ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা শেষে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিক্ষার্থী অপর এক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে, আলোচনা সভা চলাকালে মিলনায়তনে ঢুকতে গিয়ে কথা-কাটাকাটি হয় আইন বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ ও জিয়া হলের শিক্ষার্থী শামীম ও শেখ রাসেল হলের শিক্ষার্থী ও হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আশিক কোরাইশির মধ্যে। পরে এ ঘটনার জেরে আলোচনা সভা শেষে মিলনায়তনের বাহিরে এসে ফের উভয়ের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে জিয়া হল ও রাসেল হলের ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে মারামারির সূত্রপাত হয়। এতে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মুফতাইন আহমেদ সাবিকের হাতে ছুরিকাঘাত করা হয়। ব্যবস্থাপনা বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের আকিব ছুরিকাঘাত করেছে বলে জানা গেছে। পরে সাবিককে ইবি চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
এদিকে সাবিক ছুরিকাঘাতের বিষয়টি গোপন করছেন। যদিও ঘটনাস্থলে থাকা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী ছুরিকাঘাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে সাবিক বলেন, কিছু সংখ্যক ছেলেরা মারামারি করতেছিলো। এসময় আমি তাদেরকে ঠেকাতে গিয়ে আম গাছের ডাল লেগে কেটে গেছে। আমি এর বেশি আর বলতে চাচ্ছি না।
এদিকে আকিব ছুরিকাঘাতের বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবি করে নিজেও মার খেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, আলোচনা সভা শেষে বাহিরে দেখি হুলুস্থুল অবস্থা বিরাজ করছে। পরে রাসেল হলের ছেলেরা আমাকেও মারধর করে আমার হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওইসময় আমার জামা কাপড়ও ছিড়ে ফেলা হয়। এসময় তিনি ছুরিকাঘাতের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলেও দাবি করেন।
এদিকে আইন বিভাগের শামীমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আজ ক্যাম্পাসে আলোচনা সভা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই অতিথিদের নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে যাই৷ এসময় খবর আসে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী প্রক্টরদের ঘটনাস্থল এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। তাদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করেছি। খুব দ্রুতই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, আলোচনা সভা সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে এরপরে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। আজ সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু পরিষদের আয়োজনে 'মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব' শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷
এসময় বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুষ্টিয়া-৩ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঝিনাইদহ-১ এর সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাjই। সম্মানিত অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়াসহ অনেকে।
উল্লেখ্য, আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের জাতীয় শোক দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর