গুচ্ছ ভুক্ত ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চতুর্থ বারের মতো এবার গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত একযোগে ২২ টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ ইউনিটে পরীক্ষার্থী ছিলো ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৯৯ জন। ২২ কেন্দ্রে মোট উপস্থিতির হার ৯০ শতাংশ।
পরীক্ষা শেষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, এ ইউনিটের পরীক্ষায় গড়ে ৯০ শতাংশ পরীক্ষার্থী উপস্থিত ছিলো। কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এছাড়াও এদিন বিকেল সাড়ে তিনটায় অনুষ্ঠিত হয়েছে আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রয়িং)পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে ভালো ভাবেই।
জবিতে ব্যতিক্রমী আয়োজন গুচ্ছ অন্তর্ভুক্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র এবং উপকেন্দ্র সুষ্ঠভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। জবিতে উপস্থিতি হার ছিলো ৮৩ শতাংশ। এদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য ছিলো বিশুদ্ধ পানি,মেডিক্যাল টিম ও চেয়ার ব্যবস্থা।সার্বক্ষণিক ভ্রাম্যমাণভাবে দুইটি মেডিক্যাল টিম সেবা প্রদান করেন।
জবিতে মাগুরা থেকে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী অনিক আহমেদ এই উদ্যোগে খুশী হয়ে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে এটা খুবই সুন্দর উদ্যোগ। এখানে এসে দেখলাম পানির ব্যবস্থা আছে। প্রচণ্ড গরমে এটা সবার জন্য ভালো।
গাজীপুর থেকে আসা এক শিক্ষার্থীদের অভিভাবক বলেন, অনেক ক্যাম্পাসে বসার জায়গা পাওয়া যায় না। গরমে পানি ও চেয়ারের ব্যবস্থাটা খুবই ভালো উদ্যোগ নিয়েছে।
ভর্তিচ্ছুদের সেবায় ছাত্রসংগঠন: এদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের সহায়তায় নিয়োজিত ছিলো বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও এলাকাভিত্তিক ছাত্রসংগঠন। দূর থেকে আসা শিক্ষার্থীদের ব্যাগ, মোবাইল, বই, খাতা সহ গচ্ছিত রেখেছেন তারা। এছাড়াও ফ্রি লেবুর শরবত, বিস্কুট ও পানিও দিয়েছেন বিভিন্ন জেলাভিত্তিক এসব সংগঠন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ছিলো জয় বাংলা বাইক সার্ভিস। শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করা হয়।
দেরিতে আসা শিক্ষার্থীদেরও পরীক্ষায় বসার সুযোগ: এদিন দুপুর বারোটায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নির্দিষ্ট সময়ের পরেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে এসেছিলেন অনেক পরীক্ষার্থী। এসব পরীক্ষার্থীদেরকেও কেন্দ্রে বসার সুযোগ দিয়েছে প্রশাসন। ঢাকার যানজটে নির্দিষ্ট সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেননি বলে জানান তারা।
এ বিষয়ে জবি উপাচার্য বলেন, আমাদের ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই এসব পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
প্রশ্ন ছাপার মান নিয়ে ক্ষোভ: এদিকে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের ছাপার মান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরীক্ষার্থীরা। পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশ্নপত্রে ছাপা অক্ষর খুবই ছোটো। একটি লাইনের সাথে আরেকটি লাইনের, দূরত্ব খুবই কম। অক্ষর আকৃতি খুবই ছোট। এছাড়াও প্রশ্নের লাইনের নৈবত্তিক্তের অপশন দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরীক্ষার্থীরা হৃদয় দেবনাথ নামের এক পরীক্ষার্থী বলেন, প্রশ্নের লাইনের মধ্যে স্পেস খুবই কম। আবার কিছু কিছু প্রশ্নে এলোমেলো সিরিয়াল ছিলো।
মো. ফাহাদ মোরশেদ নামের আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, প্রশ্নের ছাপার পৃষ্ঠার ক্রম ঠিকনেই। এক পৃষ্ঠায় একরকম, পরের পৃষ্ঠায় আবার উলটো করে ছাপা হয়েছে। কাগজের মানও ভালো না।
যানজটে পরীক্ষার্থীদের ভোগান্তি : এদিন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্য ৫ টি উপকেন্দ্রে ৫৩হাজার পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা থাকায় রাস্তায় গাড়ির চাপ বাড়ে। পল্টন-গুলিস্থান থেকে সদরঘাটগামী রাস্তায় ছিলো তীব্র যানজট। এই ভোগান্তিতে পড়ে দূর থেকে আসা পরীক্ষার্থীরা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে এক পরীক্ষার্থী বলেন, উত্তরা থেকে বের হয়েছি হাতে তিনঘন্টা সময় নিয়ে। গুলিস্থান পার হইতেই ২ ঘণ্টা সময় লেগেছে। অনেক বেশি জ্যাম। রিক্সাও চলছে না। পরীক্ষার দিন গুলোতে ট্র্যাফিক পুলিশকে আরো তৎপর হতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.সাদেকা হালিম বলেন, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে প্রশাসনসহ সকল শিক্ষকরা কাজ করেছে। সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শেষ হয়েছে।
উল্লেখ্য, বি ইউনিটের (মানবিক) ৩ মে (শুক্রবার) এবং সি ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১০ মে (শুক্রবার)। দুটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর