বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রোগীর শরীরে পুশ করার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় রোগীর স্বজনরা বাধা দেয়ায় শরীরে পুশ করতে পারেনি বলে জানান রোগীর স্বজনরা।
জানা যায়, মেয়াদের ২ মাস গত হওয়া একটি ইনজেকশন কামাল হোসেন নামের এক রোগীকে পুশ করার সময় রোগীর স্বজনদের কাছে বিষয়টি ধরা পড়ে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। এ ঘটনায় ৪ কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মাসুদ রানা।
গত মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার শোকজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তা ডাক্তার মাসুদ রানা।
পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের বাদুরতলা এলাকার বিউটি বেগম বলেন, আমার স্বামী অসুস্থ হলে মঙ্গলবার দুপুরে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। অসুস্থতা বেশি হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাত দশটার দিকে পুরুষ ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স মাছুমা বেগম সরকারিভাবে বিনামূল্যে প্রদান করা মোট্রোনিডাজেল নামের একটি ইনজেকশন পুশ করার জন্য নিয়ে আসে। বোতল থেকে যখন সিরিঞ্জের ভেতর নেয় তখন আমি বোতলের গায়ে দেখি ইনজেকশনের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি মাসে শেষ হয়েছে। এসময় নার্সের হাতটা টেনে ধরে ইনজেকশন পুশ করতে বাধা দেই। এসময় অন্যান্য রোগীরা বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
দায়িত্বরত সিনিয়র নার্স মাসুমা জানান রোগীদের জন্য বিনামূল্যে বরাদ্দকৃত ঔষধ হাসপাতালের নির্ধারিত স্থান থেকে এনে রোগীকে পুশ করার জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। তবে তার শরীরের পুশ করা হয়নি। তিনি জানান যারা মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ওখানে রেখেছে তাদের অসাবধানতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় পাথরঘাটা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল, মোহনা টিভির প্রতিনিধি সুমন মোল্লা, কালবেলা প্রতিনিধি আল আমিন ফোরকান, আরটিভি প্রতিনিধি তাওহীদুল ইসলাম শুভ সহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিক আল আমিন ফোরকান বলেন, বিষয়টি নিয়ে বুধবার দুপুরে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক ডা. মাসুদ রানার দপ্তরে বক্তব্য নিতে গেলে তিনি আমাদের ওপর ক্ষেপে যান এবং হুমকি দিয়ে সংবাদ প্রচার করতে নিষেধ করেন। সংবাদ প্রচার হলে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার ভয়ভীতিও দেখান তিনি।
বৃহস্পতিবার ডা. মাসুদ রানা জানান, হাসপাতালে একটি স্টোর রুম রয়েছে। ওই স্টোরের মধ্যেই আরেকটি সাব স্টোর আছে। ওই সাব স্টোরে তারা ডেড ওভারের (মেয়াদোত্তীর্ণ) ওষুধ রাখেন। ভুলে ২/১টি ইনজেকশন চলমান ওষুধের মধ্যে থাকতে পারে। এ ধরনের ভুল এই হাসপাতালের মধ্যে আগে কখনো ঘটেনি। এ ঘটনায় নার্স ইনচার্জ লিটুরানী, সুপারভাইজার রেনু বেগম এবং দায়িত্বরত দুই নার্স সিনথিয়া ও মাসুমমাকে শোকজ করা হয়েছে। সাংবাদিকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর