বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ড এবং পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও অধিভুক্ত সাত কলেজের ৭০ শিক্ষার্থী বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৬০ জন ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে ৬০জন শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। ৬০জন শিক্ষার্থীর মধ্যে দুই জনকে পরীক্ষাসহ তিন সেমিস্টার, ৪০জনকে পরীক্ষাসহ দুই সেমিস্টার এবং ১৮জনকে পরীক্ষাসহ ১ সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থীকে শাস্তি, শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বহিষ্কার ৭জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া বহিরাগত দুইজনকে অপহরণের করে হলে আটকে রাখার অভিযোগে ৩ জনকে শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, বলে সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, মৃৎশিল্প বিভাগের সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী জাহিদ শেখ ও মো. শাহরিন ইসলাম শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলে আটক রেখে ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এই ঘটনায় ভিকটিম শিক্ষার্থীর পিতা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নামে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদেরকে এই সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এদিকে সাময়িক বহিষ্কৃত ফলিত গণিত বিভাগের মো. আযহা ইসলাম, সংগীত বিভাগের মর্তুজা হাসান খান, ইতিহাস বিভাগের মো. আজিম মাহমুদ তওসিফ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মো. রিয়াদ মাল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানস্থ শিখা চিরন্তনে ঘুরতে আসা দুজন দর্শনার্থীর গতিরোধ করে এলোপাথাড়ি মারধর করে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ভিকটিম শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত এই চার শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থি অভিযোগে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মো. আব্দুল ওহেদকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গেছে, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে এক ব্যবসায়ীকে বাসা থেকে তুলে এনে হলে আটকে রেখে নির্যাতন করার ঘটনায় জড়িত তিন শিক্ষার্থী মুহসীন হল ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মোনতাছির হোসাইন, আল শাহরিয়ার মাহমুদ ওরফে তানসেন এবং বিজয় একাত্তর হলের শিক্ষার্থী ও ফিন্যান্স বিভাগের মোহাম্মদ আবুল হাসান সাঈদিকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এই তিনজনকে কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না এ মর্মে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের সভায় এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারসহ সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর