রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ছাত্রলীগের নতুন কমিটি নিয়ে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে পড়ছে ক্যাম্পাস। বিতর্কিতদের কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে আনা হয়েছে দাবি করে কমিটি হওয়ার পরের দিন থেকেই ক্যাম্পাসে শক্তভাবে অবস্থান নিয়েছে পদবঞ্চিত ও কাঙ্ক্ষিত পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। দিনভর মোটরসাইকল শোডাউন, মারধর, কক্ষ ভাংচুর, ককটেল বিস্ফোরণসহ নানাভাবে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন তারা। এ কমিটি বিলুপ্ত না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানান তারা।
আজ মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট ও কাজলা গেটে তালা মেরেছেন পদবঞ্চিত নেতারা। পরে বিকেল সাড়ে চারটায় প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকের উপস্থিতিতে তালা ভেঙে ফেলা হয়।
এদিকে নতুন কমিটি ঘোষণার ৬৬ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারিনি। তবে আজ দুপুরে ক্যাম্পাসে তাদের প্রবেশের কথা থাকলেও এখনো পর্যন্ত তারা ঢুকতে পারেননি।
পদবঞ্চিত নেতাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় কমিটি কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই না করে টাকার বিনিময়ে এ কমিটি ঘোষণা করেছে। যেখানে এইচএসসি পাস করা ছাত্র, বিএনপি পরিবারের সন্তান ও সনদ জালিয়াতি করে সান্ধ্য কোর্সে ভর্তি হওয়া একজনকে ছাত্রলীগের একটি বড় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বর্তমান সভাপতির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ছাত্ররাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ করেন তারা। এ ছাড়া নতুন কমিটিতে পদ পাওয়া বেশির ভাগ নেতা বিভিন্ন অভিযোগে বিতর্কিত বলে অভিযোগ করছেন তারা।
তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাতে তারা ঢাকায় রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন, তার স্ত্রী রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি শাহীন আকতার, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শাহিনুর ইসলাম সরকার ডন বলেন, গালিব ও বাবু বহিরাগত নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢুকতে চায়। তাদের উদ্দেশ্য ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করা। বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দিবো না। এজন্যই আমরা গেটে তালা ঝুলিয়েছি।
এ বিষয়ে নব্য কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, আমাদের অভিভাবক জননেতা এ.এইচ.এম. খায়রুজ্জামান লিটন যে নির্দেশনা দিবেন আমরা সে অনুযায়ী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করব। আমরা এখনো তার নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আন্দোলনরত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে আমাদেরকে অনুরোধ জানায়। পরে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা ও মেইন গেটে তালা মেরে দেন। খবর পেয়ে আমি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করি। গেট খুলে দিতে তাদেরকে অনুরোধ করলে তারা তালার চাবি পাঠিয়েছে। পরপরই আমরা গেটগুলোর তালা খুলে দিয়েছি। এছাড়াও আমরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছি বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত ২১ অক্টোবর রাতে মোস্তাফিজ বাবু ও আসাদুল্লাহ হিল গালিবকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটির ঘোষণার পর থেকে ছাত্রলীগের একাংশ নতুন কমিটিকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। গত দুদিনেও ক্যাম্পাসে আসতে পারেনি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর