সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রেমিককে গাছের সাথে বেঁধে রেখে প্রেমিকাকে গণধর্ষণ করেছে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারিসহ তিন বখাটে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (৯ মার্চ) ভোর রাতে উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে।
ধর্ষনকারীগণ হল, উপজেলার মান্নারগাও ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ও জালালপুর গ্রামের মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে আফসার উদ্দিন(৩৫),মৃত ময়না মিয়ার ছেলে ফজলুল বারি(৪৫),হায়াত আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম(৩০) ও পার্শ্ববর্তী কামারগাঁও গ্রামের ইদ্রিছ আলীর ছেলে আব্দুল করিম(৩৫)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ ইউনিয়নের সড়কপাড় গ্রামের মো. সুরুজ আলীর ছেলে প্রেমিক নুরুজ্জামান(২৩) প্রায় একবছর ধরে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মবাজার মালঞ্চপুর গ্রামে রাজমিত্রির কাজ করে আসছিলেন। সেই সুবাদে ধর্মবাজার মালঞ্চপুর গ্রামের সামছু মিয়ার মেয়ে মুক্তা বেগমের(২৭) এর সাথে পরিচয় রাজমিত্রি নুরুজ্জহামানের। সেই সুবাদে প্রেমিক নুরুজ্জামান ও মুক্তা বেগমের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়।
একপর্যায়ে সর্ম্পকটা গভীরে চলে যায়। পরবর্তীতে প্রেমিক প্রেমিকা যুগল ঘর বাধার স্বপ্নেঁ বিভোর হয়ে গত ৮ মার্চ রোজ শুক্রবার প্রেমিকের হাত ধরে পাড়ি জমানো প্রেমিকের বাড়ি বিশ্বম্ভপুরের পলাশ ইউনিয়নের সড়কপাড় গ্রামে আসার কথা থাকলে ও শেষ পর্যন্ত তারা প্রেমিকের বাড়িতে না গিয়ে চলে যেতে চাইছিলেন জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার জালালপুর গ্রামে প্রেমিকেরবন্ধুর বাড়িতে। কিন্তু প্রেমিক যুগল তারা দুজন মান্নারগাঁও ইউনিয়নের আজমপুর খেলাঘাটে রাত ১২টায় এসে পৌঁছানো। পরবর্তীতে ধর্ষণকারী চারজনের মধ্যে সিএনজির চালক মো. আব্দুল করিমের সিএনজিতে করে জালালপুর গ্রামে আসেন। ঐ চালকের সিএনজিতে গ্যাস নেই অজুহাতে চালক ফোন করেন আরো তিন ধর্ষনকারীকে।
এই চার ধর্ষনকারীরা মিলে প্রেমিক যুগলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জালালপুর গ্নিয়ে আসেন। এখানে এসে অপর ধর্ষণকারী ফজলুল বারির বসতঘরের ভেতরে নিয়ে প্রেমিক নুরুজ্জামানকে ঘরের বাহিরে গাছের সাথে বেঁধে রেখে নামাংঙ্কিত চার বখাটে মুক্তা বেগমকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ভোর ৪টায় ঐ সিএনজিতে করে ধর্ষনকারীরা প্রেমিক যুগলকে স্থানীয় আমাবাড়ি বাজারের পাশে হাজারীগাওঁ রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়।
এ সময় ধর্ষনকারীরা প্রেমিক যুগলের দুটি এন্ড্রোয়েট মোবাইল ফোন ও নগদ আট হাজার টাকা,এক ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে প্রেমিকের বন্ধু একই ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের মিয়াজান আলীর ছেলে আফাজ উদ্দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে এলাকাবাসীকে বিষয়টি অবহিত করেন। পরে স্থানীয় মান্নানগাঁও ইউপি ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সাব্বির আহমদ ও মান্নারগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সালিশ ব্যক্তিত্ব অসিত কুমার দাস ঘটনাস্থলে এসে দোয়ারাবাজার থানা পুলিশকে অবহিত করলে শনিবার সন্ধ্যায় ছাতক ও দোয়ারাবাজার থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এ এস পি (সার্কেল)রনজয় চন্দ্র মল্লিক, থানার ওসি মো. বদরুল হাসান, ওসি(তদন্ত) শামছুদ্দিন খানসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসেন এবং এলাকার সাধারণ মানুষসহ প্রেমিক যুগলের সাথে কথা বলেন। রাত ৮টায় পুলিশ প্রেমিক যুগলকে দোয়ারাবাজার থানায় নিয়ে যান। খবর পেয়ে এলাকার সাধারণ উৎসুক জনতার ভিড় জমে আফাজ উদ্দিনের বাড়িতে। এদিকে চারও ধর্ষণকারী ঘটনার পর পরই এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান।
এ ব্যাপারে মান্নারগাঁও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অসিত কুমার দাস জানান, এই জালালপুর গ্রামে মাদক ব্যবসা,সেবন,জুয়া খেলা থেকে ধরে এমন কোন অপকর্ম নেই যা হয়না। তিনি এই চার ধর্ষনকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে মান্নারগাঁও ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাব্বির আহমদ গণধর্ষণের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সকল ধর্ষনকারীকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ছাতক ও দোয়ারাবাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এ এস পি(সার্কেল) রনজয় চন্দ্র মল্লিক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেমিক যুগলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। রবিবার(১০ মার্চ) মুক্তা বেগমকে হাসাপাতালে পাঠানো হবে। এ বিষয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর