• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০৮ জুন, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৭ ঘন্টা পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২:২৪ দুপুর

জাহাজে ৭ জনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ডাকাতি নয়!

ছবি: সংগৃহীত

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করে রাখা এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত হত্যাকাণ্ডের পেছনে ডাকাতির ঘটনা নেই, প্রাথমিকভাবে এমনটাই মনে করছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, সিআইডি ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। 

এর আগে সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন এমভি আল-বাখেরা জাহাজটি থেকে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এ সময় আরও তিন জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনের মৃত্যু হয়। তবে কারা তাদের হত্যা করেছে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে একই কায়দায় সবাইকে হত্যা করার ঘটনাটি রহস্যজনক।

সহকর্মীদের দেওয়া তথ্যমতে, নিহতরা হলেন জাহাজটির চালক (মাস্টার) কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহত অপর ব্যক্তির নাম জুয়েল। তাদের সবার বাড়ি নড়াইলে। জুয়েলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

জাহাজের মেঝেতে পড়ে ছিল রক্তাক্ত কুড়াল, সারের একটি বস্তাও খোয়া যায়নি

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা  বলেন, ‘চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক স্যারের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই ওসিসহ ওখানে যাই। গিয়ে দেখলাম, জাহাজের মেঝেতে পড়ে ছিল রক্তাক্ত একটি চাইনিজ কুড়াল। এটি ছিল সারের জাহাজ। অবাক করা বিষয় একটি বস্তাও খোয়া যায়নি। কেউ ডাকাতি করতে এলে তো সার বা জাহাজ কোনও একটি নিয়ে যাবে। কিছুই নেয়নি। আবার জাহাজের কর্মীদের ঘুমন্ত অবস্থায় কোপানো হয়েছে। অবস্থা দেখে বোঝা যায়, তাদের হত্যার পর পর বিছানার চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে গেছে একই বিছানায়। সবাই নিজ নিজ কক্ষে একই কায়দায় হত্যার শিকার হওয়ায় কাউকে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আহত অবস্থায় তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। ফলে কোনও তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। আহত অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শ্বাসনালি কেটে ফেলায় তার কাছ থেকেও কোনও তথ্য আমরা নিতে পারিনি। তবে পুরো ঘটনার তদন্ত করছি আমরা। আশা করছি, তদন্তে বেরিয়ে আসবে এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা। বিষয়টি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। তবে এটি ডাকাতি নয়, ভিন্ন কিছু যে তা বোঝাই যাচ্ছে।’

খোয়া যায়নি জাহাজের কোনও মালামাল

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি   বলেন, ‘জাহাজের কোনও মালামাল খোয়া যায়নি। সার কী পরিমাণ ছিল, তা মালিকপক্ষ জানালে নিশ্চিত হওয়া যাবে। সারের বস্তাগুলো সাজানো-গোছানো দেখেছি। সেগুলো ঠিকমতো আছে। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, জাহাজ থেকে কিছুই চুরি হয়নি। সাত জনকে হত্যা করা হয়েছে। একজন জীবিত থাকলেও মৃতপ্রায়। কিছু রহস্য তো আছেই। আসলে কী ঘটেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তবে বিষয়টিকে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলছি না। মাঝেমধ্যে অনেক জায়গায় এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা সচেতন ও সতর্ক আছি। তদন্ত করছি। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ধরা যায়। তবে পুলিশের তদন্তের আগে পরিষ্কার করে কিছু বলা যাচ্ছে না। নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে নৌপথে নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ এই নৌপথে পণ্যবাহী জাহাজ চলে। যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়, সেটি নিশ্চিত করছি আমরা।’

প্রত্যেকের মাথায় গুরুতর আঘাত

নৌ-পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান  বলেন, ‘ধারণা করছি রবিবার রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা সোমবার দুপুর ২টার দিকে খবর পেয়েছি। এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রত্যেকের মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জাহাজের পাঁচটি কক্ষে পাঁচ জনের লাশ পেয়েছি আমরা। আরও তিন জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পেয়েছি। পরে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুজনের মৃত্যু হয়। আট জনই জাহাজটিতে ছিলেন। ধারণা করছি, ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।’

ডাকাতি নয়, তাদের টার্গেট ছিল হত্যা উল্লেখ করে সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘জাহাজের মালিকপক্ষ এখানে আসলে আমরা কিছু বিষয় জানতে পারবো। জাহাজে থাকা কোনও মালামাল চুরি হয়নি। ডাকাতি বলে প্রচার হলেও আমার মনে হচ্ছে এটি ডাকাতি নয়। কারণ জাহাজে কয়েক কোটি টাকার সার ছিল। সেগুলো স্পর্শও করেনি তারা। নিহতদের মোবাইলগুলো আমরা পেয়েছি। খুনিরা কিছু নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। খুনিদের টার্গেট ছিল হয়তো হত্যা, অন্য কিছু নয়। তদন্ত সাপেক্ষে এটি নিশ্চিত করে বলা যাবে। আপাতদৃষ্টিতে বলা যায়, এটি ডাকাতি নয়।’

আর কী কারণে ডাকাতি বলে মনে হচ্ছে না জানতে চাইলে এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘একটি কার্গো জাহাজে যারা থাকেন তারা সবাই কর্মচারী। তাদের কাছে সবমিলিয়ে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকাও থাকে না। শুধু পথ খরচ থাকে। ডাকাতরা সাধারণত ধরলে কর্মচারীরা সব দিয়ে দেয়। কারও কোনও ক্ষতি করে না, ডাকাতি করে চলে যায়। কিন্তু এসব কর্মচারীকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। যদি তারা বাধা দিতেন তাহলে শরীরের অন্য কোথাও আঘাত থাকতো। অথচ সবার লাশ নিজ নিজ কক্ষে বিছানার চাদরে ঢাকা ছিল। সবার মাথায় আঘাত করা হয়েছে, অন্য কোথাও আঘাত দেখা যায়নি। একজনের ছিল গলায় আঘাত। কাজেই এটি কোনোভাবেই ডাকাতি বলে মনে হচ্ছে না আমাদের। এজন্য পুলিশ, কোস্টগার্ড, সিআইডি, পিবিআইসহ পুলিশের সব টিম গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করছে। ফরেনসিকের জন্য যেসব আলামত সংগ্রহ করা দরকার, সব সংগ্রহ করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

রার/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com