ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নবীন শিক্ষার্থীকে উলঙ্গ করে রাতভর র্যাগিং ও নির্যাতনের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গত বছর ফুলপরী নামের এক নবীন ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনার রেশ না কাটতেই আবারো একই ধরণের ঘটনায় ক্যাম্পাসে নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ^বিদ্যালয় ও লালন শাহ হল প্রশাসন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিশ^বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এতে শেখ রাসেল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মাকে আহ্বায়ক ও সহকারী প্রক্টর মিঠুন বৈরাগীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্য হলেন আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান। কমিটিকে ঘটনা যাচাই বাছাই করে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে চার সদস্যবিশিষ্ট পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এতে হলের আবাসিক শিক্ষক ড. আলতাফ হোসেনকে আহ্বায়ক ও হলের সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, আবাসিক শিক্ষক আব্দুল হালিম ও ড. হেলাল উদ্দিন। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, ‘আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। আশা করি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সব উঠে আসবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহায়তাও একান্ত প্রয়োজন।’
বিশ^বিদ্যালয়ের উপ—উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ে সকল ধরনের র্যাগিংয়ের বিষয়ে জিরো টলারেন্স রয়েছে। কখনও র্যাগিংকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ১৩৬ নম্বর কক্ষে কিছু সিনিয়র শিক্ষার্থী জুনিয়র শিক্ষার্থীদের পরিচয় জানার জন্য আসেন। পরিচয় জানার এক পর্যায়ে ভুক্তভোগীকে র্যাগ দিতে থাকে। র্যাগিং এর একপর্যায়ে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে জোরপূর্বক নগ্ন, রড দিয়ে মারধর, নাকে খত দেওয়া হয়। এছাড়াও তাকে নগ্ন অবস্থায় হাত উচিয়ে টেবিলের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে বলা হয়। রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত চলে এ অমানবিক নির্যাতন। পরে কক্ষ থেকে তার বিছানা সামগ্রী বাইরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগও তুলেন ওই ভুক্তভোগী। ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১—২২ শিক্ষাবর্ষের মো: সাগর ও উজ্জ্বল হোসাইন ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগে ২০২১—২২ শিক্ষাবর্ষের মুদিাস্সর খান কাফি। তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের কর্মী ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর