আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে সুনামগঞ্জের চারটি উপজেলা পরিষদ (ধর্মপাশা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২০ জন প্রার্থী।
এর মধ্যে একমাত্র মহিলা প্রার্থী হিসেবে ধর্মপাশা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নাসরিন সুলতানা দিপা। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান। তিনি শিক্ষায় পিছিয়ে থাকলেও সম্পদে সবাই পেছনে ফেলে এগিয়ে আছেন। হলফনামা অনুযায়ী তার সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ ৪২ হাজার ৭১৪.৭৫ টাকার।
সম্পদে দ্বিতীয় স্থানে আছেন এস আর হায়দার চৌধুরী লিটন। হলফনামা অনুযায়ী রয়েছে ২ কোটি ৬৭ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৫৫ টাকার সম্পদ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের চারজন প্রার্থী,বিএনপির একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী একজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে আছেন ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী। স্বশিক্ষিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ বাশার তালুকদার। প্রার্থীদের মধ্যে মামলায় অভিযুক্ত নন ৫ জন এবং দায় দেনাও নেই ৫ জনের। প্রার্থীদের মধ্যে আছেন আইনজীবী,ব্যবসায়ী,কৃষিজীবী ও সমাজসেবী।
নাসরিন সুলতানা দিপা হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ। তারা উল্লেখ করেছেন,ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সমাজসেবা। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সম্মানী হিসেবে বাৎসরিক আর্য করেন ৫৪ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ২ কোটি ৮৯ লক্ষ ৮৪ হাজার ৭১৪.৭৫ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার ৩২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ২ লক্ষ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লক্ষ টাকা এবং আসবাবপত্র ১ লক্ষ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে কৃষি জমি ৪৮ লক্ষ ৪ হাজার টাকা, দালান ৫০ হাজার টাকা। তিনি মামলায় অভিযুক্ত হন এবং দায় দেনাও নেই।
অপর দিকে,সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এস আর হায়দার চৌধুরী লিটনের শিক্ষাগত যোগ্যতা বি.কম (সম্মান)এলএলবি। পেশা উল্লেখ করেছেন আইনজীবী ও ব্যবসা। ব্যবসা থেকে তিনি বাৎসরিক ৪৭ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা এবং আইন পেশা থেকে ৫ লক্ষ ৪১ হাজার ৯৭৮ টাকা আয় করেন।
অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ২ লক্ষ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ২৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৬৫২ টাকা, এফডিআর ৫০ লক্ষ টাকা, সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৩০ লক্ষ টাকা, স্ত্রী ও স্বামীর নামে ১০ ভরি স্বর্ণ ১ লক্ষ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা। অন্যান্য (ব্যবসার পুঁজি) ৩৪ লক্ষ ৮ হাজার ৭২৫ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে ০.০৭৮০ একর কৃষি জমি ২৪ লক্ষ টাকা, ০.০৬১৭৪০ একর অকৃষি জমি ২৯ লক্ষ টাকা, পাকা দালান ২০ লক্ষ টাকা। তিনি কোনো মামলায় অভিযুক্ত নন এবং দায় দেনাও নেই।
এদিকে,ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস এইচ.এস.সি পাশ। পেশা কৃষি। কৃষি খাত থেকে বাৎসরিক ৬০ হাজার টাকা এবং ব্যবসা থেকে ৩ লক্ষ টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ৪ লক্ষ টাকা, স্ত্রী/স্বামীর নামে ৩ ভরি স্বর্ণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ৬০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৫০ হাজার টাকা অন্যান্য ২৫ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে কৃষি জমি ৭ একর (ক্রয়সূত্রে) ৭ লক্ষ টাকা, পৈত্রিক সম্পত্তি ৩ একর, অকৃষি জমি ১ একর (পৈত্রিকসূত্রে), তিনটি হাফ বিল্ডিং ঘর (পৈত্রিকসূত্রে)। তিনি বর্তমানে কোনো মামলায় অভিযুক্ত নন। তবে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ধর্মপাশা শাখায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার কৃষি ঋণ ও সোনালি ব্যাংক ধর্মপাশা শাখায় ১ লক্ষ টাকা দায় দেনা রয়েছে।
অপরদিকে,ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ বি.এ পাশ। ধান চালের ব্যবসা থেকে তিনি বাৎসরিক ৪ লক্ষ টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ৫০ হাজার টাকা, একটি মোটরসাইকেল ১ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ৮০ হাজার টাকা, আসবাবপত্র ৭০ হাজার টাকা, ব্যবসার পুঁজি ১১ লক্ষ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে ২.০০ একর কৃষি জমি ১ লক্ষ টাকা, দু’তলা বিশিষ্ট একটি দালান ১৫ লক্ষ টাকা। তিনি বর্তমানে কোনো মামলায় অভিযুক্ত নয় এবং দায় দেনাও নেই।
ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা এম.এস.এস। পেশায় তিনি একজন আইনজীবী। বাৎসরিক তিনি ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৩ লক্ষ টাকা, একটি পুরাতন পালসার মোটরসাইকেল, স্ত্রী ও স্বামীর নামে ৩ ভরি স্বর্ণ, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও আসবাবপত্র। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ০৫ শতাংশ বসতবাড়ি। তার বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি মামলা রয়েছে (চূড়ান্ত রিপোর্ট)। কোন দায় দেনা নেই।
এবং মোঃ বাশার তালুকদার স্বশিক্ষিত। কৃষি খাত থেকে তিনি বাৎসরিক ৪ লক্ষ টাকা আয় করেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে নগদ ৬ লক্ষ টাকা, স্বর্ণ ১ লক্ষ টাকা, ইলেকট্রনিক সামগ্রী ১ লক্ষ টাকা এবং আসবাবপত্র ১ লক্ষ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নিজ নামে কৃষি জমি ১৫ একর, অকৃষি জমি ৩৫.৫ শতাংশ ৫ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, দালান (বাণিজ্যিক) ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, টিনসেড ঘর ১ লক্ষ টাকা। তিনি মামলায় অভিযুক্ত নন এবং দায়-দেনাও নেই।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর