সৌদি আরবে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত

প্রকাশিত: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১০:১৫ এএম

নতুন প্রজন্মের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সৌদিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ এই কথা বলেন । 

রোববার (১৭ মার্চ) সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে এ উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন রাষ্ট্রদূত । এরপর দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ সহ জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ সময় রিয়াদে বসবাসরত বিভিন্ন পেশার অনাবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন। দিবসটি উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন, যথাক্রমে ইকোনমিক কাউন্সেলর ড. মো. আবুল হাসান, শ্রম কাউন্সেলর মেহেদী হাসান, শ্রমউইং-এর প্রথম সচিব মো. আসাদুজ্জামান এবং প্রেস উইং-এর প্রথম সচিব মো. ফকরুল ইসলাম।

দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্তে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল । শিশুদের বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে শিক্ষা লাভ করতে হবে । তিনি সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করার আহবান জানান।

রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্তে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে সৌদি আরব বাংলাদেশের সম্পর্ক আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশে সৌদি আরবের বিপুল পরিমান বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

দূতাবাসের উপমিশন প্রধান ড. মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ থেকে নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের শিক্ষা লাভ করতে হবে। তাঁর মত সৎ, নির্ভীক, চরিত্রবান হয়ে দেশের সেবা করার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

প্রথম সচিব মোঃ বশিরের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন দূতাবাসের মিনিষ্টার এস, এম আনিসুল হক। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা জীবন আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন মানুষের ভোট ও অধিকার আদায়ের জন্য। তার জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস ঘোষণার পিছনে একটি কারণ হলো, আমাদের শিশুরা বঙ্গবন্ধুর চিন্তা চেতনা ধারণ করে দেশ উন্নয়নে অংশগ্রহন করবে । কেন? ১৯৭৫ সালের পর থেকে এই পর্যন্ত তার মতো কেউ সৃষ্টি হয়নি বা হচ্ছে না কেন ? বঙ্গবন্ধু সৃষ্টির জন্য পারিবারিক, সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা খুব জরুরি।

অনুষ্ঠানে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ডা. শাহ্ আলম, আওয়ামী পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা মো. আলী নূর, সৈয়দ আনিসুর রহমান, সভাপতি এম আর মাহবুব, রিয়াদ যুবলীগের সভাপতি এম এ জলিল রাজা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দীন মজুমদার, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. রেজাউল করিম মিলন, সাহিদুল হক সাহিদ, মেহেদী হাসান মুরাদ, জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাস, রিয়াদ মহানগর যুবলীগের সভাপতি শওকত ওসমান চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনিরুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াকুব আলম রিয়াদ বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুবুর রহমান।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর উপর কবিতা পাঠ করেন রিয়াদে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সারা আজাদ, কবি শাহজাহান চঞ্চল, কবি মো. বশির খন্দকার ও জাহাঙ্গীর আলম হৃদয়।

পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত মাধ্যমে আলোচনা সভার সূচনা করেন, দূতাবাসের অনুবাদক সাদেক হোসেন । আলোচনা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। 
এছাড়া সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডের দুটি মসজিদে বন্দুক হামলায় বাংলাদেশি সহ সকল নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন, দূতাবাসের আইন সহকারি রাফিউর রাব্বী। শেষে দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়। রিয়াদ বাংলাদেশ আর্ন্তজাতিক বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করেছে।

এছাড়া, জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০১৯ উদযাপন উপলক্ষে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ১৭ মার্চ ২০১৯ তারিখে বিকাল ৫ টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে মূল কর্মসূচির সূচনা করেন, কনসাল জেনারেল এফ.এম. বোরহান উদ্দিন। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা।

দিবসটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে কনসাল জেনারেল এফ.এম. বোরহান উদ্দিন উপস্থিত প্রবাসীগণ ও শিশুদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বক্তব্য শেষে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

এরপর কনসাল জেনারেল দিবসটি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত রচনা ও চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। সবশেষে শিশুদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। সন্ধ্যায় কনস্যুলেট ভবন ছিল আলোক সজ্জায় সজ্জিত।

অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, কনস্যুলেটের সকল কর্মকর্তা- কর্মচারি, বাংলাদেশ কমিউনিটি, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, সামাজিক-সাংস্কৃতির সংগঠন, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র-ছাত্রী, মিডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ এবং অন্যান্য শ্রেনী-পেশার প্রবাসী বাঙালিগন উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ১৪ মার্চ ২০১৯ তারিখে কনস্যুলেট প্রাঙ্গনে বিকাল ০৪:০০ ঘটিকায় ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু’ ও ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ’ এর উপর শিশুদের রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৫ মার্চ ২০১৯ তারিখে জাতীয় পতাকা, বাংলাদেশের ফুল, ফল, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ এবং বাংলাদেশের প্রাকৃতিক দৃশ্য/সৌন্দর্য্যরে উপর শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার জেদ্দাস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বাংলা ও ইংরেজী মাধ্যমের প্রায় ১৫০ জন ছাত্র- ছাত্রী অংশগ্রহণ করে।

বিডি২৪লাইভ/এজে

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: