• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ২ সেকেন্ড পূর্বে
রফিকুল ইসলাম
বান্দরবন প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৩ মার্চ, ২০২৪, ০১:০৭ দুপুর
bd24live style=

পরিবেশ অধিদপ্তরকে পকেটে রেখে ইটভাটা চালায় ভাটা মালিক

ছবি: প্রতিনিধি

‘কত কে এলো গেল, কত জন আসবে’ আমরা ঠিকই ভাটা চালাবো। যারা ইটভাটা বন্ধ করবে (পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান) তাদের সাথে আমাদের টেবিল সম্পর্ক। উনারা এখানে এসে দেশি মুরগি খেয়ে যায়। শুধু খায় না, নিয়েও যান। এ বছর নতুন ইটভাটা করতে ১২ লাখ ও প্রতিটি অবৈধ ইটভাটার জন্য ৪ লাখ করে দেয়া হয়েছে। মাঝেমধ্যে টুকটাক যে অভিযান করে তা নাটক। লোক দেখানো মাত্র। গত ২১ বছরের ফাইতং এর একটি ইটভাটাও কি ভাঙতে পেরেছে প্রশাসন! এভাবে দীপ্ত কণ্ঠে দম্ভ দেখিয়ে সাংবাদিকদের কথা গুলো বলেন লামার ফাইতং ফাদুরছড়া এলাকার সেভেনবিএম ও ইউবিএম ইটভাটার মালিক কবির খাঁন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ফাইতং ইউনিয়নের ফাদুরছড়া গ্রামে এবছর নতুন করে নির্মিত সেভেনবিএম ইটভাটা তিন পাশে স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কাটছে। ইতিমধ্যে দুইটি বিশাল পাহাড় সাবাড় করেছে এই ব্রিকফিল্ডটি। নতুন করে আরো একটি পাহাড় শুরু করেছে। জ্বালানি হিসাবে মজুদ করা হয়েছে বনের হাজার হাজার ঘনফুট লাকড়ি। এই বিষয়ে কথা হয় এই ভাটার মালিক কবির খাঁনের সাথে। তিনি বলেন, ‘অনুমতি না থাকলেও সবাইকে ম্যানেজ করেই কাজ শুরু করেছি। এখন ভাটা করতে অনুমতি লাগেনা’।  

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক (যুগ্নসচিব) হিল্লোল বিশ্বাস বলেন, ‘অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ভাটা চালু রাখতে সহযোগিতা করার বিষয়ে তদন্ত করা হবে। ইটভাটার পাহাড় কাটা ও বনের লাকড়ি পুড়ানোর বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে ছবি ও তথ্য দেন। আমরা ব্যবস্থা নিব।’

স্থানীয়রা জানায়, ফাইতং ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে গড়ে উঠা ২৮টি ইটভাটার সবগুলো ভাটা স্কুল, জনবসতি গ্রাম, সবুজ বনাঞ্চল, খালেরপাড় এবং সড়কের পাশে তৈরি করা হয়েছে। গেল বর্ষা থেকে শুরু করে ইটভাটা গুলো স্কেভেটর দিয়ে পাহাড় কেটে যাচ্ছে। ভাটার একমাত্র কাঁচামাল মজুদ মাটি শেষ হওয়ায় নতুন করে আবারো ২৮টি ভাটা স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটছে। যা দেখেও টিনের চশমা দিয়ে আছে পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবান। ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধভাবে গড়ে উঠা ভাটার কারণে পাহাড়ের প্রকৃতির সীমাহীন ক্ষতি হচ্ছে অভিযোগ পরিবেশবাদীদের। এমনকি উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের পাগলীরছড়া থেকে শিবাতলী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার জায়গায় গড়ে উঠেছে ২৮টি ইটভাটা। এ বছর পাগলীরছড়া এলাকায় বিএমডব্লিউ এবং ফাদুরছড়া এলাকায় সেভেনবিএম নামে নতুন করে আরো দুইটি ইটভাটা সৃষ্টি হয়েছে।  

ফাইতং মৌজা হেডম্যান উম্রামং মার্মা বলেন, ‘২০০৩ সালে ফাইতং ফাদুরছড়া এলাকায় দিদার মৌলভী ও সালে আহমদ নামে দুই ব্যক্তি ইউবিএম নামে একটি ভাটার মধ্য দিয়ে ইটভাটা কার্যক্রম শুরু করে। তারপর থেকে বাড়তে বাড়তে এখন ভাটা প্রায় ৩০টি। যদিও এ বছর দুইটি ভাটা বন্ধ রয়েছে। এলাকায় যন্ত্রের গর্জন ও ধুলোবালুতে সবুজ প্রকৃতি হারিয়ে যেতে বসেছে। গত ২১ বছরে প্রায় দেড় শতাধিক পাহাড় হারিয়ে গেছে।’

শুধু ফাইতং ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে ২৮টি অবৈধ ইটভাটা থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক বলেন, ‘কোন প্রকার অনুমতি, অনুমোদন ও ছাড়পত্র ছাড়াই বান্দরবানের লামা উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে ২৮টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে।’

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন-২০১৩ অনুসারে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন, অবৈধ ইটভাটাগুলো কার্যক্রম শুরু এবং জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের প্রস্তুতি গ্রহণ না করার আইন থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। বর্ষা ঋতুর পরপরই পাহাড়ে সবুজ প্রকৃতি সাজতে শুরু হলেও সেই পাহাড়ের বুকে আঘাত শুরু করেছে ইটভাটার মালিকরা।

ফাইতং ইউনিয়নের মেঅং পাড়ার বাসিন্দা চিংহ্লামং মারমা ও মংবাচিং মারমা বলেছেন, ‘শুধু এবছর নয়, কয়েক বছর ধরে কাটতে কাটতে পাড়ার পাশের পাহাড়টি এখন প্রায় শেষ হওয়ার পথে। তিনি আরো জানান, যেভাবে দিন-রাত অবিরাম কাটা হচ্ছে, তাতে কয়েকবছর পরে আর পাহাড়ের অস্তিত্ব থাকবে না। পাহাড় কালবৈশাখি ও ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষা করত। ইটভাটার মালিকেরা প্রভাবশালী। পাহাড় কাটতে বাধা দিলে তাঁরা মামলা-হামলার হুমকি দেন।’

লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক বেলাল জানিয়েছেন, ‘অবৈধ লাকড়ি পুড়ানোর বিষয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলমান রয়েছে। আজ বুধবার (১৩ মার্চ) ফাইতং সেভেনবিএম ইটভাটায় অবৈধ লাকড়ির বিষয়ে অভিযান চলছে।’  

এবিষয়ে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মো. ফখর উদ্দিন চৌধুরি এর মুঠোফোনে অসংখ্যবার ফোন দিলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হোসেন চৌধুরি বলেন, ‘আমি সদ্য যোগদান করেছি। অবৈধভাবে পাহাড় কাটার বিষয়ে ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।’

প্রসঙ্গত, লামা উপজেলায় ফাইতং ইউনিয়নে ২৮টি, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নে ৭টি, গজালিয়া ইউনিয়নে ২টি, সরই ইউনিয়নে ১টি ও লামা পৌরসভায় ১টি ইটভাটা সহ মোট ৩৯টি অবৈধ ইটভাটা চালু রয়েছে।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:



BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]