ- ১১-১৭৯২) এবং উক্ত গাড়ির চালক, কন্ট্রাকটর, ২ জন হেলপারসহ ৪ জনকে ভাড়া করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাসটি আগে থেকে শিমুলতলা বাস স্ট্যান্ড এলাকায় দাড় করিয়ে রাখে এবং আসামি স্বপন তাদেরকে উক্ত বাসে উঠিয়ে দেয়।

বাসটিতে ভিকটিম এবং তার বাবা ছাড়া আর কোন যাত্রী না থাকায় বাসের মধ্যে থাকা চালক ও অপর সহযোগীরা বাসটি আশুলিয়া এলাকার বিভিন্ন রাস্তা ঘুরিয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে আশুলিয়া থানা এলাকার মরাগাং আশুলিয়া ব্রিজের উত্তর পার্শ্বে প্রথমে ভিকটিমের বাবাকে মারধর করে চলন্ত গাড়ি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এর পর ভিকটিম জরিনাকে মারধর করে হত্যা করে গাড়ি থেকে ফেলে দিয়ে চলে যায়।

প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে- ভিকটিমকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: