দাম মিলছে না মুড়িকাটা পেঁয়াজের, হতাশ কৃষক!

প্রকাশিত: ০৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০৬:২৬ পিএম

হারুন-অর-রশীদ,
ফরিদপুর প্রতিনিধি:

সারাদেশের মধ্যে ফরিদপুর ও রাজবাড়ি অঞ্চলে মুড়িকাটা পেয়াজ চাষ বেশি হয়। গত ১৫ দিন আগে থেকেই এই মুড়িকাটা পেঁয়াজ তোলা শুরু হয়েছে। ফলনও হয়েছে মোটামুটি। তবে গত বছরের মতো এবার এই মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম মিলছে না। এতে অবশ্য ক্রেতারা খুশি হলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছে কৃষক।

চলতি বছর ফরিদপুরে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ফরিদপুর সদর উপজেলায় ২ হাজার ২০ একর জমিতে। এর পরে রয়েছে সদরপুর উপজেলা সেখানে আবাদ হয়েছে ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। এ জেলার মধ্যে এ পেঁয়াজের আবাদ সবচেয়ে কম হয়েছে আলফাডাঙ্গা উপজেলায়, মাত্র ৫০ হেক্টর জমিতে। কমের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নগরকান্দা উপজেলা, ৮০ হেক্টর।

ফরিদপুর সদরে পদ্মা নদী অধ্যুষিত নর্থ চ্যানেল, চর মাধবদিয়া ও ডিক্রিরচর ইউপিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ হয় বেশি। নর্থ চ্যানেল ইউপির আয়জদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা পেয়াজ চাষি মো. কাওসার শেখ বলেন, তিনি দেড়শ বিঘা জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপন করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে তার পেয়াজ আবাদ করতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। কিন্তু বাজারে পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে অনেক কম দামে। বর্তমানে প্রতি মন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। ফলে তিনি লোকসানের মুখে পড়েছেন।

একই ইউপির কায়মুদ্দিন ডাঙ্গি গ্রামের পেঁয়াজ চাষি কলম শেখ বলেন, তিনি আড়াই বিঘা জমিতে এবছর মুড়িকাটা পেঁয়াজ রোপন করেছেন। কিন্তু পেঁয়াজ বিক্রি করে তিনি দাম পাননি। তবে পেঁয়াজের ফুল বিক্রি করে তিনি কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছেন।

নর্থ চ্যানেল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, তার ইউপিতে অন্তত তিনশ একর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করা হয়। এর পিছনে জড়িত রয়েছেন অন্তত তিন সহস্রাধিক কৃষক। পেঁয়াজের লাভজনক দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা নেমে এসেছে। এ পেঁয়াজ সংরক্ষণ করা যায় না। এ কারণে অনেক কৃষক খেত থেকে পেঁয়াজ তোলা বন্ধ করে দিয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্ত্তী সাংবাদিকদের বলেন, দেশের মধ্যে মুড়িকাটা পেঁয়াজ শুধুমাত্র ফরিদপুর ও রাজবাড়ী অঞ্চলেই হয়। এ পেঁয়াজের সুবিধা হচ্ছে একই চাষি মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদন করার পর হালি পেঁয়াজও উৎপাদন করতে পারেন। একজমিতে দুবার পেঁয়াজ উৎপাদন। এ দুই জেলাতেই হয়ে থাকে।

কৃষকদের দাম না পাওয়ার ব্যাপারে কার্তিক চক্রবর্ত্তী বলেন, মার্কেটিং (বাজার ব্যবস্থাপনা) নিয়ে মন্তব্য তার পক্ষে মন্তব্য করা কঠিন। কেননা বাজারের দাম নির্ধারিত হয় চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে। তবে এ কথা সত্য গত বছরের তুলনার এবার মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম অনেক কম।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: