সিরাজগঞ্জের হাটিকুরুমরুল ইন্টারচেঞ্চে অধিগ্রহণকৃত জমির টাকা বোনের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রায় ১৫ কোটি টাকা উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেছে ছোট ভাই শিহাবুল ইসলাম ওরফে শিহাব সিদ্দিকী। এ ঘটনায় বোন লায়লা সিদ্দিকী ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এলএ) অফিসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে এ নিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্টেট নুসরাত জাহান দুপক্ষের উপস্থিতিতে শুনানি করেছেন। শুনানি শেষে লায়লা সিদ্দিকীকে লিখিতভাবে টাকা পায়নি তা লিখিতভাবে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী লায়লা সিদ্দিকী সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত লিয়াকত আলী সিদ্দিকীর মেয়ে ও চড়িয়া কান্দি পাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের স্ত্রী। তবে একই অভিযোগ আরেক বোন বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান এনডিপির আলাউদ্দিন খানের ছেলে জুবায়ের খানের স্ত্রী সুরাইয়া সিদ্দিকী অভিযোগ দিলেও তিনি অজ্ঞাত কারণে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তিনি কোন কথা না বলে দ্রুত পালিয়ে যান।
জানা যায়, লায়লা সিদ্দিকীর বাবা হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মৃত লিয়াকত সিদ্দিকী ওরফে বকুলের সম্পত্তিতে সরকারের মেগা প্রকল্প হাটিকুমরুল ইন্টার চেইঞ্জ নির্মাণ করছেন। বাপ-দাদার অধিগ্রহণকৃত জমির মূল্য প্রায় ১৪৮কোটি। ইতোমধ্যে কিছু জমি অধিগ্রহণের টাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। ছোট ভাই শিহাবুল ইসলাম ওরফে শিহাব সিদ্দিকী ভুয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নি তৈরি করেন এবং বোন লায়লা সিদ্দীর স্বাক্ষর জাল করে জমি অধিগ্রহণের ১৫ কোটি টাকা উত্তোলন করে এবং তা সিহাবুল নিজে একাই সম্পূর্ণ আত্মসাৎ করেছে। বাবার ওয়ারিশ হিসেবে ভাইয়ের কাছে লায়লা সিদ্দিকী টাকা চাইলে টাকা দিতে অস্বীকার করেন এবং নানা রকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করে যাচ্ছেন। পরে ভুক্তভোগী লায়লা সিদ্দিকী ও সুমাইয়া সিদ্দিকী এলএ অফিস লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার শুনানি দুইবোন ও ভাই শিহাবুল উপস্থিত হয়ে শুনানি অংশগ্রহণ করেন। শুনানীর সময় আলাউদ্দিন খানের ছেলে জুবায়ের খানের স্ত্রী সুরাইয়া সিদ্দিকী অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর দিলেও ভাইয়ের সাথে মিলেমিশে শুনানিতে বলেন টাকা পেয়েছি বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তবে লায়লা সিদ্দিকী টাকা পায়নি বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। এ অবস্থায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লায়লা সিদ্দিকীকে টাকা পায়নি এ মর্মে লিখিত সাক্ষ্য এবং সুরাইয়া সিদ্দিকী টাকা পেয়েছে লিখিত সাক্ষ্য জমা দিতে বলেছেন।
শুনানি শেষে অভিযুক্ত দুরন্তর ছোট ভাই শিহাবুল ইসলাম ওরফে শিহাব সিদ্দীকি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে বলেন, এলএ অফিস যাচাই-বাছাই করে আমাকে টাকা দিয়েছে। এ সংক্রান্ত সাক্ষ্য দেয়া হয়েছে। এলএ অফিস তদন্ত করে যে সিদ্ধান্ত দিবে তা মেনে নেবো। তবে সুরাইয়া সিদ্দিকীকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি কোনো কথা না বলে দ্রুত পালিয়ে যান। পিছনে গেলেও তিনি কোন সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে লায়লা সিদ্দিকী বলেন, বাবার সন্তান হিসেবে আমরাও তার সম্পত্তির ওয়ারিশ। কিন্তু আমার ভাই প্রতারণার মাধ্যমে বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে। এ অবস্থায় আমরা ন্যায় বিচার প্রার্থী। আশা করছি এলএ অফিস বিষয়টি সুষ্ঠভাবে তদন্তপূর্বক ন্যায্য পাওনা ফেরতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর