কড়া নজরদারির মধ্যে থেকে দিনের আলোয় সহস্রাধিক গাছ কেটেছে বন খেকোরা

বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষের কড়া নজরদারির মধ্যে থেকে দিনের আলোয় সহস্রাধিক বৃহাৎকারের গাছ কেটেছে বনখেকোরা। গত শুক্রবার দিনের প্রথম প্রহরে দেড় শতাধীক গেছো এসে বন্দরের নিরাপত্তা বেস্টনীর মধ্যে প্রবেশ করে এবং সরকারের এ্যাকোয়ারভুক্ত জমি থেকে সহস্রাধিক গাছ কেটে সাবাঢ় করে দেয়। পরে টলি বোঝাই করে নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়ে আনসার সদস্যের জালে। কৌতুহলবসত: জিজ্ঞাসাবাদে থেমে যায় লক্ষাধীক গাছ চুরির অজ্ঞাত রহস্য। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের ফোনালাপে টলি বোঝাই গাছগুলো নিয়ে পালিয়ে যায় চোরচক্র। অজ্ঞাত কারণে ঘটনার পরের দিন শনিবার শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি চুরি মামলা করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে, প্রতিটি চায়ের দোকানে চলছে খোশ আড্ডা। এ যেনো বন্দর কর্তৃপক্ষের ছাঁই মুড়ি দিয়ে ঘি ভাত খাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানান, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দেড় শতাধীক গাছিরা এসে বন্দরের কড়া নিরাপত্তা বেস্টনীর মধ্যে থেকে সরকারের নতুন এ্যাকোয়ারভুক্ত জমির সহস্রাধিক গাছ কেটে টলি বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছিলো। গ্রামবাসীর ধারণা ছিল গাছগুলো বন্দরের পক্ষ থেকে কেটে ফেলার টেন্ডার হয়েছে। কিন্তু না। একপর্যায়ে দুপুরের দিকে আনসার বাহিনীর সদস্যরা এসে গাছ কাটার রহস্য জানতে চাইলে অজ্ঞাত ব্যক্তির ফোনালাপে থেমে যায় তারা। নাম মাত্র কাটা গাছের কিছু অংশ রেখে টলি বোঝাই গাছগুলো নিয়ে বেরিয়ে পড়ে তারা। সেদিন থেকে অদ্যবধি ঘটনাস্থলে অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়ে গাছ পাহারা দিচ্ছে আনসার সদস্যরা।
সরেজমিনে বেনাপোল স্থলবন্দরের সীমান্ত ঘেঁষা টার্মিনাল পাড়ায় গেলে দেখা যায়, নতুন এ্যাকোয়ারভুক্ত জায়গায় লক্ষাধীক আমগাছসহ বিভিন্ন জাতের বড় বড় গাছ রয়েছে। মাঝে মাঝে পড়ে আছে সহস্রাধিক কাটা গাছের গুঁড়ি। যা দিনের প্রথম প্রহরে শত শত মানুষের উপস্থিতিতে কেটে নিয়ে গেছে বন খেকোরা।
কথা হয় বেনাপোল স্থল বন্দরের নতুন এ্যাকোয়ার হওয়া একখন্ড জায়গার মালিক নাম “প্রকাশে অনিচ্ছুক” জনৈক ব্যক্তির সাথে। তিনি বলেন তার জমি এ্যাকোয়ার হলেও অদ্যবধি তিনি কোন টাকা পায়নি। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ তার জায়গা থেকে প্রায় এক মাস পূর্বে থেকে বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসা করলে বলে গাছগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। তোমরা বাধা দিওনা, তোমাদের জায়গা ও গাছের টাকা পাশ হয়ে গেছে, দ্রুত টাকা পেয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গত শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১২০ জন গেছো গাছ কেটেছে। এখন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে থানায় চুরি মামলা দিয়েছে।
কথা হয় বেনাপোল বন্দরের ডেপুটি ডাইরেক্টর মনিরুজ্জামানের সাথে। তিনি বলেন এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কোন কথা বলতে পারবেন না। তিনি জলিল সাহেবের সাথে কথা বলতে বলেন। পরে জলিল সাহেবকে রিং দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। কথা হয় বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক জনাব মোল্লার সাথে। তিনি জানান, জনৈক গাছ ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বন্দরের এ্যাকোয়ারভুক্ত জমিতে গাছ কাটতে আসে। পরে বন্দরের পক্ষ থেকে তাদেরকে টেন্ডারের কাগজপত্র দেখাতে বললে তা আনছি বলে গড়িমসি করে পালিয়ে গেছে। পরে ২ জনকে আসামী করে বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি চুরি মামলা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বেনাপোল স্থলবন্দরে স্থান সংকুলান হওয়ায় সরকার ইতিমধ্যে সীমান্ত টার্মিনাল সংলগ্ন ১৬.৪১৫ একর, যা ৫০ বিঘার মতো সম্পত্তি এ্যাকোয়ার করেন। যেখানে অনেক গাছ আছে। তাতে গাছের কারণে সরকারের এক কোটি সাত লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। সেখানে কিছু সুবিধাবাদী চোরেরা টেন্ডার হওয়ার পূর্বেই গাছগুলো চুরি করে কেটে নিয়ে যাওয়ার পায়তারা করছিলো। তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে, দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন ভুঁইয়া জানান, এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি চুরির মামলা দিয়েছেন। মামলা নং-২৫, তারখি-১৭.৯.২২ ইং।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]