দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে পুরো পরিবার নিয়ে আশ্রয়গ্রহণ করেছিলেন ফিলিস্তিনি নারী সাবরিন আল-সাকানি। স্বামী-সন্তান নিয়ে নিরাপদে থাকবেন, এমনটা ভেবেই সেখানে আশ্রয়গ্রহণ করেন তিনি। তবে সেই ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল তার। শুধু তিনি নিজে নয়, ইসরায়েলি বোমায় তার স্বামী ও এক মেয়েও নিহত হয়েছে। তবে স্বামী-মেয়ে নিহত হলেও অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে মৃত ওই নারীর সন্তান। ইতিমধ্যে ওই নারীর সি সেকশনের মাধ্যমে ওই মেয়ে শিশুকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় নিয়ে এসেছেন চিকিৎসকরা। খবর আলজাজিরার।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, গত শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে রাফাহ শহরে দুটি ইসরায়েলি হামলায় ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাবরিন আল-সাকানি ও তার পরিবার ছিলেন। মৃত্যুর সময় তিনি প্রায় আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন। তবে তিনি মারা গেলেও তার গর্ভের শিশু বেঁচে ছিল। তাই সি-সেকশনের মাধ্যমে শিশুটিকে পৃথিবীতে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসকরা।
মেয়ে শিশুটির ওজন এক কেজি ৪০০ গ্রাম। তার অবস্থা স্থিতিশীল এবং ধীরে ধীরে আরও উন্নত হচ্ছে। বর্তমানে শিশুটিকে অন্য আরেকটি শিশুর সঙ্গে হাসপাতালের ইনকিউবেটরে রাখা হয়েছে।
ইসরায়েলি হামলায় মারা যাওয়া সাবরিনের মেয়ের নাম মালাক। তার চাচা রামি আল-শেখ বলেছেন, মালাক বোনের নাম রুহ রাখতে চেয়েছিল। আরবি ভাষায় রুহ মানে আত্মা। নতুন বোন আসবে যেন অনেক খুশি ছিল ছোট্ট মালাক।
হাসপাতালে অলৌকিক এই কন্যাশিশুর দেখাশোনা করছেন চিকিৎসক মোহাম্মদ সালামা। তিনি বলেন, শিশুটি তিন থেকে চার সপ্তাহ হাসপাতালে থাকবে। এরপর আমরা তাকে ছাড়পত্র দেব। তাকে তার পরিবার, খালা, মামা বা দাদা-দাদির কাছে দেওয়া হতে পারে। এটাই সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি। সে বেঁচে থাকলেও এতিম হয়ে জন্ম নিয়েছে।
গাজার সর্বদক্ষিণের শহর হলো রাফাহ। ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে এই শহরে বর্তমানে গাজার অর্ধেকের বেশি মানুষ আশ্রয়গ্রহণ করেছেন। তবে এই শহরেও স্থল অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। যদিও ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রসহ অধিকাংশ দেশ রাফাহতে ইসরায়েলি স্থল অভিযানের বিরোধিতা করে আসছে।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর