
পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা বা বাণিজ্য আলোচনা—এই দুই বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক ফোনালাপে মোদি দাবি করেছেন, গত মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ চলাকালে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল না এবং বাণিজ্য নিয়েও কোনো কথা হয়নি।
বুধবার (১৮ জুন) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে ইন্ডিয়া টুডে। সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ও হস্তক্ষেপ নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়েন মোদি।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির ভাষ্য অনুযায়ী, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, পুরো ঘটনার সময় কোনো পর্যায়েই ভারত-মার্কিন বাণিজ্য চুক্তি কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পাকিস্তান-ভারতের মধ্যস্থতা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।’
এটি ছিল মে ৭ তারিখে ভারতের ‘অপারেশন সিদুঁর’ শুরুর পর দুই নেতার প্রথম ফোনালাপ। এই আলোচনার ঠিক আগেই হোয়াইট হাউজে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের বৈঠক হয়।
৩৫ মিনিটের এই ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী মোদি তাকে জানান, ভারতের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছিল ‘পরিমিত, নিখুঁত এবং উত্তেজনা-বর্জিত’। তিনি জানান, ৯ মে রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ভারতের প্রতি সতর্কতা পাঠান যে পাকিস্তান একটি বড় ধরনের হামলা চালাতে পারে। সেই অনুযায়ী ভারত প্রস্তুতি নেয় এবং পরদিন রাতেই পাকিস্তানের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাল্টা হামলায় পাকিস্তানি সামরিক ঘাঁটিগুলোতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করে দেয় ভারত।
প্রধানমন্ত্রী মোদি ট্রাম্পকে জানিয়ে দেন, ভবিষ্যতে পাকিস্তান যদি আবার আগ্রাসন চালায়, তবে তার জবাব হবে আরও কঠোর।
ফোনালাপে মোদি কাশ্মীর নিয়ে ভারতের দৃঢ় অবস্থানও পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত কখনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা গ্রহণ করেনি, করেও না, ভবিষ্যতেও করবে না।’ এই বিষয়ে ভারতে পূর্ণ রাজনৈতিক ঐকমত্য রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ফোনালাপে ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আমন্ত্রণ জানান যুক্তরাষ্ট্রে আসার জন্য, তবে মোদি জানান তিনি পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির কারণে যেতে পারছেন না। পরিবর্তে তিনি ট্রাম্পকে আসন্ন কোয়াড সম্মেলনের জন্য ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান, যা ট্রাম্প গ্রহণ করেন, যদিও উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেননি।
দুই নেতা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে কোয়াডের ভূমিকাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন। পাশাপাশি তারা ইসরাইল-ইরান যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করেন। রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রত্যক্ষ আলোচনা দরকার—এমনটাই মত দেন দুই নেতা।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর