ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েল বাহিনীর আগ্রাসন, নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদ ও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্রের ঘোষণার দাবিতে উত্তাল দেশ। দেশব্যাপী পদযাত্রা, সমাবেশের মধ্যদিয়ে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়।
সোমবার (৬ মে) ছাত্রলীগের পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচিতে সংহতি বিপুল মানুষের সংহতি জানিয়ে উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সবচেয়ে বড় কর্মসূচি ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ঘিরে।
বেলা ১১টায় ঢাবির মধুর ক্যানটিনের সামনে থেকে এক পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি ভিসি চত্বর-ফুলার রোড-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পৌঁছালে পরে সেখানে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা দেখেছি যারা গণতন্ত্রের মোড়ল, বাকস্বাধীনতার সার্টিফিকেট দেয়, যারা বলে দেয় কোন দেশটি গণতান্ত্রিক আর কোন দেশটি অগণতান্ত্রিক তাদের মুখোশ কীভাবে উন্মোচিত হয়ে গেছে। আমরা দেখেছি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন আন্দোলন চলমান রয়েছে সেখানে আড়াই হাজারের অধিক শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আন্দোলন করার জন্য শিক্ষার্থীদের ওপর বহিষ্কারাদেশ নেমে এসেছে।
সাদ্দাম বলেন, শুধু স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলার কারণে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মায়মুনাকে বহিষ্কারের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে গিয়ে শিক্ষকের পাঁজরের হাড় ভেঙে দেয়া হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর যারা নিপীড়ন করে আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আজ বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যে বাঁধভাঙা গণজোয়ার, তা সেই গাজা উপত্যকায় গিয়ে লাগবে এবং গাজা উপত্যকা থেকে সব অন্যায়, অবিচার, অপশাসন ভেসে যাবে। শেখ মুজিবুর রহমান দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত- শোষক আর শোষিত; আমি শোষিতের পক্ষে। তার হাতে গড়া সংগঠন আমরাও জানিয়ে দিতে চাই সারাবিশ্বের শোষিত, নিপীড়িত মানুষের পক্ষে থাকবো, অত্যাচারিত মানুষের পক্ষে থাকবো।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা অন্যায়-অবিচার, গণহত্যার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। বিশ্বের মোড়লদের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, যা সত্যিই অনেক সাহসিকতার বিষয়। সারাবিশ্বে শান্তি ফেরাতে শেখ হাসিনার যে মডেল সেটিকে গ্রহণ করার জন্য বিশ্ব নেতাদের প্রতি আমাদের আজকের এই বাঁধভাঙা জোয়ার থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।
বাংলাদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী এবং বাংলাদেশের অবস্থানরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীদের ছাত্রনেতা আব্দুল্লাহ বাদাওয়ি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের মৌলিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। আমাদের ওপর গণহত্যা চালানো হচ্ছে। আমাদের মা-বোনদের আর্তনাদ সব পরিসংখ্যানে আসে না। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানানোর জন্য আমি বাংলাদেশ সরকার ও শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ধন্যবাদ জানাচ্ছি বাংলাদেশের ছাত্র সমাজের প্রতি।
এসময় ওই সমাবেশে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক আকিব মুহাম্মদ ফুয়াদ, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম, মহানগর দক্ষিণ সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি, সাধারণ সম্পাদক বাবু সজল কুন্ডু প্রমুখ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর