
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তিন মন্ত্রী ও চার এমপিসহ আওয়ামী লীগের ৮৮ নেতা-কর্মীর নামে আগুনে পুড়িয়ে দুজনকে হত্যার অভিযোগে কিশোরগঞ্জে একটি মামলা হয়েছে। মামলায় আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ আগস্ট) কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মো. মতিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলাটি করেন। তিনি জেলা শহরের বত্রিশ এলাকার মৃত আশরাফ আলীর ছেলে। কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী এবং সাবেক বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, সাবেক এমপি ও সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ, সাবেক এমপি সোহরাব উদ্দিন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বড় ছেলে সাবেক এমপি রেজওয়ান আহমেদ তৌফিক, সাবেক এমপি আফজাল হোসেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মশিউর রহমান হুমায়ুন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বকুল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল গণি ঢালী লিমন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ ওমান খান, শফিকুল আলম, যুবলীগ নেতা আল জুবায়েদ খান নিয়াজ, মাহফুজ, সাইফুল ইসলাম অপু, মাজহারুল ইসলাম মাসুদ, ছাত্রলীগ নেতা তৌফিক, সানা, মুরসালিন খান, তাজবীর, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে ছাত্র-জনতা বৈষম্যবিরোধী মিছিল নিয়ে কিশোরগঞ্জ শহরের স্টেশন রোডে জড়ো হলে ১ নম্বর থেকে ৯ নম্বর আসামির হুকুমে সকল আসামি বেআইনিভাবে দা, রামদা, কিরিচ, বল্লম, লোহার রড, হকিস্টিক, পেট্রোল বোমা, ককটেল, পাইপগান, শটগান, পিস্তল ইত্যাদি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগ অফিসের দিক থেকে হামলা করে। তাদের হাতে থাকা শটগান, পাইপগান দিয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যার উদ্দেশ্যে সরাসরি গুলি করা হয়। এতে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন।
মামলার বিবরণে বাদী আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালালে আহত হয়ে জীবন বাঁচতে দৌড়াতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। পরে পার্শ্ববর্তী খরমপট্টি এলাকায় সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাসার ভেতরে ও সামনের রাস্তায় আশ্রয় নেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলকারীরা এই বাসায় অবস্থান করছে খবরে ১০ নম্বর আসামি থেকে সকল আসামি অস্ত্র নিয়ে বাদীসহ ছাত্র-জনতার পিছু ধাওয়া করে। এ সময় ১১ ও ১২ নম্বর আসামির হাতে থাকা কনটেইনার থেকে ১১ নম্বর আসামি পেট্রোল ঢেলে ওই বাসায় আগুন দেয়। সেই আগুনে বাসায় থাকা জুলকার হোসাইন (৩৮) ও অঞ্জনা (২৮) পুড়ে মারা যান।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, আজ দুপুরে থানায় মো. মতিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি এ মামলাটি করেন। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর