ভুয়া সাংবাদিকের বিয়ে ফাঁদ, নিঃস্ব ফারুক!
মো: ফারুক। একটি জুতার দোকানের সেলসম্যান। তার গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানায়। জুতার দোকানের পাশাপাশি এক সময় ফারুক ডিসের ব্যবসাও করতেন ফারুক।
একদিন স্থানীয় এক স্টেশনে ফারুকের দেখা হয় এক মেয়ের সাথে। মেয়াটা স্টেশনে টিকিট না পেয়ে ঘুরতে ছিল। আর তা দেখে ফারুকের সহানুভূতি জাগে এবং সে মেয়েটিকে একটা টিকিট সংগ্রহ করে দেয়। এসময় মেয়েটি ফারুকের ফোন নম্বরটি চেয়ে নেয়। পরে স্বাভাবিকভাবেই কাটতে থাকে সব। মেয়েটি ফারুককে কখনোই ফোন দেয়নি।
কিন্তু দীর্ঘ পাঁচ বছর পর হঠাৎ একদিন মেয়েটি ফারুককে ফোন দেয়। জানায় তার নাম সুমি (ছদ্মনাম)। তিনি পাঁচ বছর আগে ফারুকের সহোযোগিতায় ট্রেনের টিকিট পেয়েছিলেন। তিনি একটা পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি সাংবাদিক।
সম্প্রতি কিছু সমস্যা হওয়ার কারণে সে একজন কবিরাজ খুঁজছেন। ফারুক তাকে সাহায্য করতে পারবেন কিনা?
এর জবাবে ফারুক সুমিকে সাহায্যের আশ্বাস প্রদান করেন এবং সুমিকে জামালপুরে আসতে বলেন। সুমি জানান তিনি গাজীপুরে থাকেন। তিনি দুই-এক দিনের মধ্যেই ফারুকের বাড়িতে আসবেন।
ফারুক সুমিকে আশ্বস্ত করেন তিনি সুমিকে একজন ভালো কবিরাজের কাছে নিয়ে যাবেন। যিনি ফারুকের পূর্ব পরিচিত।
এরপর সুমি এলে ফারুক তাকে ওই কবিরাজের কাছে নিয়ে যায় এবং নিজ দোকানে ফিরে যায়। এরপর গাজীপুরে ফিরে যায় সুমি। দিন দু’য়েক বাদে সুমি ফারুককে ফোন দিয়ে জানান কবিরাজকে তিনি ১৫০০ টাকা দিয়ে এসেছেন বাকি টাকা বিকাশে পাঠাবেন। পরেরদিন কবিরাজ ফারুককে ডেকে পাঠায় এবং ফারুককে সুমিকে বিয়ে করতে বলে।
কিন্তু এ ধরণের পরিস্থিতিতে কিছুটা ঘাবড়ে যায় ফারুক। জানান তিনি তার বাবা-মায়ের পছন্দের মেয়েকেই বিয়ে করবেন।
এরপর দিন দু’য়েক পর আবার জামালপুরে ফিরে আসে সুমি। তিনি তখন কবিরাজের মাধ্যমে প্রচার করেন ফারুক তার থেকে নগদ এক লাখ টাকা এবং তার স্বর্ণের চেইন নিয়েছেন। যা ফিরিয়ে না দিলে তিনি গাজীপুরে ফিরবেন না। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়ে হতবাক হয়ে যান ফারুক।
এরপর ফারুকের নামে চুরিসহ নারী নির্যাতনের মামলা করে সুমি। পরে পুলিশ ও স্থানীয় কাউন্সিলরের মধ্যস্থতায় ফারুক ও সুমির বিয়ে হয়। কিন্তু বাসর রাত থেকেই সুমি ফারুককে ডিভোর্সের জন্য চাপ দিতে শুরু করে।সুমি বলে ফারুক যেন তাকে ডিভোর্স দিয়ে তার দেনমোহরের তিন লাখ টাকা তাকে পরিশোধ করে দেয়।
এরপর ১০দিন বাদে সুমি গাজীপুরে ফিরে যায়। সেখানে গিয়ে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকিসহ নানান নির্যাতন চালায় সুমি। যাতে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে ফারুক।
এরপর ফারুক জানতে পারে সুমি কোন সাংবাদিক না। তার আরও দুইটা স্বামী আছে। ফারুকের মতো অন্য এক ছেলেকে ফাঁসিয়েছে সুমি। সুমির একটা মেয়েও আছে। সুমির স্বামী একজন সবজি ব্যবসায়ী।
এরপর ফারুক পুরো ঘটনা পুলিশের কাছে খুলে বলে এবং থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। এরপর পার হয়ে গেছে কয়েকটি বছর। কিন্তু তারপরেও এখনও ফারুককে বিভিন্ন সময় ফোনে নানান ধরণের হুমকি-ধমকি দেয়ে সুমি।
অন্যদিকে সুমির মামলার খরচ জোগাতে গিয়ে মোটা অংঙ্কের টাকা ঋণ হয়ে গেছে ফারুকের। সব মিলিয়ে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তিনি। ফারুক এ ঘটনায় জড়িতদের যথাযথ শাস্তির দাবি জানান।
(এই লেখাটি দেশের বেসরকারি একটি টেলিভিশনের ফাঁদ অনুষ্ঠান অবলম্বনে করা হয়েছে।)
বিডি২৪লাইভ/এইচএম/এমআর
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]
পাঠকের মন্তব্য: