শাহবাগে আন্দোলন, যান চলাচল বন্ধ

প্রকাশিত: ২২ জানুয়ারি ২০১৯, ০৬:০৪ পিএম

রাজধানীর শাহবাগে রাস্তা অবরোধ করেছে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা। তারা ৩০ শতাংশ কোটা বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে।

আজ মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলের দিকে তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিলে দু’পাশের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান জানান, হঠাৎ করে মুক্তিযোদ্ধা কোটার দাবিতে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানেরা অবস্থান নিয়েছে। তাদের বুঝিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ।

এদিকে সরকারি চাকুরীতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম এর ব্যানারে এ কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়।

মানববন্ধনে রাবি মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারণ সম্পাদক ধীরাজ চন্দ্র রায় সঞ্চালনায় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মুনির হোসেন, রাজশাহী মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সমন্বয়ক পরিষদের আহ্বায়ক সাফকাত মঞ্জুর বিপ্লব, সহকারী কমান্ডার রাজশাহী মহানগর ইউনিট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার, বঙ্গবন্ধু পরিষদের উপদেষ্টা নাজিম উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান জ্যাতিবসু বর্মন, মুহতাসিম বিল্লাহ মারুফ, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরবর্তীতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্মের পক্ষে মুখপাত্র অমর রায় শুভ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করেন।

তাদের দাবিগুলো হলো- রাজাকার স্বাধীনতা বিরোধী ও তাদের বংশধরদের সরকারী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, চাকরিচ্যুত এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা, সরকারি সকল চাকরিতে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূর্ণবহালের, সংরক্ষণ, বিশেষ কমিশন গঠন করে প্রিলিমিনারী থেকে শতভাগ বাস্তবায়ন এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষিত পদগুলো বিশেষ নিয়োগের মাধ্যমে পূরণ। জাতির পিতা ও তার পরিবারের বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অবমাননা কারীদের বিচার ও দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি ব্যবস্থা নিশ্চিত। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানীক স্বীকৃতি ও পারিবারিক সুরক্ষা আইন প্রনয়ণ এবং প্রয়োগ নিশ্চিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী সকল অপপ্রচার বন্ধ, কোটা সংস্কার আন্দোলন নামে স্ব-ঘোষিত রাজাকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বাসভবনে হামলাসহ সকল প্রকার অরাজকতা সৃষ্টিকারী স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ এবং দ্রুত আইনানুক ব্যবস্থা নিশ্চিতসহ সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ও প্রজন্মের বয়সসীমা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি করা।

দাবি বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দিয়েছেন বক্তারা।

গত ৪ অক্টোবর মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করে সরকার।

পরিপত্রে বলা হয়, নবম গ্রেড (আগের প্রথম শ্রেণি) এবং দশম থেকে ১৩তম গ্রেডের (আগের দ্বিতীয় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হলো। এখন থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে।

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা বাতিল হলেও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে কোটা ব্যবস্থা আগের মতোই বহাল থাকবে।

সরকারি চাকরিতে নিয়োগে এতদিন ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত ছিল। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ।

পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘সরকার সকল সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ জারি করা কোটা পদ্ধতি সংশোধন করল।’

প্রসঙ্গত, কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দেয় সরকার। ওই কমিটি প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে কোটা সম্পূর্ণ তুলে দেওয়ার সুপারিশ করে, যা ৪ অক্টোবর মন্ত্রিসভার অনুমোদন পায়।

বিডি২৪লাইভ/এইচকে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: