তারিন তাসনীম, জাবি থেকে: দ্রুততম সময়ে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন এবং অপরিকল্পিতভাবে টারজান পয়েন্টে তৃতীয় প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ চেষ্টার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের(জাবি) শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, মিছিল ও সমাবেশ হয়।
বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকাল পৌনে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বটতলা থেকে শুরু হয় এবং সমাজবিজ্ঞান ভবন ঘুরে টারজান পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। পরবর্তীতে সেখানে সমাবেশ করা হয়। সমাবেশে নূরে তামিম স্রোতের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শাখার ছাত্র ইউনিয়নের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আশফার রহমান নবীন বলেন, জাহাঙ্গীরনগরের প্রান প্রকৃতি ধ্বংস করে কংক্রিটের নগরীতে পরিনত করতে চায় এই প্রশাসন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তি ভিত্তিক উন্নয় না করে ভবনের পর ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে।পরিকল্পিত উন্নয়নের কথা বলতে গেলে আমাদেরকে 'উন্নয়ন বিরোধী' ট্যাগ দেওয়া হয়। তৃতীয় প্রশাসনিক ভবনের নীল নকশা সম্পূর্ণ পরিকল্পনা বিহীন। জাহাঙ্গীরনগরের প্রগতিশীল চর্চা নষ্ট করতেই এই নীলনশা। বাজেটের টাকা খরচের জায়গা তৈরি করতেই এই অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণের নীল নকশা।
জাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনোজকান্তি রায় বলেন "এত বড় প্রকল্পের এত টাকার প্রতি সবার লোভাতুর চোখ ছিল। আমরা জানি ঈদ সালামির নামে এই প্রকল্পের টাকার বড় একটি অংশ ছাত্রলীগের পকেটে গিয়েছে। এই প্রশাসন একের পর এক প্রশাসনিক ভবন করছে তা একসময় ইনফিনিটি সংখ্যায় পৌছাবে। যেখানে সেখানে গাছ কেটে ভবন তৈরি হচ্ছে।
অথচ কিছু ডিপার্টমেন্ট ক্লাসরুম সংকট থাকায় জাজাবরের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে গাদ্দারি করে যাচ্ছে এই প্রশাসন। প্রশাসনের এই আচরণ ফ্যাসিবাদকেই নির্দেশ করে। তাই আমরা এই প্রশাসন কে মীরজাফর বলতেই পারি। আমরা বলতে চাই বেশি লাফালাফি করলে আপনাদের পা ভেঙ্গে দেওয়ার ক্ষমতা ছাত্ররা রাখে।"
অর্থনীতি বিভাগের ৪৭ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী তাপসী প্রাপ্তি বলেন "বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নের দরকার আছে তবে প্রাণ প্রকৃতি নষ্ট করে নয়। মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে কেন অনীহা এই প্রশ্ন সকলের করা উচিত। তাই এই আন্দোলনে জিইয়ে রাখতে হবে। না রাখলে জাবিতে কোনো প্রাণ থাকবে না, প্রকৃতি থাকবেনা। থাকবে শুধু ভবন আর দালাল।"
উল্লেখ্য, বর্তমান জাবির প্রথম প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ করা হয় ৯০ য়ের দশকে। নির্মাণ কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবন উদ্ভোদন করা হয় ২০১৬ সালে।দুটি প্রশাসনিক ভবন থাকার পরেও নতুনে ১৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আরো একটি প্রশাসনিক ভবন নির্মানের পরিকল্পনা করেছে প্রশাসন। নতুন এই প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ প্রকল্প বন্ধ করার জন্য অনেক দিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছে প্রগতিশীল শিক্ষার্থীরা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর