গাজীপুরের কালীগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে উপজেলা চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৬ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন সরকার। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চাহিদা মাফিক তথ্যাদি সরবরাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে ওই পত্রে।
জানা গেছে, দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে দুদকের গাজীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামান কে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ৩ মার্চ অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা মো. সাইদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মত অভিযোগ গুলোর তথ্যাদি পর্যালোচনা করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে দুদুক।
উপজেলা অফিসের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, ‘শহীদ ময়েজ উদ্দিন মুক্তমঞ্চ নির্মাণ ও সুপেয় পানির পাম্প’ স্থাপন প্রকল্পের টেন্ডারের নথিপত্র ও বিগত ২০২০-২০২৩ (৩ বছর) অর্থ বছরে কালীগঞ্জ উপজেলায় মশা নিধনের জন্য মোট কত টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে (বছর ভিত্তিক) এ সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি অনুসন্ধান ও পর্যালোচনার ভিত্তিতে জানতে চাওয়া হয়েছে। এর পাশাপামি চুক্তিপত্র, তুলনামূলক বিবরণী, দরপত্র বিজ্ঞপ্তি, ঠিকাদারের দাখিলকৃত দরপ্রস্তাব, টেন্ডার ওপেনিং ও মূল্যায়ন কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদন, নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড, কার্যাদেশ ও বিল প্রদান সংক্রান্ত সকল নথিপত্র দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে জানা গেছে, ‘শহীদ ময়েজ উদ্দিন মুক্তমঞ্চ নির্মাণ ও সুপেয় পানির পাম্প’ স্থাপন প্রকল্পের ব্যয় ৬০ লাখ টাকারও অধিক বরাদ্দ ছিল। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি। জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকায় পুরোনো স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হলেও নতুন মঞ্চ তৈরি করা হয়নি।
মশা নিধনে ২০-২১ অর্থ বছরে ৪০ লাখ টাকা, ২১-২২ অর্থ বছরে ৫০ লাখ টাকা এবং ২২-২৩ অর্থ বছরে ৬০ লাখ টাকা এবং সর্বশেষ ২৩-২৪ অর্থ বছরে মশা নিধনে আরো ৭০ লাখ টাকাপ করে মোট ২ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই অর্থ কোন কোন টেন্ডারের মাধ্যমে ব্যয় করা হয়েছে তার যাবতীয় তথ্যও জানতে চাওয়া হয়েছে ওই পত্রে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. বেলাল হোসেন সরকার বলেন, দুদক আমাদের কাছে ৫ কর্মদিবসের মধ্যে সকল তথ্যাদি দেওয়ার জন্য পত্র দিয়েছে। আমরা গতকাল পত্রটি পেয়েছি। যেহেতু পুরোনো নথি থেকে অনুসন্ধান করতে হবে মনে হচ্ছে এই কয়েকদিনের মধ্যে তার জবাব দেওয়া সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে দুদকের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
উল্লেখ্য, মোয়াজ্জেম হোসেন পলাশ কালীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে প্রথম নির্বাচিত হন ২০১৪ সালের ৩১ মে অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। পরে আওয়ামী লীগের দলীয় সমর্থন নিয়ে ২০১৯ সালের ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর