• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৩৩ সেকেন্ড পূর্বে
সম্পাদনা: সালাউদ্দিন আহমেদ
সাব এডিটর
প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১০:১৬ দুপুর
bd24live style=

ইসলামের দৃষ্টিতে 'ভালোবাসা দিবস' হারাম না হালাল

সংগ্রহীত ছবি

প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতা ও ভক্তি-শ্রদ্ধা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আল্লাহর কুদরতের মধ্যে অন্যতম একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক। তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও অনুগ্রহ সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদের্শনা রয়েছে।’ (সুরা রোম : ২১)। ভালোবাসার জন্য কোনো সময়-ক্ষণ নির্দিষ্ট নেই ইসলামে। যেকোনো দিন যেকোনো মুহূর্তে বৈধ ক্ষেত্রে বৈধ উপায়ে ভালোবাসার প্রকাশ ইসলাম সমর্থন করে। আর অবৈধ ক্ষেত্রে ও অবৈধ উপায়ে ভালোবাসা প্রকাশ করা নিষিদ্ধ ও গুনাহের কাজ।

ভালোবাসা দিবস ভিন্ন সংস্কৃতি ভালোবাসা উদযাপনের জন্য ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’-এর উৎপত্তি খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াসের শাসনামলে। এ সময় ক্লডিয়াস একটি বিধান জারি করেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে না, কারণ বিয়ে সৈনিকদের যুদ্ধক্ষেত্রের দৃঢ়তাকে ব্যাহত করে। এ সময় ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এ আইনের বিরুদ্ধাচরণ করেন এবং গোপনে সৈনিকদের বিয়ের কাজে সহযোগিতা করতে থাকেন। এর পরিণতিতে তাকে কারাবরণ করতে হয়। ভ্যালেন্টাইন কারারুদ্ধ হওয়ার পর প্রেমাস তরুণ-তরুণীদের অনেকেই প্রতিদিন তাকে কারাগারে দেখতে আসত এবং ফুল ও উপহার দিত। কারারক্ষীর এক মেয়েও ভ্যালেন্টাইনকে দেখতে যেত।

একসময় ভ্যালেন্টাইন কারারক্ষীর মেয়ের প্রেমে পড়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ভ্যালেন্টাইনের বিবাহিত স্ত্রীর প্রতি তার অন্তিম চিঠি ছিল। স্ত্রীর প্রতি ভ্যালেন্টাইনের ভালোবাসা ও ভ্যালেন্টাইনের প্রতি দেশের তরুণ-তরুণীদের ভালোবাসার কথা চলে যায় সম্রাটের কানে। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে খ্রিস্টীয় ২৭০ শতকের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। এরপর খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ১৪ই ফেব্রুয়ারির এ দিনটিকে ওই পাদ্রির নামে নামকরণ করে ভালোবাসার উৎসব দিবস হিসেবে নির্ধারণ করেন। খ্রিস্টানদের একটি ধর্মীয় উৎসব কালক্রমে রূপান্তরিত হয়েছে জৈবিক কামনা ও যৌনতার উৎসবে।

যদিও দিবসটি ছিল বিবাহিতদের অধিকার আদায়ের জন্য একটি প্রয়াস কিন্তু এখন অবিবাহিতরাই এ দিনটিকে ভালোবাসা প্রদর্শনীর উপলক্ষ বানিয়ে নিয়েছে। যাদের বিয়ের সামর্থ্য আছে তারা বিয়ে পরবর্তী ভালোবাসা গোপনে উদযাপন করতেই পারে। কিন্তু প্রকাশ্য অবাধ যৌনাচারে মেতে ওঠা নিতান্তই সভ্যতার পরিপন্থি। অবিবাহিত তরুণ-তরুণীর ভালোবাসা দিবস উদযাপনের নামে যে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি অনুকরণ করছে তা সম্পূর্ণরূপে অবৈধ ও হারাম। বিয়ের আগে এ ধরনের প্রেম-ভালোবাসা ইসলামের নীতি ও আদর্শবহির্ভূত।

ভালোবাসা দিবসে মুসলমানদের করণীয়
মুসলিম ভ্যালেন্টাইনরা যাদের অনুকরণে এ দিবস উদযাপন করে, তাদের কাছে ভালোবাসা হলো নিদারুণ যন্ত্রণা, জটিলতা, সঙ্কট ও নৈতিক মূল্যবোধ বিসর্জন দেওয়ার নাম। তারা ভালোবাসার মানুষটিকে পোশাকের মতো পরিবর্তন করে নতুন সঙ্গীর সন্ধানে অস্থির থাকে। তাদের এ বেহায়াপনা পরিবর্তনের ধারা চলতে থাকে আজীবন। তাদের সংসার জীবন হলো একেকটা আগ্নেয়গিরি। তাদের পারস্পারিক সম্পর্ক লেলিহান শিখার মতো দাউ দাউ করে জ্বলছে। যে আগুনে ছারখার হচ্ছে তাদের সাজানো সব সুখ-শান্তি। তাদের সে ভালোবাসাবিহীন যন্ত্রণাকাতর জীবনে ভালোবাসার একটু উপলব্ধি সৃষ্টির জন্যই মূলত তারা তথাকথিত ভালোবাসা দিবসের উদ্ভব ঘটিয়েছে।

ইসলাম নারী-পুরুষকে পর্দা করার নির্দেশ দিয়ে উভয়ের বিচরণ ক্ষেত্র পৃথক করেছে এবং উভয়ের দৃষ্টি অবনত রাখার বিধান দিয়েছে। যে সমাজ নারীকে অশ্লীলতায় নামিয়ে আনে, সে সমাজ অশান্তি ও সব পাপাচারের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়। আর এ জন্যই ইসলামে সুনির্দিষ্ট বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে যেকোনো প্রকার সৌন্দর্য বা ভালোবাসার প্রদর্শনী সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। নারী জাতিকে লক্ষ করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা জাহেলী যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করে বাইরে বের হয়ো না।’ (সুরা আহযাব : ৩৩)। এ ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শনের পরিণতি ভয়াবহ।

ইসলামে বেগানা নর-নারীর কোনো নির্জন স্থানে মিলিত হওয়া সম্পূর্ণ হারাম। কারণ তাতে ব্যভিচার হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। ব্যভিচার করার আগ্রহ তৈরি হতে পারে এমন কাজের ধারে-কাছে যেতেও কোরআন নিষেধ করেছে। এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা ইসরা : ৩২)। ইসলামের নির্দেশনা মতে, কোনো ব্যক্তি শুধু ব্যভিচার থেকে দূরে থেকেই ক্ষান্ত হবে না, বরং এ পথে ধাবিতকারী বিষয় থেকেও দূরে থাকবে। হাদিসে এসেছে, ‘যখনই কোনো পুরুষ পর নারীর সঙ্গে নির্জনে দেখা করে তখনই শয়তান সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত হয়।’ (তিরমিজি : ২১৬৫)। আর শয়তান তাদের ব্যভিচারের দিকে ধাবিত করার অপচেষ্টায় মেতে ওঠে।

 ইসলাম বিবাহবহির্ভূত যেকোনো যৌনাচারকে ‘ব্যভিচার’ বলে গণ্য করেছে। হাদিসে এসেছে, ‘দুই চোখের ব্যভিচার হলো পর নারীর প্রতি নজর করা, দুই কানের ব্যভিচার হলো যৌন উত্তেজক কথাবার্তা শ্রবণ করা, মুখের ব্যভিচার হলো পর নারীর সঙ্গে রসালো কণ্ঠে কথা বলা। হাতের ব্যভিচার হলো পর নারীকে স্পর্শ করা এবং পায়ের ব্যভিচার হলো যৌন মিলনের উদ্দেশ্যে পর নারীর কাছে গমন করা। অন্তরের ব্যভিচার হলো হারাম বস্তু কামনা করা; আর যৌনাঙ্গ তা বাস্তবায়ন করে বা মিথ্যা সাব্যস্ত করে।’ (মুসলিম : ৬৯২৫)

ভালোবাসা দিবস উদযাপনের পরিণতিভালোবাসা দিবস পালনের নামে তরুণ-তরণীরা উলঙ্গ-বেহায়াপনার উৎসবে মেতে ওঠে। এর মাধ্যমে সমাজে বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও ব্যভিচারকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। আর যেই সমাজে নির্লজ্জতা ও ব্যভিচার ব্যাপক আকাড়ে ছড়িয়ে পরে সেখানে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে যায় এবং আল্লাহর কঠিন আজাব ও গজব অবশ্যম্ভাবী হয়ে ওঠে। একজন প্রকৃত মুসলিম নারী বা পুরুষ এ ধরনের নোংরা উদযাপনে কখনও অংশগ্রহণ করতে পারে না। যারা এ ধরনের অশ্লীলতায় নেতৃত্ব দেয় এবং অংশগ্রহণ করে, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের জন্য আল্লাহ তায়ালা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা মুুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার ঘটায় তাদের জন্য রয়েছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা নূর : ১৯)।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ’যে জনগোষ্ঠীর মধ্যে নির্লজ্জতা প্রকাশমান, তারা তার ব্যাপক প্রচারেরও ব্যবস্থা করে, যার অনিবার্য পরিণতি স্বরূপ মহামারী, সংক্রামক রোগ এবং ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ এত প্রকট হয়ে দেখা দেবে, যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে কখনোই দেখা যায়নি।’ (ইবনে মাজা : ৪০০৯)। অতএব সমাজে অবৈধ প্রেম, পরকীয়া, অশ্লীলতা,  অপসংস্কৃতি চালু রেখে শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করা যাবে না।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]