খতনা যেন আতঙ্কের নামে পরিণত হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালে একের পর এক শিশু মৃত্যু আর অঙ্গহানির ঘটনায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। খতনার মতো ছোট অস্ত্রোপচারে একের পর এক শিশু মৃত্যুর ঘটনাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় দেশের স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশার চিত্র।
চলতি বছরের সাত জানুয়ারি ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খতনা করাতে গিয়ে ৫ বছরের শিশু আয়ানের মৃত্যু হয়। এর মাসখানেক পরেই গত ২০ ফেব্রুয়ারি মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আহনাফ তাহমিন আয়হাম নামের ১০ বছরের আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়।
এরমধ্যেই হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় সিলগালাকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খৎনা করার সময় তামিম আহমেদ (১২) নামে এক শিশুর পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার আউশকান্দি বাজারে অবস্থিত কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ১৫ দিন আগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করা করে দেয় প্রশাসন।
গত রাতেই কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও চিকিৎসকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আহত শিশুর চাচা হারুন মিয়া।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের আব্দুস শহীদের ছেলে তামিম আহমেদকে খৎনা করানোর জন্য আসা হয় আউশকান্দি বাজারে। ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী তামিমকে ওই বাজারে অবস্থিত কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সুহুল আমিন ও চিকিৎসক ডা. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী জয় তালা খুলে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে খৎনা করানোর উদ্দেশ্যে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান।
হঠাৎ করে তামিম চিৎকার শুরু করলে তার বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজন অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে দেখতে পান মালিক ও চিকিৎসক তামিমকে চড়থাপ্পড় মারছেন। এ সময় তামিমের বাবা-মা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি ঘেরাও করে রাখেন। এ সময় স্থানীয়রা শিশু তামিমকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটে পাঠান।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার জানান, ১৫ দিন আগে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করা হয়েছিল। সিলগালাকৃত ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি কেন খোলা হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর