
সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কের লামাকাজি এম এ খান সেতুর টোল আদায় বন্ধের দাবিতে সুনামগঞ্জের সকল গণপরিবহন মালিক শ্রমিক পরিষদের অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি চলছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর)সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু হয়েছে।
এর পূর্বে গত সোমবার (২১ অক্টোবর)দুপুরে সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গণপরিবহন সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সভার মাধ্যমে এই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন মালিক শ্রমিক পরিবহনের নেতারা।
এ কারণে সকাল থেকে সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে কোনো ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল ও বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সিলেট সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যেতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন মানুষজন। তবে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে। এতে করে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা মানুষজন।
সিলেটে বিভাগীয় শহরে যেতে সকালে সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে এসেছিলেন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় থেকে আসা জামিল মিয়া। তিনি জামান,সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তিনি আটকে আছেন। বাস চলাচল করে কি না তা এখনও জানেন না। তাই তিনি বিকল্প চিন্তা করছেন। তবে সিলেটের ঐ সেতুর টোল বন্ধ করার পক্ষেও তিনি। তবে পরিবহণ ধর্মঘট আগে জানলে তিনি আসতেন না বলে জানিয়েছেন।
রাজধানী ঢাকা শহরে পরিবার নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তাহিরপুর উপজেলা থেকে বাসস্ট্যান্ডে এসে সকাল থেকে বসে আছেন শাকিল মিয়া। তিনি জানান,বাড়ি থেকে সকাল এসে দেখি বাস চলছে না। পরিবহণ ধর্মঘট চলছে। এখন কখন বাস চলবে আর যাব আল্লাহ ভাল জানে। আগে জানলে এই দুর্ভোগ পোহাতে আসতাম না। তিনি জানান,একটি সেতুর টোল আদায়ের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষের দুর্ভোগ মেনে নেওয়া যায় না।
পরিবহণ সংগঠনের নেতারা জানান,এম এ খান সেতুটি সিলেট সুনামগঞ্জ সড়কের লামাকাজি এলাকায় অবস্থান। এই সেতুটিতে গত ৪০ বছর ধরে টোল আদায় করা হচ্ছে। সেতুর নির্মাণ ব্যয় ছিল মাত্র সাড়ে ৭ কোটি টাকা। দীর্ঘ ৪০ বছরে হাজার কোটি টাকা আদায় হলেও টোল থেকে রেহাই পাচ্ছে না পরিবহণ শ্রমিকরা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পর থেকে এই টোল আদায় বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি আবারও টোল আদায় শুরু করেছে। এ সেতুর টোল আদায় বন্ধ করা না হলে সিলেট বিভাগজুড়ে অনির্দিষ্টকালে পরিবহণ ধর্মঘট চলবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এর পূর্বে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের লামাকাজী এমএ খান সেতুতে টোল আদায় বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকরা। সোমবার দুপুরে শহরের মল্লিকপুরস্থ সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনালে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
সুনামগঞ্জ জেলার পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নে সভাপতি সেজাউল কবির জানিয়েছেন আমাদের পরিষ্কার কথা এ খান সেতুর টোল আদায় বন্ধ করতে হবে। না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য,সেতু সুরমা নদীর উপরে দিয়ে এটি সিলেট সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপন করার জন্য সেতুটি স্থাপিত হয় ১৯৮৭ সালে। অ্যাডমিরাল এম,এ খান ছিলেন একজন বিমান বাহিনীর মেজর তাহার নাম অনুসারে এই সেতুর নামকরণ করা হয়।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর