“বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা” শব্দের বিকৃত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা গ্রহণ 

প্রকাশিত: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮, ০৬:১৭ পিএম

ঝালকাঠির রাজাপুরে “বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা” শব্দের বিকৃতিসহ বেশ কয়েক বানানে ভুল সম্বলিত প্রশ্নপত্রে তৃতীয় শ্রেণির “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও অসামাঞ্জস্য ও বৈষম্য মূলক মানবন্টনে দি¦তীয় শ্রেণির “ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা” এবং “হিন্দু ও নৈতিক শিক্ষ” বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। সোমবার “বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়” এবং মঙ্গলবার “ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা” এবং “হিন্দু ও নৈতিক শিক্ষ” বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। রাজাপুর উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

রাজাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক প্রণিত বার্ষিক পরীক্ষার এ প্রশ্নপত্র পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের সরবারহ করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণীর প্রশ্নপত্রে ভূলগুলো হলো “যানাহন, বঙ্ঘবন্ধুর, মহসাগর, স্বীধীনতার ও ১৬ই ডসেম্বর” যা প্রকৃতপক্ষে হবে “যানবাহন, বঙ্গবন্ধুর, মহাসাগর, স্বাধীনতার ও ১৬ই ডিসেম্বর”।

এছাড়াও মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় শ্রেণির নির্ধারিত ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা, হিন্দু ও নৈতিক শিক্ষার প্রশ্নপত্রে মানবন্টনে বৈষম্যমূলক অসামাঞ্জস্য রয়েছে। প্রশ্নপত্রে এমন বানান ভুল দেখে অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের শিক্ষা ব্যবস্থা ও শিক্ষার মান নিয়ে সমালোচনা ঝড় উঠেছে।

অভিভাবকরা জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহুর্তে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ শব্দসহ অসংখ্য ভুল রয়েছে। এসব ভুল প্রুফ রিডারদের ইচ্ছাকৃত হয়েছে। তারা আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকারের প্রতি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের বিরূপ মনোভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে এমন কাজ করেছে। এধরণের আচরণে ক্ষুদ্ধ অভিভাবকরা যথাযথ তদন্তপূর্বক সুষ্ঠ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, রাজাপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম এবং সাংগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি দেবনাথ। তারা দু’জনে প্রশ্নের প্রুফ দেখে ২ হাজার টাকা খরচের ভাউচার অফিসে দেখিয়েছে। যদিও উভয়ে প্রশের প্রুফ দেখার বিষয়টি অস্বীকার করছেন। রাজাপুর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার কোডিং কাটিংয়ের কাজ করছি। আমি কোন প্রশ্নের প্রুফ দেখিনি। ওটার জন্য নির্দিষ্ট কমিটি আছে। প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি দেবনাথের সংশ্লিষ্টার বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।

প্রধান শিক্ষক হিমাদ্রি দেবনাথের মুঠোফোনে কল দিলে ওয়েটিং পাওয়া গেলেও তারই মধ্যে তিনি রিসিভ করে জানান, পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে সভাপতি করে কমিটি করা আছে। আমি প্রশ্নের বিষয়ে কিছু জানি না।

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ রফিকুল ইসলামের সাথে একত্রে কাজ করার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে জানান, প্রধান শিক্ষকদের প্রশ্ন করা প্রুফ দেখার দায়িত্ব ছিলো। সেখানে প্রশ্ন ঠিকভাবেই হয়েছে, প্রশ্নের প্রুফও ঠিক ছিলো। প্রেসে ছাপানোর সময় ভুল করেছে।

রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ আলমগীর জানান, বানান ভুল সম্বলিত প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি আমরাও জেনেছি। ডিপিও (জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার)এর নির্দেশক্রমে বিকেলে জরুরী মিটিং ডাকা হয়েছে। মিটিংয়ে আলোচনা সাপেক্ষে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইয়াদুজ্জামান জানান, রাজাপুর উপজেলা পরীক্ষা কমিটিতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাবৃন্দ এবং ২জন শিক্ষক (হিমাদ্রি দেবনাথ এবং মাহমুদা বেগম)কে সদস্য করা হয়েছে। প্রশ্নপত্রে ভুল বা অসংঙ্গতি হলে এর দায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন কমিটিকে বহন করতে হবে। এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: