ওয়েটার থেকে শতকোটি টাকার মালিক মুক্তার, খুঁজছে গোয়েন্দারা

রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে মুক্তার হোসেন কাজ শুরু করেছিলেন ১৪ বছর আগে।এখন তিনি শতকোটি টাকার মালিক। যুক্তরাষ্ট্রে আছে বাড়ি ও গাড়ি।সেখানে থাকেন স্ত্রী ও সন্তানরা।অবৈধ বার ও নিষিদ্ধ বিদেশি মদের ব্যবসা করে বিপুল অর্থ-সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রাজধানীর উত্তরায় গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে কিংফিশার রেস্টুরেন্ট ও বারে অভিযান চালিয়ে ম্যানেজারসহ ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। এরপরই মুক্তার হোসেনের তথ্য বেরিয়ে আসে। তিনি বারটির মালিক। তবে অভিযানে তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি ডিবি। মুক্তার পলাতক রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
বৃহস্পতিবার রাতের অভিযানে ওই অবৈধ বার থেকে পাঁচ হাজার ৪০০ পিস বিয়ার এবং প্রায় ৬০০ বোতল নিষিদ্ধ বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ উদ্ধার করা হয়। ওই বারে প্রতিদিন সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের যাতায়াত ছিল। তাদের মধ্যে রয়েছেন সরকারি উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। শুক্রবার (৭ অক্টোবর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৮ সালের দিকে রাজধানীর বারিধারায় এভিনিউ নামে একটি রেস্টুরেন্টে ওয়েটার হিসেবে কাজ শুরু করেন মো. মুক্তার হোসেন। এরপর গুলশানে লেক ভিউ রেস্টুরেন্টেও ওয়েটার হিসেবে ছিলেন। সেই মুক্তার এখন শতকোটি টাকার মালিক। তার যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি-বাড়ি আছে। সেখানে বসবাস করেন তার স্ত্রী ও সন্তানরা। মুক্তার হোসেনের আরও বার রয়েছে। মিরপুর, গুলশান ও নারায়ণগঞ্জে তার অন্তত পাঁচটি বার আছে।
বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরার-১৩ নম্বর সেক্টরের গরীবে নেওয়াজ রোডে একটি ভবনে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই ভবনেই কিংফিশার রেস্টুরেন্ট নাম দিয়ে বার চালাতেন মুক্তার।
ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, আমাদের কাছে গোপন তথ্য ছিল যে, উত্তরার ওই ভবনে গান-বাজনার নামে ছেলেমেয়েরা ডিজে পার্টি করছে। একইসঙ্গে সেখানে বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমাণ মদ। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে অভিযান চালানো হয়। প্রথমে ভবনের সাত তলায় গিয়ে ডিবির দল দেখে অনেক ছেলেমেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে ভেতরে গিয়ে দেখে সেখানে প্রচুর নিষিদ্ধ বিদেশি মদ ও বিয়ার। ডিবির দল ৫-৬ তলায় গিয়ে একই অবস্থা দেখতে পায়।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, অভিযানে পাওয়া ৫০০ দামি নিষিদ্ধ বিদেশি মদ ও প্রায় ছয় হাজার ক্যান বিয়ার কীভাবে দেশে আনা হয়েছে এ বিষয়ে কোনো তথ্যই জানাতে পারেনি বার কর্তৃপক্ষ। কাগজপত্র দেখতে ডিবি পুলিশ বাড়িটিতে রাত ৯টা থেকে ২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। তারপরও তারা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। এরপর বার থেকে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে যাদের গ্রেফতার করা হয় তারা হলো- আবু সালেহ (৩৮), মো. মোহন (২১), মুকুল (৪০), মো. সিব্বির আহম্মেদ (২৫), রাসেল (২৪), আবুল কাসেম মিন্টু (৪২), নাহিদ দারিয়া (২০), শান্ত ইসলাম (২২), আলিম উদ্দিন (২৪), জালাল উদ্দিন (৩২), সাজ্জাদ হোসেন (২৭), রহমত আলী (২৫), খালেক সাইফুল্লাহ (২৭), ইমরান (৩৯), মো. সাহান শেখ (২৪), মো. মোফাজ্জেল (৫০), ওবায়েদ মজুমদার (২৪), ইবাদত খান (৩২), রাইস উদ্দিন (২৫), রায়হান (২১), রুবল (২৮), রিফাত (১৮), ফয়সাল (২২), শরিফুল ইসলাম (১৮), রাসেল (১৮), জাহিদ হাসান (১৮), রওশন জামিল রাসেল (৩০), হুমায়ুন কবির (২৫), তোফাজ্জেল হোসেন (২০), মো. রিয়াদ হোসেন (২৪), আল আমিন (৩১), কাইয়ুম (২২), নয় দাস (২৮), শাওন দাস (২২) ও মাহমুদুল হাসান (২১)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেন কিংফিশার বারের মালিক মুক্তার হোসেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অসাধু একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজশে অবৈধভাবে মাদক ব্যবসা চালাতের তিনি। অধিদপ্তরের একজন পরিদর্শকের নিয়মিত যাতায়াত ছিল ওই বারে। সেখান থেকে তিনি মাসোহারা আদায় করতেন।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]