
নাটোরের সিংড়ায় এবছরে কঠোর নিরাপত্তা বলায়ে ৮১ টি পূজা মণ্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর বুধবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মালম্বীদের বৃহত্তম এ শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হয়। গতবারের চেয়ে এবার পূজা মণ্ডবের সংখ্যা কমেছে ১২টি।
গতবছর ৯৩টি পূজা মণ্ডবের আয়োজন ছিল। তবে ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী সমাজে আর্থিক সংকট ও সরকার পরির্বতনের প্রভাবে নিরাপত্তা শংকায় পূজা মন্ডবের সংখ্যা কমেছে এমন মন্তব্য করেছেন আয়োজকরা। এদিকে প্রতিটি মণ্ডপে সিসি টিভির আওতায় কঠোর নিরাপত্তায় পূজামণ্ডপ মনিটরিং করছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
পূজাকে ঘিরে সনাতন ধর্মালম্বীদের ঘরে ঘরে এখন চলছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল ও উলুধ্বনিতে পূজা মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয়েছে সাজ সাজ রব। প্যান্ডেল ও আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে প্রতিটি বন্ডও।
আগামী ১৩ অক্টোবর রবিবার প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে ৫দিন ব্যাপী এই উৎসবের শেষ হবে। এ বছর দেবী দুর্গা মর্তে আগমন করবেন দোলায় আর ঘোড়ায় চড়েই তিনি ফিরে যাবেন স্বর্গলোকে।
উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি চাঁন মোহন হাওলাদার ও সাধারণ সম্পাদক তাপস সরকার জানান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তর থেকে সরকারী অনুদান হিসাবে প্রতি বছরের মত এবছরও ৫০০শত কেজি চাল (ডিও) পাওয়া গেছে যা স্ব-স্ব মন্ডবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের কাছে পৌছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিটি মণ্ডপে ৩ টি করে শাড়ী উপহার হিসাবে পেয়েছি। তারা আরো জানান, সরকার পরির্বতনের প্রভাবে নিরাপত্তার শংকায় এবছর ১২টি পূজামণ্ডপের সংখ্যা কমেছে। এসব পূজা মন্ডব বেশিরভাগ ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী সমাজের। একারনে তাদের আর্থিক সমস্যাও বড় সমস্যা বলে জানান তারা। প্রশাসনের পাশাপাশি বিএনপি ও জামাতের নেতাকর্মীরা সহযোগতিা করছেন। এখন পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে।
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু বলেন, দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে আমরা মতবিনিময় ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। সুষ্ঠুভাবে পূজা সম্পন্ন করতে হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তায় প্রশাসনের পাশাপাশি আমরা কমিটি গঠন করে মাঠে রয়েছি।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক আ.ব.ম আমান উল্লাহ্ ও সেক্রেটারি অধ্যাপক এনতাজ আলী বলেন, দুর্গাপূজায় সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে আমরা মতবিনিময় করেছি। প্রতিটি মণ্ডপে আমাদের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা স্বেচাছাসেবকের দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি আমরা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও সহযোগিতা করছি।
সিংড়া থানা অফিসার ইনর্চাজ মোঃ আসমাউল হক জানান, উপজেলার সবগুলো মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সার্বিক আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার হা-মীম তাবাসসুম প্রভা জানান, প্রতিটি মণ্ডপে পুলিশ, আনসার-ভিডিপি মোতায়েন করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া র্যাবের পাশাপাশি এবছর সেনাবাহিনীও মাঠে আছে। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা আমাদেরও পাশে থেকে সহযোগিতা করছেন। আমরা আশা করছি আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকবে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীরা স্বতর্স্ফুতভাবে পূজা পালন করতে পারবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর