‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকে ব্যবহৃত গালির ব্যাখ্যা দিলেন অমি

উঠতি বয়সীদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা কাজল আরেফিন অমি পরিচালিত ধারাবাহিক নাটক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’৷ তৃতীয় সিজন শেষ হওয়ার পর থেকে দর্শকদের আগ্রহ কারণে ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট-৪’ নির্মাণের পর বর্তমানে প্রচার চলছে। তবে সম্প্রতি প্রচারিত এ নাটকের কয়েকটি পর্বের সংলাপ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জোর সমালোচনা শুরু হয়।
নেটিজেনদের আপত্তির মুখে সেসব পর্ব ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানটি। ধ্রুব টিভির ইউটিউব চ্যানেল ঘুরে দেখা যায়—চতুর্থ সিজনের কয়েকটি পর্ব মুছে ফেলা হয়েছে। পাশাপাশি ধ্রুব টিভির ভেরিফায়েড ফেসবুকে এ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন নাটকটির নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি।
নাটকের বিতর্কিত সংলাপ ‘যৌনকর্মীর ছেলে’ ব্যবহার প্রসঙ্গে নিমার্তা অমি বলেন, যৌনকর্মীর ছেলে-সংলাপটা নিয়ে অনেকের দ্বিমত ছিল। আমার পয়েন্টটা হলো আমরা কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে অনেক গালিই দিয়ে কিংবা শুনে থাকি, যা আসলে প্রকাশযোগ্য নয়। তাই ওই গালির পরিবর্তে নতুন একটি শব্দ যোগ করেছি। এই ধরনের শব্দ বাস্তব জীবনেও কিন্তু আমরা ব্যবহার করে থাকি। বাংলাদেশের নাটক-সিনেমায়ও এই শব্দগুলো ব্যবহার হয়। তাই সেসব শব্দের বদলে আমি ‘যৌনকর্মীর ছেলে’ শব্দটি ব্যবহার করেছি। যৌনকর্মী একটা শ্রেণিকে বোঝায়। যৌনকর্মী বলা তো তাদের জন্য স্বীকৃতি। কিন্তু আমরা চরিত্রের প্রয়োজনে বা নেগেটিভিটি বোঝানোর জন্য অনেক সময় মদ খাওয়া, ধর্ষণ, সিগারেট খাওয়া, মিথ্যা বলা, চুরি করা বা গালি ব্যবহার করি। সেই জায়গা থেকেই শব্দটা ব্যবহার করেছি।
এটা নিয়ে যারা নেগেটিভ মন্তব্য করেছে, এরমধ্যে আমি খেয়াল করে দেখেছি একটা লেখাই বিভিন্ন পেজে আপলোড করা হয়েছে। একটা মুষ্টিমেয় গ্রুপ যারা ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ পছন্দ করে না তারা এই লেখাটা লিখে বিভিন্ন পেজে আপলোড দিয়েছে। কিন্তু আমরা এই সংলাপটা মিউট করার জন্য আপাতত সেই পর্বগুলো প্রাইভেট করে রেখেছি। যারা ব্যাচেলর পয়েন্টকে আপাতত অপছন্দ করছে না বা হেইট করছে তাদেরকে সম্মান জানিয়েই কাজটি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাচেলর পয়েন্টের আসল দর্শক যারা তারা কিন্তু সবাই সংলাপটি পছন্দ করেছে। বিভিন্ন পোস্টে যারা নেগেটিভ মন্তব্য করেছেন সেখানে গিয়ে কিন্তু তারা এটার পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। সেই জায়গা থেকে কিন্তু আমি চাইলে সংলাপটা রেখেও দিতে পারতাম। কিন্তু সেটা করিনি। কারণ যারা সংলাপটা অপছন্দ করছেন তারাও তো আমার দর্শক। তাদের সঙ্গে তো আমার ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা নেই। ব্যাচেলর পয়েন্ট দেখছেন বলেই নেগেটিভ জিনিসগুলো তাদের চোখে পড়েছে।
ব্যাচেলর পয়েন্ট আমি আকাশ থেকে বানাই না। সমাজ থেকেই বানাই। এখানে তাই দেখানো হয় যা আমরা করি। আমরা বাস্তবজীবনে কিন্তু কারণে-অকারণে এরচেয়েও বেশি গালি ব্যবহার করি। তার ফিফটি পারসেন্ট হয়তো নাটকে দেখাতে পারি। বাংলাদেশে এখন কিন্তু ওটিটিতে গালি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো বিপি দেওয়া হয় না। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সিনেমায়ও অনেক গালি রয়েছে। সেটা কিন্তু মানুষ পরিবার নিয়ে দেখেছে। আর ব্যাচেলর পয়েন্টের শুরুতেই তো আমরা ডিসক্লেইমার দিয়ে দিচ্ছি। এটা কিন্তু অ্যাডাল্ট কনটেন্ট। এটা বাচ্চাদের জন্য না।
তারপরও দর্শকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমার জায়গা থেকে আমি আরও সতর্ক থাকব। আরও বেশি বিপ ব্যবহার করবো। দর্শকের ভালোবাসা নিয়েই নাটকটি তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাবে। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ৪’ এর অন্যতম প্রধান চরিত্র পাশা (মারজুক রাসেল) এই চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সম্প্রতি প্রচারিত পর্বে তাকে একটি সংলাপে বলতে শোনা যায়—‘এই যৌনকর্মীর ছেলে।’ এই সংলাপ নিয়েই সমালোচনা শুরু হয়।
এর আগে রবিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ধ্রুব টিভির ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। সেখানে লেখা হয়, সম্প্রতি ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ফোরের প্রচারিত পর্বের কিছু সংলাপ নিয়ে আমাদের সম্মানিত দর্শকবৃন্দ আপত্তি জানিয়েছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করছেন। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে।
সম্মানিত দর্শকদের প্রতি সম্মান রেখে আমরা ব্যাচেলর পয়েন্ট সিজন ফোরের প্রচারিত আপত্তিকর পর্বগুলো আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে ডিলিট করে দিয়েছি। এবং ভবিষ্যতে আমরা নাটক প্রচারের ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হব। যেন আমাদের সমাজ এবং সংস্কৃতির ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব না পড়ে। দর্শকদের ভালোবাসাই আমাদের একান্ত চাওয়া, এই ভালোবাসা নিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
উল্লেখ্য, ব্যাচেলর পয়েন্টে অভিনয় করে মিশু সাব্বির, জিয়াউল হক পলাশ, মারজুক রাসেল, চাষী আলম, ফারিয়া শাহরিনসহ একাধিক তারকা আলোচনায় রয়েছেন। তাদের চরিত্রগুলোও পেয়েছে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা। বিশেষ করে কাবিলা, হাবু ভাই, পাশা ভাই নাটকটির কল্যাণে ভাইরাল চরিত্র। কাবিলার প্রেমিকা চরিত্র রোকেয়াও সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে মজার মজার সংলাপের কারণে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]