জামায়াত বিতর্ক এড়াতে যা করবে বিএনপি

প্রকাশিত: ২৩ জানুয়ারি ২০১৯, ১০:১৫ এএম

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্ট এখন থেকে নিবন্ধন বঞ্চিত দলের সাথে যৌথভাবে কোনো কর্মসূচি পালন করবে না বলে জানা গেছে। জামায়াতে ইসলামী নিয়ে বিতর্ক এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুই জোটেরই নেতৃত্বে থাকা বিএনপির নেতারা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আপক্তি না করলেও ভোটে জয়ী না হওয়ায় নির্বাচরের পর জামায়াত ইস্যুতে গণফোরাম তাদের কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকটি জেলার জনসভায় জামায়াতে ইসলামী ছাড়া ২০ দলের অন্য শরিকরা অংশ নিয়েছিল। 

ঐক্য টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আসন্নে যে কোনো ইস্যুতে আলাদা কর্মসূচি পালনে এ সিদ্ধান্ত দুই জোটের। এ সিদ্ধান্তে রাজি গণফোরামও।

এদিকে ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাভোগের এক বছর পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে তার মুক্তির দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বিএনপিসহ দুই জোট।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, তাকে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে, প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্য আটকে রাখা হয়েছে। তাকে মুক্তির দাবিসহ আমাদের দলীয় সকল কর্মসূচি অব্যাহত আছে, আগামী দিনেও থাকবে।

দলটির প্রধান সমন্বয়কারী এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, কর্মসূচির বিষয়ে ২০ দলীয় জোটে এখন পর্যন্ত কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ঐক্যফ্রন্ট পৃথক একটি সত্তা। ২০ দল পৃথক জোট। ঐক্যফ্রন্টের প্রোগ্রামের সঙ্গে আমাদেরটা এক হবে না। জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সংকটে ছিল বিএনপি।

এদিকে ড. কামাল হোসেনের দল গণফোরামসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে জোট গড়তে দেরি করে মূলত জামায়াতের কারণে। পরবর্তী সময়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে নতুন জোট হলেও শুরুর দিকে বিভিন্ন জনসভায় ২০ দলে থাকা অন্য শরিক দলগুলোর (জামায়াত বাদে) শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হতো না। এ নিয়ে শরিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

পরে নির্বাচনের এক মাস আগে থেকে রাজশাহীসহ বেশ কয়েকটি জেলার জনসভায় এলডিপির কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, কল্যাণ পার্টির মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিমসহ জোটের শীর্ষ নেতাদের (জামায়াত বাদে) আমন্ত্রণ জানালে তারা যোগও দেন।

কিন্তু জামায়াত নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক দিয়ে আসন ছাড় দেয়ায় নির্বাচনের পর অসন্তোষ ব্যক্ত করেন ড. কামাল হোসেন।

এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, নির্বাচনে জামায়াতের ২২ নেতাকে যে ধানের শীষ প্রতীক দেয়া হবে, তা তিনি জানতেন না।

জামায়াতের সঙ্গে একই প্রতীকে ভোট করাকে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, জামায়াত ছাড়তে বিএনপিকে চাপ দেয়া যেতে পারে। এরপর থেকেই বিএনপি ‘কৌশলী’ অবস্থান নিয়েছে।

সূত্র জানায়, ১৫ জানুয়ারি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা সিলেট সফরে গেলেও সেখানে ২০ দলীয় জোটের শরিকদের কাউকে নেয়া হয়নি। তারা ভোটের দিন সহিংসতায় নিহত সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতা সায়েম আহমেদ সোহেলের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারকে সহমর্মিতা জানাতে যান।

২১ জানুয়ারি ঐক্যফ্রন্ট নেতারা লালমনিরহাটে যান ভোটের দিন সহিংসতায় নিহত তোজাম্মেল হকের বাড়িতে। দ্বিতীয় দফার সফরেও নেয়া হয়নি ২০ দলীয় জোট শরিকদের কাউকে। 

বিডি২৪লাইভ/এসএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: