তিউনিসিয়া উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবে আট বাংলাদেশি মারা গেছেন। এরমধ্যে পাঁচজনের বাড়ি মাদারীপুরের রাজৈরে। আর সজীব বেপারী রাজৈরের ওই পাঁচজনের মধ্যে একজন। আটজনের মধ্যে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার পাঁচজন ছাড়াও বাকি তিনজন গোপালগঞ্জের।
শুক্রবার (৩ মে) সন্ধ্যায় নিহত পাঁচজনের মরদেহ মাদারীপুরের রাজৈরে নিজ নিজ গ্রামে পৌঁছায়। পরে তাদের মরদেহ দাফন করা হয়। এ সময় আহাজারি করতে করতে সজীব বেপারীর মা হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমার পোলাডার কাটা-ছেঁড়া দেহ পাইলাম। অনেক অনুরোধ করছিলাম শরীরটা কাটা লাগবে না। কিন্তু সে কথা হুনে নাই। ঢাকায় মর্গে নিয়া দেহ কাইটা ছিঁড়া দিলো। আর যে দালালরা আমার পোলারে সাগরে ডুবাইয়া মারলো তাগো যেন সুখ না হয়।
স্বজনরা জানায়, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি লিবিয়া থেকে দালালদের মাধ্যমে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় রওনা দেয় তারা। তিউনিসিয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে আগুন ধরে যায়। পরে ডুবে যায় নৌকাটি। এতে রাজৈর উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের সজীব বেপারী (১৯), পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের মামুন শেখ (২২), সেনদিয়া গ্রামের সজল বৈরাগী (২২), কদমবাড়ী গ্রামের নয়ন (২০) বিশ্বাস ও কিশোরদিয়া গ্রামের কাওসার (২২) ও মুকসুদপুর উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের দাদনের ছেলে রিফাত (২৩), ফতেপট্রি গ্রামের রাসেল (২২) ও গয়লাকান্দি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরুল কায়েস আপনসহ (২২) ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত মামুনের বড় ভাই সজিব শেখ জানান, দুর্ঘটনার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস, লিবিয়ার একটি প্রতিনিধি দল তিউনিসিয়ার জারবা ও গ্যাবেস হাসপাতালের মর্গে অজ্ঞাত পরিচয়ে সংরক্ষিত সব মরদেহ পরিদর্শন করে।
এরপর দুর্ঘটনায় জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া বাংলাদেশিদের সহায়তায় মৃত আটজন বাংলাদেশি নাগরিকের ছবি এবং প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। পরবর্তীতে দূতাবাস হতে নিহত বাংলাদেশিদের আউটপাস ইস্যু করে মরদেহ দেশে পাঠায়। পরে পারিবারিকভাবে নিহতদের দাফন করা হয়।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর