
ইরাকের পার্লামেন্টে মেয়েদের বিয়ের বয়সসীমা ৯ বছরে নামিয়ে আনার প্রস্তাব করেছেন দেশটির বিচারমন্ত্রী। বর্তমানে সেখানে নারীদের বিয়ের আইনি বয়স ১৮ বছর। পাশাপাশি ছেলেদের বিয়ের বয়সও কমিয়ে ১৫ বছর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এমন প্রস্তাব প্রকাশ্যে আসার পরেই ইরাকজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ ও সমালোচনা।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে বিদ্যমান আইনে নারীদের বিয়ের নূন্যতম বিয়ের বয়স ১৮ বছর। নতুন উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, ধর্মীয় নেতা ও বেসামরিক বিচার সংশ্লিষ্টরা চাইলেই পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলাতে পারবে।
সংবাদ সংস্থা ‘মিডল ইস্ট আই’ জানিয়েছে, ইরাকে ১৯৫৯ সালের ব্যক্তিগত আইনের ১৮৮ নম্বর আইন সংশোধনের দাবি উঠেছে। এই আইন পাশ করিয়েছিল আবদুল-করিম কাশিমের সরকার। কাশিম ছিলেন বামপন্থী। বেশ কিছু সংস্কারপন্থী আইন এনেছিলেন তিনি। মহিলাদের উন্নয়নের কথা ভেবেছিলেন তিনি। সে সময় পশ্চিম এশিয়ার অন্য কোনও দেশে এ ধরনের আইন ছিল না বলে দাবি করেছেন মহিলাদের অধিকার রক্ষাকর্মী সুহালিয়া আল আসাম।
কাশিম সরকারের আইনে পুরুষ এবং মহিলাদের বিয়ের বয়স ধার্য করা হয়েছিল ১৮। পুরুষদের এক স্ত্রী থাকতে দ্বিতীয় বিয়েতেও বাধা ছিল সেই আইনে। মুসলিম নয়, এমন মহিলাকে বিয়ের ক্ষেত্রেও বাধা ছিল না। স্বামী আশ্রয় না দিলে তাঁকে অস্বীকার করার অধিকার মহিলাদের দিয়েছিল ১৯৫৯ সালে তৈরি সেই আইন। তবে বিচারক এবং পাত্র-পাত্রীর অভিভাবকের সম্মতিতে ১৫ বছরেও বিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেই আইনে।
এ বার কট্টরপন্থী শিয়া দলগুলো এই আইনের সংশোধন চাইছে। খসড়া বিলে বলা হয়েছে, দম্পতির মধ্যে মতানৈক্য হলে স্বামীর মতামতই মানতে হবে স্ত্রীকে। আদালতের পরিবর্তে স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া নিয়ে শেষ কথা বলবে শিয়া এবং সুন্নি ধর্মের দফতর। আইনের সংশোধন হওয়ার পর ৬ মাসের মধ্যে তাতে অনুমোদন দিতে হবে শিয়া এবং সুন্নি নেতাদের।
বিলে আরও বলা হয়েছে, ‘জাফরি আইন’ মেনে শিয়া আচরণবিধি তৈরি হবে। ষষ্ঠ শিয়া ইমাম জাফর আল সাদিক বিয়ে, বিচ্ছেদ, দত্তক, উত্তরাধিকার নিয়ে যা বলেছেন, তা মেনে চলতে হবে। ‘জাফরি আইন’-এ মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছর। ছেলেদের বিয়ের বয়স ১৫ বছর।
ইরাকে নারীদের অধিকার রক্ষাকর্মী তামারা আমিরের দাবি, এই বিল পাশ হলে দেশে নারী এবং শিশুদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে। অন্য এক সমাজকর্মী সুহালিয়ার প্রশ্ন, রাজনীতিকেরা কি নিজেদের ৯ বছরের কন্যার বিয়ে দেবেন?
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর