স্কুল ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা, ক্লাস চলছে খোলা আকাশের নীচে

খোলা আকাশের নীচে পাঠদান চলছে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শাখারুঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকায় জরাজীর্ণ স্কুল ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষকরা জানান, ছেলে মেয়েদের লেখা পড়া চালিয়ে নেওয়ার স্বার্থে আলাদা শ্রেণীকক্ষ না থাকায় শিক্ষা বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে খোলা আকাশের নীচে পাঠদানের ব্যবস্থা নিয়েছেন শিক্ষকরা। প্রতিদিন খোলা আকাশের নীচে চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চ আনা নেওয়া করতে বিড়ম্বনা পোহাতে হলেও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য র্দীঘ ৬ মাস থেকে তারা এভাবেই পাঠদান করছেন।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা জানান, উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের এ বিদ্যালয়টির তিন কক্ষের একমাত্র পাকা ভবনটি বিগত দুই হাজার খৃষ্টাব্দে নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মাত্র ২২ বছর পর ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। এর ছাদ এবং গ্রেড বীমে দেখা দিয়েছে ফাটল। পলেস্তারা খসে পড়ায় কক্ষের গ্রেড বীমের রডে জং ধরেছে। মাঝে মধ্যেই দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। দেবে গেছে এর মেঝেও। বিকল্প ব্যবস্থা করতে না পেরে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন ১০৭ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত পড়ালেখা করছে এই বিদ্যালয়ে। যেখানে তাদের নিয়মিত পাঠদান করছেন পাঁচজন শিক্ষক। দুর্ঘটনায় আশঙ্কায় বিষয়টি জেলা ও উপজেলা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়।
পরে প্রকৌশল বিভাগের উচ্চতর একটি তদন্ত দল পরিদর্শন করে চলতি বছরের ৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনকে ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়ে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। এরপর কক্ষ সঙ্কটের কারণে বিদ্যালয় মাঠে সাময়িকভাবে একটি টিনের বেড়ার ঘর নির্মাণ করা হলেও গরমে হাসঁফাঁস করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। এতেও শ্রেণিকক্ষের সমাধান না হওয়ায় সেই থেকে খোলা আকাশের নীচে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলছে। ফলে কখনও রোদ কখনও বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের পড়ালিখা কার্যক্রম। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পরিত্যক্ত ভবনেই প্রশাসনিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আপন জানায়, খোলা আকাশের নীচে ক্লাস করতে তাদের খুব অসুবিধা হয়। বৃষ্টিতে বই খাতা ভিজে যায়। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেজুতি জানায়,ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে তাদের ক্লাস হচ্ছে টিনের ঘরে। রোদের কারণে টিনের ঘর খুবই গরম হয়। বসে থাকা যায় না। চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী জিহান ও রাজিয়া জানায়,বৃষ্টির কারণে কখনও কখনও পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস হয়। ক্লাস করার সময় দেয়াল থেকে পলেস্তারা তাদের গায়ে পড়ে। ফলে বিদ্যালয়ে তারা খুব আতঙ্কে থাকে। সহকারী শিক্ষক মেহেদি হাসান বলেন, পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পর তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নীচে তারা পাঠদান করছেন। এতে প্রতিদিন ভারী ভারী বেঞ্চ তোলা নামা করতে তাদের খুবই সমস্যা হয়।
প্রধান শিক্ষক নাজমা বানু বলেন, শ্রেণি কক্ষ সঙ্কটের কারণে পাঠদান কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কারণে খোলা আকাশের নীচে পাঠদান চললেও ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিত্যক্ত ভবনেই তারা চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। মাঝে মধ্যেই বীম থেকে পলেস্তারাও খসে পড়ছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ক্ষেতলাল উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোজাম্মেল হক শাহ বলেন, ভবনের ভগ্নদশার কারণে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য ৬ মাস আগে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের বাহিরে পাঠদান চলছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]