যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা মেলাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দুই অধ্যাপককে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে সিন্ডিকেট। সেই সঙ্গে অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলে পাঠানো হয়েছে এবং পিএইচডিতে চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে আরেক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (৮ মে) বিষয়টি সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এদিকে মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দীনের বিরুদ্ধে এমফিল ও পিএইচডি থিসিসের চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ উঠেছে। এবার তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৭ মে) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এবং এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়।
সিন্ডিকেট সূত্রে জানা যায়, চৌর্যবৃত্তির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবদুল বাছিরকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ এবং তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম জাভেদ আহমেদ।
এর আগে গেল বছরের ২৯ আগস্ট স্বেচ্ছায় অবসরগ্রহণকারী ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফ বিল্লাহ এ নিয়ে ঢাবি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), কলা অনুষদ ডিন এবং সব সিন্ডিকেট সদস্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।
এদিকে যৌন হয়রানিরর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদ ও ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ ফেরদৌসের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে, উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে যৌন নিপীড়ন সেলের অধিকতর তদন্ত চলাকালীন দুই অধ্যাপককে ওই অব্যাহতির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিষয়টি একাধিক সিন্ডিকেট সদস্য নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতকোত্তর (২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ) ১২তম ব্যাচের স্নাতকোত্তর চূড়ান্ত পরীক্ষার সমন্বিত কোর্সে (লিখিত ও মৌখিক) কম নম্বর দিয়ে ফলাফল ধস নামানোর অভিযোগ তুলে অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে ২৮ জন শিক্ষার্থী উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে ওই শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাদের নম্বর কম দিয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নাদির জুনাইদ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর