জয়পুরহাটের আদালত চত্বরে এক নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে গোলাম রব্বানী মাছুম নামে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। একই ঘটনার উল্লেখ করে পালটা মামলা দায়ের করেছেন ওই অভিযুক্ত আইনজীবী নিজেই। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় জয়পুরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন শ্লীলতাহানির শিকার রিনা খাতুনের পিতা আজিজুল ইসলাম। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার পূর্ব পুরানাপৈল জনৈক ফজলুর রহমানের ছেলে নূর আলম তালাক দেওয়া ১ম স্ত্রী মনিরা খাতুনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে সন্তান নেওয়া সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং ১৪৬/২১)। ওই মামলায় হাজিরা দিতে গত ১৮ এপ্রিল আদালতে যান নূর আলম।
এ সময় তার দ্বিতীয় স্ত্রী রিনা খাতুনও সঙ্গে ছিল। মামলার শুনানি শেষে আদালতের বারান্দায় প্রথম স্ত্রী মনিরা খাতুনের কোলে থাকা শিশু সন্তানকে পিতা হিসেবে নূর আলম আদর করার চেষ্টা করলে মনিরা খাতুনের পক্ষের আইনজীবী গোলাম রাব্বানী মাসুমসহ ২/৩ জন বাঁধা প্রদান করেন। বাঁধা দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়াও উভয়ের মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়, এক পর্যায়ে গোলাম রাব্বানী মাসুমসহ অন্য ২/৩ জন নূর আলমকে কিল, ঘুসি ও লাথি মারে।
এ অবস্থা দেখে ২য় স্ত্রী রিনা খাতুন স্বামীকে রক্ষা করতে আগাইয়া আসলে তাকেও লাথি মেরে ফেলে দেওয়াসহ কাপড় চোপড় ধরে টানা হিঁচড়া করে শ্লীলতাহানি করা হয় মর্মে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই সময় শ্বশুর ফজলুর রহমান আগাইয়া আসলে তাকেও কিল, ঘুসি মারা হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান, ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
আদালতের সিসি ক্যামেরার ভিডিওতে সত্য ঘটনা রয়েছে বলেও দাবি করেন ভুক্তভোগীরা। এ ঘটনায় আইনজীবী গোলাম রব্বানী মাসুমের বিরুদ্ধে মেয়ে রিনা খাতুনের শ্লীলতাহানির অভিযোগে গত ২১ এপ্রিল জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হলেও মামলা রেকর্ড করা হয় ২৪ এপ্রিল রাতে (মামলা নং ৫০)। মামলার সত্যতা যাচাইয়ে প্রাথমিক তদন্তের কারণে রেকর্ড করতে দেরি হয়েছে বলে এ প্রতিবেদককে জানান, ওসি হুমায়ন কবীর।
অপর দিকে, একই ঘটনার উল্লেখ করে আইনজীবী গোলাম রব্বানী মাসুম বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে পালটা একটি মামলা দায়ের করেছেন ২৪ এপ্রিল রাতে (মামলা নং ৫১)। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে করা সংবাদ সম্মেলনে আজিজুল ইসলাম ছাড়াও মেয়ের মামী নারজিনা খাতুন, চাচা ফারুক হোসেনসহ অন্য স্বজনরা।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজীবী গোলাম রব্বানী মাসুমের সঙ্গ মুঠো ফোনে কথা হয়। তিনি শ্লীলতাহানির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন আমিও মামলা করেছি। এ মামলার তদন্তে প্রকৃত সত্য ঘটনা বের হয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর