ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ছাত্রী নির্যাতনের দায়ে ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচজনের পুনরায় সাজা নির্ধারণে ভিসিকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর আগে গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালামের নেতৃত্বে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ওই পাঁচ ছাত্রীকে এক বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯ জুলাই উচ্চ আদালতের শুনানীতে বিশ^বিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বিধিসম্মত হয়নি বলে মন্তব্য করেন আদালত।
বুধবার (২৬ জুলাই) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বে এ নির্দেশ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অব কন্ডাক্টের প্রথম ভাগের ধারা ৪, ৫ ও ৭ এবং দ্বিতীয় ভাগের ৮ (২) ধারা অনুযায়ী ভিসিকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে এ বিষয়ে আগামী ২৩ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেন আদালত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানী করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানী করেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী বিশ্বিবদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গৃহীত সিদ্ধান্ত বহাল রাখার আবেদন করেন। কিন্তু আদালত সেই আবেদন নাকচ করেন এবং পূর্বের সিদ্ধান্ত বাতিল করে পুনরায় সিদ্ধান্ত নিতে বলেন। এসময় আদালত বিশ^বিদ্যালয়ের পূর্বের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। বিশ্বিবদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে পূর্বের সাজাকে কোড অব কন্ডাক্ট অনুযায়ী সর্বোচ্চ বলা হলেও আদালত একে যথোপযুক্ত মনে না করে একে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আইনের অজ্ঞতা বা ইচ্ছাকৃত অবহেলা বলে মন্তব্য করেন।
আদালত নির্দেশিত কোড অব কন্ডাক্টের ধারা সমূহ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রথম ভাগের ৪ ধারায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থীর অপরাধের জন্য বিশ্বিবদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা যথোপযুক্ত মনে করে সেই শাস্তি দিতে পারেন। এতে নির্ধারিত কোন সীমারেখা দেওয়া হয়নি। ৫ ধারায় রাষ্ট্রীয় আইনের চোখে অপরাধমূলক কর্মকান্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাস্তি দিতে পারেন। দ্বিতীয় ভাগের ৮(২) ধারা অনুযায়ী ভিসি সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে শৃঙ্খলা কমিটির নিকট প্রেরণ করবে। এসব ধারার আলোকে অভিযুক্তদের আরো অধিক শাস্তি এমনকি বিশ^বিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করারও সুযোগ আছে বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসিন বলেন, আদালত বিশ^বিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে বাতিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির যে বিধান আছে সে বিধান অনুসরণ করে শাস্তি দিয়ে আগামী ২৩ আগস্ট হাইকোর্টকে জানাতে বলেছে। এ ক্ষেত্রে কোন কোন ধারায় শাস্তি দিতে হবে তা-ও উল্লেখ করে দিয়েছেন।
নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন বলেন, আমি আমার দাবিতে অনড় রয়েছি। আমার চাওয়া তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হোক।
প্রক্টর প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমরা অফিসিয়ালি পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর