টাঙ্গাইলে সমকামী তরুণী আশা সিহান (১৬) কাছে ছুটে এসেছেন কিশোরগঞ্জে সমকামী তরুণী লিজা আক্তার (১৮)। কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উপজেলার গ্রামের কামাল হোসেনের মেয়ে এবং লিজা আক্তার টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার চটিলা গ্রামের লিয়াকত আলীর নবম শ্রেণিতে আলিয়া মাদ্রাসার পড়ুয়া মেয়ে আশা সিনহা। আর তাতে এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে হৈ চৈ, নানা গুঞ্জন। রোববার (২১ এপ্রিল) রাত্রি এগারোটার দিকে এমন ঘটনা জানাজানি হয় গোপালপুর উপজেলার হাসপাতাল সংলগ্ন স্টেডিয়াম এর পাশে এলাকায় ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক মাধ্যমে তাদের দীর্ঘ এক বছরের পরিচয়। দীর্ঘদিন ফেইসবুক মাধ্যমে পরিচয় ও কথোপতন হয়। তাতেই একজনের প্রতি অন্য জনের আসক্তি বাড়তে থাকে। জড়িয়ে পড়েন ভালোবাসার গভীর সম্পর্কে। সিধান্ত নেন ঘর ছাড়ার। একে অপরকে ভালোবেসে গত তিনদিন আগে দু’জনে একসাথে ঘরও ছেড়েছিলেন। গত তিনদিন ধরে গোপালপুরের মেয়ে আশা সিহানের ডাকে কিশোরগঞ্জের তরুণী লিজা আক্তার, গত ১৮ তারিখ তারা গোপালপুর আসে। হাসপাতালের পিছনে স্টেডিয়াম সংলগ্ন মাসিক ১৫০০ টাকায় তারা আব্দুল বারীর বাসার একটি রুম ভাড়া করে বসবাস শুরু করে। এসময় তারা নিজেদের গার্মেন্টসকর্মী হিসেবে পরিচয় দেয়। পরবর্তীতে বাসার আশেপাশের মহিলারা তাদের জীবনযাপন চলাফেরা দেখে সন্দেহ করে পুলিশ খবর দেয়। পরে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
টাঙ্গাইলের তরুণী আশা সিহান বলেন আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি এবং দুজন দুজনকেই বিয়ে করতে, সমাজ আমাকে যাই দেখুক না কেন, আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি। তাই বাড়ি থেকে নিরুপায় হয়ে পালিয়ে এসেছি। এখন আমাদের পরিবার এসব মানবে না তাই আমরা দুজন পালিয়ে এসে এখানে বসবাস করছি।
কিশোরগঞ্জের লিজা আক্তার বলেন, আমি আশা সিহান কাছে ছুটে চলে এসেছি, কারণ আমি তাকে অনেক ভালোবাসি আমরা এখন কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারবো না।
আশা সিনহা বাবা লিয়াকত হোসেন বলেন, আমি তিন দিন ধরে আমার মেয়েকে খুঁজে পাই নাই, খুঁজে না পেয়ে গোপালপুর থানায় জিডি করতে এসেছিলাম, তারপর খোঁজ পেলাম গোপালপুর থানায় আমার মেয়েকে অন্য মেয়ের সঙ্গে নিয়ে এসেছে। এসে সবকিছু জানতে এসব মানুষকে জানানো যায় না। খুবই লজ্জা জনক ব্যাপার এটি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এমন ঘটনা কখনো শুনেননি বা দেখেননি তারা। বিষয়টি এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। জানাদানি হলে পুলিশকে অবগত করে পরে গোপালপুর থানা পুলিশ দুই মেয়েকে নিয়ে পুলিশ হেফাজতে রাখে।পরবর্তীতে তারা টাঙ্গাইল জেলা জজ কোর্টে প্রেরণ করে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান কিশোরগঞ্জ উপজেলার কটিয়াদী ওই মেয়েটি তিন দিন আগে এসেছে, বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। দুই কিশোরীর দাবি- তারা কেউ কাউকে ছাড়া থাকবে না। তারা গার্মেন্টসে চাকরি করে একত্রে সারাজীবন কাটাবে বলে জানিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ জুলহাস উদ্দিন বলেন, এরকম নেককারজনক ঘটনা কখনো আমি শুনিনি, আর আজ আমি নিজে দেখতে পেলাম মেয়ের বাবা এসেছে এবং লিজা আক্তার বাবাকে খবর দেওয়া হয়েছে, এবং গোপালপুর থানা পুলিশ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
গোপালপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব বলেন। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট কোন আইন না থাকায় দুজনকেই টাঙ্গাইল জেলা বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর