
ছাত্রদের উপদেষ্টা হওয়া বিষয়ে সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি ছাত্রদের এই সরকার যাওয়া (উপদেষ্টা হওয়া) ভুল হয়েছে।
আমরা সবসময় দেখতে চাই, দেশে একটা গোষ্ঠী থাক। ছাত্রনেতারা থাকবে নির্লোভ। তাদের মধ্যে কোনো লোভ থাকবে না ক্ষমতার। এরকম একটি গোষ্ঠী থাক।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার সাচাইল দারুল হুদা কাছেমুল উলুম মাদরাসা মাঠে উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের সরকারে থাকা প্রসঙ্গে হাবিব-উন-নবী খান সোহেল আরও বলেন, সেই ছাত্রদের মধ্যেই যখন দেখি ক্ষমতায় লোভ তখন মনে কষ্ট হয়। যখন পত্র-পত্রিকায় দেখি আমাদের ছোট ভাইয়ের পিএস, এপিএসরা দুর্নীতি করে তখন কষ্ট লাগে। এপিএসরা যদি এত টাকা কামায়, তাইলে পিএসরা কী করেছে!
তিনি বলেন, ‘যারা ছাত্রদের ক্ষমতায় বসিয়েছে তারা দেশের অনেক বড় ক্ষতি করেছেন। আমরা আগে জানতাম বিপ্লব নাকি তার সন্তানদের খেয়ে ফেলে। এখন দেখি উলটো সন্তানরাই বিপ্লব খেয়ে ফেলার অবস্থা তৈরি করেছে।’
হাবিব-উন-নবী খান সোহেল আরও বলেন, আমরা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। এটা কি অন্যায়? বিএনপি নির্বাচন চাইলেই বলা হয়, তারা ক্ষমতায় যেতে চায়। তাহলে কি বিএনপি ছাড়া আর কেউ নির্বাচনে জিতবে না?
তিনি আরও বলেন, আমরা আন্দোলন স্থগিত রেখেছি, কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না যে, গত ১৫ বছরে আমরা আন্দোলনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। বর্তমানেও আন্দোলন বন্ধ করে দেইনি। সীমা অতিক্রম করলে আবারও রাজপথে নামবে বিএনপি। বিএনপি ছাড়া কোনো দল সাহস করেনি আমাদের সাথে আন্দোলনে নামার।
বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। শেখ মুজিব ফিরে এসে বাকশাল কায়েম করেছিলেন এবং দেশের মানুষকে না খাইয়ে রেখেছিলেন।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলম।
তাড়াইলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ছাইদুজ্জামান মোস্তফার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন লিটনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন।বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।
১১ বছর পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনকে ঘিরে দিনভর নেতা-কর্মীদের মধ্যে ছিল উৎসবের আমেজ। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড থেকে স্লোগান মুখর নেতা-কর্মীরা ব্যানারসহ মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে জড়ো হন। দুপুরের মধ্যেই মাদরাসা মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
এর আগে, সম্মেলন অনুষ্ঠানের নির্ধারিত তারিখ ছিল গত ১৫ জানুয়ারি। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলে একজন দলীয় কর্মী নিহত হলে সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায়।
সম্মেলনে সভাপতি পদে সর্ব সম্মত ক্রমে সারোয়ার হোসেন লিটন নির্বাচিত হলেও সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে ভোট গ্রহণ চলছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর