বিয়ের একমাস পরই প্রবাসীর স্ত্রীর রহস্য জনক মৃত্যু

প্রকাশিত: ২৭ মার্চ ২০১৯, ১১:৫১ এএম

হাতে এখনো মেহেদীর রং। রঙ্গিন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে স্বামীর সংসারে সবেমাত্র বসবাস সুমাইয়া আক্তার ঝড়ার (২০)। এর এক মাস যেতে না যেতেই লাশ হয়ে স্বামীর ঘর থেকে বের হলেন এ নববধূ। তবে এ মৃত্যু রহস্যজনক বলে দাবি করেছেন নিহতের পরিবার।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) রাত ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের ছোট ভগবানগঞ্জের (খোয়ারপট্টি) জামান ডাক্তারের বাড়ির তৃতীয় তলার চিলেকোঠা থেকে নববধুর লাশ উদ্ধার করা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিলো মেয়ে সুমাইয়াকে। কিন্তু জীবিতাবস্থায় শেষ আর যাওয়া হলো না। শ্বশুরবাড়ি থেকে লাশ হয়ে ফিরতে হলো তাকে। অকালেই ঝড়ে গেলো সুমাইয়ার জীবন।

বিয়ের এক মাস যেতে না যেতেই শ্বশুরবাড়িতে এক রহস্যঘেরা মৃত্যু হলো নববধূর । শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি পুত্রবধূ ঝড়া আত্মহত্যা করেছেন। অপরদিকে বাবা-মা ও ভাইয়ের দাবি ঝড়াকে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা বলা হচ্ছে। ঘটনাটি ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় ঘটলেও রহস্যজনক কারণে শ্বশুরবাড়ির লোকজন ঝড়ার মৃত্যুর খবর জানায় রাত বারোটায়।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার দারোগা আমিনুল ইসলাম জানান, রাত ১টায় নববধূর লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এমন ঘটনার খবর পেয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলার রামপাল থেকে বাবা আবদুর রহিম রাঢ়ী, মা নাজমা বেগম, একমাত্র ভাই রিংকু ছুটে আসেন। পরিবারের একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেয়ার মাত্র এক মাসের মাথায় লাশ হতে হওয়ার ঘটনায় নিহতের বাবা-মা, ভাইয়ের কান্নায় ছোট ভগবানগঞ্জের বাতাস ভারী হয়ে উঠে।

নিহতের বাবা আবদুর রহিম রাঢ়ী ওরফে সেন্টু জানান, ‘গত কয়েক বছর যাবৎ আমার মেয়ের সাথে ডাক্তার বাড়ির ছেলে ফায়াদ আহমেদ বাবুর বিয়ে দিতে নানাভাবে চেষ্টা চালায় তার পরিবার। অবশেষে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার আনুষ্ঠানিক ভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। আমেরিকা প্রবাসী বাবু বিয়ের এক মাসের মধ্যেই বিদেশ চলে যান। এরপর থেকেই বাবুর বাবা ফারুক হোসেন, মা আজমিরী বেগম, বোন ও বোনজামাই মোলক আহমেদ নানাভাবে ঝড়াকে নির্যাতন শুরু করে। ঝড়ার ননদের স্বামী মোলক আহমেদ নানাভাবে অত্যাচার চালিয়ে আসছিলো বলেও মায়ের কাছে অভিযোগ করেছিলো ঝড়া।’

গত চার দিন তাকে নিয়ে যেতে মুন্সীগঞ্জে থাকা বাবা-মাকে বারবার অনুরোধও করেছিলো ঝড়া। বুধবার সকালে মা ও ভাই এসে ঝড়াকে তার বাবার বাড়ি মুন্সীগঞ্জ নিয়ে যাবার কথা ছিল। ঝড়া যাচ্ছে, তবে লাশ হয়ে। কথাগুলো জানিয়ে অবুঝ শিশুর মতো কাঁদতে শুরু করেন নিহতের বাবা।

নারায়ণগঞ্জ থানার শীতলক্ষা ফাঁড়ির দারোগা আমিনুল জানান, মৃত্যুর ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের আগে বলা সম্ভব না।

বিডি২৪লাইভ/এসএএস

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: