‘উপজেলা নির্বাচন জৌলুস হারাতে বসেছে’

প্রকাশিত: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০২:৩৪ পিএম

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকছে। এতে এই উপজেলা নির্বাচন জৌলুস হারাতে বসেছে। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, নির্বাচনকে অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে।

আজ মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রিটানিং কর্মকর্তাদের ট্রেনিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আগামী উপজেলা নির্বাচন সার্বিকভাবে অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না, এই সত্যকে মেনে নিয়েই নির্বাচন করতে হবে। ধারণা করা যায়, চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রায় প্রত্যেকেই নির্বাচিত হবেন এবং ওই পদে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে না, এটাই বাস্তবতা। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক না হলে বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য শব্দ দুটির উজ্বল্য থাকে না। তারপরও আনুষ্ঠানিকতার কারণেই নির্বাচন করে যেতে হয়। আমি মনে করি, পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, নির্বাচনের মৌলিক কাঠামো যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়, সেদিকে সর্তক থাকতে হবে।

তিনি বলেন, নির্বাচনের মৌলিক কাঠামো বলতে সংবিধান ও আচরণবিধিমালায় বর্ণিত সংশ্লিষ্ট সকলের দায়-দায়িত্ব পরিপূর্ণভাবে পরিপালনের নির্দেশ মান্য করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে চেয়েছি।

আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে তিনি বলেন, গতকাল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনায় আমি বলেছি যে, আইন ও শৃঙ্খলা এই দুটি শব্দের মধ্যেই নির্বাচনের মূল দর্শনটি নিহিত রয়েছে। নির্বাচন অবশ্যই আইনানুগ হতে হবে। আইনানুগ হওয়ার অর্থ সবার প্রতি সম আচরণ ও সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা। এছাড়া আইনের অন্য কোনো ব্যাখ্যা নেই। অন্যদিকে শৃঙ্খলার অর্থ নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সম্পন্ন করা। আইন ও শৃঙ্খলা কথাগুলোর সঙ্গে নির্বাচনে আচরণবিধি পরিপালনের বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আইন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করে কঠোরভাবে আচরণবিধি প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচনকে সার্বিকভাবে সাফল্যমন্ডিত করা সম্ভব। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলতে আমরা যাদের বুঝি, কেবল তারা নয়, আপনাদের হাতেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মূল কর্তৃত্ব বর্তায়।

মাহবুব তালুকদার বলেন, আমি এতক্ষণ যা কিছু বলেছি, তা কিছুটা তাত্ত্বিক। এবার নির্বাচনের ব্যবহারিক দিক নিয়ে কথা বলতে চাই। তবে এই ব্যবহারিক বিষয়ের কথা অনেকটা চর্বিত চর্বন মনে হতে পারে। এ ধরণের কর্মশালায় আমরা সাধারণত যে কথাগুলো বলে থাকি, তা হলো- নির্বাচন আইনানুগ হতে হবে, ভোটারগণ যাতে নিবিঘ্নে ভোট দিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে, রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের দায়িত্বপালনে কোনো শিথিলতা সহ্য করা হবে না, আমরা প্রশ্নবিদ্ধ কোনো নির্বাচন করতে চাই না, নির্বাচনে নিয়োজিত বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে আপনাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে- মোটামুটি এসব কথায় ঘুরে ফিরে আমরা বলে থাকি।

তিনি বলেন, যেহেতু আপনারা প্রায় প্রত্যেকেই ইতোপূর্বে নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করেছেন, সেহেতু এসব বক্তব্যের সঙ্গে আপনারা পূর্ব পরিচিত। তবু কথাগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে হয়। ছোটবেলায় পাঠ্যবইয়ে পড়তাম, সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয়। বারবার পড়ে কথাটি মুখস্থ করেছি। কেন মুখস্থ করেছি জানি না। কিন্তু বারবার পাঠ করেও তা মনস্থ হয়নি। আপনারাও হয়ত আমাদের নির্দেশাবলি মুখস্থ করে ফেলেছেন। কিন্তু কথাগুলোর পুনরাবৃত্তি করতে হচ্ছে, বিষয়সমূহ আপনাদের মনস্থ করার জন্য। আপনারা আমাদের বক্তব্য মনস্থ করলে বা হৃদয়ঙ্গম করলে কথাগুলো আর চর্বিত চর্বন মনে হবে না।

বিডি২৪লাইভ/এএইচ/টিএএফ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: