
বরগুনা-২ (পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী) আসনে ভোটারদের আস্থার প্রতীক সংরক্ষিত মহিলা আসেনের এমপি বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সুলতানা নাদিরা। জনগণের ভালোবাসা আর নিজের প্রতি দৃঢ়তার বিশ্বাস পুঁজি করে তার রাজনৈতিক জীবনের পথচলা।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম বারের মতো বরগুনা-২ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন। যার ফলে তৃণমূলে নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মনে বিজয়ের আস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে এমপি সুলতানা নাদিরাকে ঘিরে জমে উঠেছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল রাজনৈতিক মাঠ।
বরগুনা-২ আসনের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলু ২০১৩ সালে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত গোলাম সরোয়ার টুলুর পরিবারের প্রতি সদয় হয়ে তার সহধর্মিনী সুলতানা নাদিরাকে ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচিত করেন। তার দুই কন্যা আওয়ামী লীগের বরগুনা জেলা শাখার সহ-সভাপতি ফারজানা সবুর রুমকি ও ব্যারিস্টার হাসসানা তিয়াশাকে নিয়ে দলের সব কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের সংগঠিত করাসহ তাদের সুখ-দুঃখে সব সময় পাশে রয়েছেন। দলীয় নেতাকর্মী এবং স্থানীয় জনগণ সুলতানা নাদিরা এমপির কর্মকাণ্ডে বেশ খুশি।
এবারে এই প্রথম নারী হিসেবে বরগুনা-২ আসনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন দেন সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি সুলতানা নাদিরাকে।
নেতাকর্মীরা বলেন, সুলতানা নাদিরা গরিব দুঃখী মানুষের এক আস্থার প্রতীক তিনি বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসায় ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিক সহযোগিতাসহ নানা ধরনের সামাজিক কাজে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। বামনা, বেতাগী, পাথরঘাটা উপজেলার সম্প্রতি বিভিন্ন গরিব-অসহায় মানুষদের দোকানঘড়, আটোগাড়ি ও আর্থিক সহযোগিতা দেয়াসহ প্রতিটি ইউনিয়ন ও লোকালয়ে প্রধানমন্ত্রীর মেগাপ্রকল্পসহ পদ্মা সেতু নির্মাণ ও শতভাগ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়াসহ সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে গণসংযোগ করা ও যুবসমাজকে মাদকের ছোবল থেকে দূরে রাখতে যুবসমাজের মাঝে বিভিন্ন ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ করতে দেখা গেছে। বরগুনা-২ আসনের তিন উপজেলার রাজনৈতিক মাঠে তার সুখ্যাতি রয়েছে।
মনোনয়ন পেয়ে সুলতানা নাদিরা বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য। আওয়ামীলীগের প্রতিটি কর্মী আমার পরিবারের সদস্য। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা ও আমার দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে, আমিও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমার আসনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ মুক্ত একটি মডেল জনপদ গড়তে এবং প্রায়ত সাংসদ গোলাম সবুর টুলুর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করতে চাই।
তিনি আরো বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়, যা বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্য কোনো সরকার দল করতে পারেনি। বাংলাদেশে এখন পৃথিবীর বুকে উন্নয়নের রোল মডেল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আছেন বলেই শুধু এটি সম্ভব হয়েছে। আমি আশাবাদী এই আসন থেকে জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে।
উল্লেখ, প্রয়াত বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলু সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের পর বরগুনা-২ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হন শওকত হাসানুর রহমান। এরপর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জয়ী হন শওকত হাচানুর রহমান রিমন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত প্রার্থী হয়েও তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী বলেন, এমপি রিমনকে বিগত কয়েক বছরে দেখেছি দলকে সংগঠিত করেনি বরং দলের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করেছে, জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তারা আরও বলেন, বর্তমান এমপির দলের সাথে কোন সম্পর্ক রাখেনি, যদি তাকে আবারও মনোনয়ন দেয়াহত তাহলে আওয়ামী লীগের কোন অস্তিত্ব থাকতো না।
পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাবির হোসেন বলেন- দলীয় নেতাকর্মী সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারী সংখ্যালঘু নারীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির গায়ে হাত তোলা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সরকারি জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে সংসদ সদস্য রিমনের বিরুদ্ধে। দলীয় এমপির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ওঠার পরে আমরা বিব্রত । গত পাঁচ বছরে তিনি দলীয় কর্মসূচিতেও অনিয়মিত ছিলেন। বরং এলাকায় তিনি নিজস্ব একটি বলয় গঠন করেছেন যার বেশির ভাগই জামায়েত বিএনপির সমর্থিত লোক। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নিজের লোককে প্রভাব বিস্তার করে মনোনয়ন পাইয়ে দেয়ার মত বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছিলেন।
তিনি আরো বলেন,স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও দলেরর বিভিন্ন ইউনিট কমিটিতে জামায়াত বিএনপি পন্থিদের "পুশ ইন" করানোর চেষ্টা করেছেন। এই নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে অন্তর্দন্দের সৃষ্টি হয়েছে এবং দলের সাথে দলীয় এমপির দূরত্ব বেড়েছে। আমরা তাকে নিয়ে বিব্রত ও বিরক্ত।
মনোনয়নের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় প্রধান বিচক্ষণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুলতানা নাদিরাকে বিজয়ী করতে কাজ করবেন তারা। কোনোভাবেই এর ব্যত্যয় ঘটবে না। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে হাল ধরেছেন, দলকে চাঙ্গা বা সংঘঠিত করেছেন, নেতাকর্মীদের সুখে দুঃখে পাশে সব-সময় পাশে পেয়েছেন সুলতানা নাদিরা এমপিকে। তাকে বিপুল ভোটে জয়ী করবেন এমনি প্রত্যাশা সবার।
এদিকে বিএনপি, জাতীয় পার্টি সহ অন্য রাজনৈতিক দলের পক্ষে এখন পর্যন্ত মনোনয়ন কেনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে জাকের পার্টি থেকে মনোনীত প্রার্থী জনাব মোঃ হানিফ শিকদার নামে এক প্রার্থী রয়েছে বলে যানা গেছে।
সর্বশেষ খবর