• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪০ মিনিট পূর্বে
দিলওয়ার খান
বিশেষ প্রতিনিধি, নেত্রকোনা
প্রকাশিত : ১৫ অক্টোবর, ২০২৩, ০১:৪৬ দুপুর

পরিকল্পনার অভাব ও অব্যবস্থানার দরুন মগড়া নদী শুধুই একটি নাম

ছবি: প্রতিনিধি

অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত বাঁধ, সেতু নির্মাণের ফলে নেত্রকোণার মগড়া নদীটি হারিয়েছে তার স্বকীয়তা, এখন মগড়া নদী শুধুই একটি নাম ছাড়া আর কিছুই না।মগড়া নদী ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ঢাকুয়ার ভেতর দিয়ে সরাসরি পূর্বদিকে ধলাই নামে প্রবাহিত হয়েছে। পূর্বধলার হোগলা বাজারের পাশ দিয়ে পূর্বধলা সদরের  ভিতর দিয়ে ত্রিমোহনীতে এসে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়েছে।  সেই স্থান থেকে মগড়া নদী নামে পরিচিত। ত্রিমোহনী থেকে আঁকাবাঁকা হয়ে মদন উপজেলার ধনু নদীতে গিয়ে পতিত হয়েছে। নদী নং ৬৫। মগড়া নদীর গড় দৈর্ঘ্য ১১২ কি.মি. বা ৭০ মাইল এবং গড় প্রশস্ততা ৭৭মিটার।

মগড়া নদী রক্ষায় নেত্রকোণায় মানববন্ধন হয়েছে বেশকিছু। এ নদীতে একসময় লঞ্চ, স্টিমার, বড় বড় নৌকা, ট্রলার চলাচল করত, নদীটি ছিল স্রোতস্বী, কিন্তু বর্তমানে মগড়ার দু'পাশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা, নদীটির উৎপত্তিস্থল ত্রিমোহনীতে নদী মুখটি বন্ধ করে অপরিকল্পিত ভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড  স্লুইসগেট স্থাপন করে এবং এলজিইডি পূর্বধলা-নেত্রকোণা সড়ক স্থাপন করে যার দরুন মগড়ার পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। (নদীটি ভরাট করে পাকা স্থাপনা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৬)। পাশাপাশি মগড়া নদীর উপর অপরিকল্পিত ভাবে  স্থাপন করা হয়েছে বেশকিছু নিম্ন উচ্চতা সম্পন্ন ব্রীজ উল্লেখযোগ্য নেত্রকোণার মোক্তারপাড়া,  থানার মোড়,আনন্দ বাজার মোড়, পুরাতন হাসপাতাল রোড,  চন্দ্রনাথ স্কুলের পশ্চিম পাশে  নির্মিত ব্রীজ স্থাপন করায় নদী টিতে নৌ- চলাচল বন্ধ রয়েছে, যার ফলে নদীটি হারিয়েছে তার উদ্যমতা, হারিয়েছে তার যৌবন। মগড়া এখন মরা নদীতে রূপান্তর হয়েছে।  পৌর শহরের প্রায় ৫ কি.মি. এলাকাজুড়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে আঁকাবাঁকা হয়ে নদীটি প্রবাহিত হওয়ায় আরওয়ার, সিএস অনুযায়ী নদী দখল করেছে। এতে করে নদীটির পৌর এলাকায়  প্রশস্ততা কমে গেছে। পৌর এলাকার জায়গার মূল্য অনেক বেশি হওয়ায়, নদী দখল বেড়েছে অসংখ্য। নেত্রকোণা পৌর এলাকায় পয়ঃনিষ্কাশনে ব্যবহৃত ড্রেনের বেশিরভাগ ড্রেনের ময়লাযুক্ত পানি, মগড়া নদীতে গিয়ে পড়ছে, এতে করে নদীটির পানি দুষিত হচ্ছে। নদীটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, নদীর মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। নদীটি হয়ে উঠেছে ময়লার ভাগাড়।নদীটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন নদীটি পুণঃখনন, অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করা।

পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংগঠন এআরএফবি'র সেক্রেটারী চন্দন নাথ চৌধুরী বলেন,  আগের মগড়া ছিলো খরস্রোতা আমরা দলবেঁধে সাঁতার কাটতাম, বাজিতপুরের বড় বড় নৌকা এসে ঘাটে ভিড়ত, সেই নৌকা থেকে প্রতিদিন দলবেঁধে নদীতে ঝাঁপ দিতাম, সারাবছরই নদীতে পানি থাকতো, এখন মগড়া নদীটি খালে পরিণত হয়েছে,  পায়ে হেঁটে পার হলেও কোন কোন জায়গায় পা ভিজে না। আমরা চাই নদীটি আগের রূপে ফিরে আসুক, এ ব্যাপারে উর্ধতন প্রশাসনের নিকট নদীটি পুণঃখনন, নদী দখল উচ্ছেদ ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে নদীটিকে তার আগের রূপে ফিরিয়ে আনার জোর দাবী জানাচ্ছি।

নেত্রকোণা জার্নালের সম্পাদক মুহা: জহিরুল ইসলাম অসীম বলেন,নেতজোড়ে বয়ে আছে নেত্রকোণার সর্ব প্রাচীন জলধারা নাম মগড়া।  একসময় এই মগড়ার জৌলুশপূর্ণ ইতিহাস খোদ রবীন্দ্রনাথও জানতেন। আর আজ নানা অব্যবস্থাপনা, অবৈধ দখলদারত্বের ভীড়ে নিরবে নিভৃতে কাঁদে উত্তাল তরঙ্গ হারানো আমাদের আশীর্বাদ মগড়া।  উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়ে যায় উচ্চ আদালতের স্টে অর্ডারে।  নিয়মিত খননের অভাবে নাব্যতা হারিয়ে মগড়া আমাদে অভিসাপ দেয়।  প্রশাসন ও সাধারণ মগড়া পাড়ের মানুষের একটু সদিচ্ছাই পাড়ে আবারও মগড়াকে শৌর্যবীর্য করে তোলা।

কবি ও উন্নয়ন কর্মী দেলোয়ার হোসেন মাসুদ বলেন,  আমি ছেলেবেলায় এ নদীতে সাঁতার কেটেছি, মাছ ধরেছি,  মগড়া নদীতে লঞ্চ,  মালবাহী বড় লঞ্চ ও ট্রলার চলতে দেখেছি। মগড়া নদীটি একসময় আরও অনেক প্রশস্ত ছিল কিন্তু বর্তমানে অব্যবস্থাপনা, বর্জ্য ফেলায় এখন নদীটির পানিও দুষিত হয়ে গেছে,  সাঁতার কাটা দূরে থাক পা ধুতেও ইচ্ছা করে না।

পরিবেশ বিদ,অধ্যাপক মুহা নাজমুল হক সরকার বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা ঢ়ায় ২০২০ অর্থবছরে নদী প্রশাসন,  পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন সম্মিলিত ভাবে নেত্রকোণা পৌরসভা এলাকায় ৩১৬ টি অবৈধ স্থাপনার মধ্যে ২৮৩ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে। তন্মধ্যে ২৩ টি স্থাপনা হাইকোর্টে মামলাজনিত কারণে উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি, বর্তমানে উচ্ছেদকৃত জায়গাও দখল করছে।

এ ব্যাপারে নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান বলেন, মগড়া নদী সংস্কারে আমরা কাজ করছি, নেত্রকোণার  পৌর মেয়রকে পয়ঃনিষ্কাশন ও ড্রেন অব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com