
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর কচাকাটায় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের সাতটি পরিবারের ২১ জন সদস্যের নামে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে বাদী পরিজান বেগমের বিরুদ্ধে। তিনি কচাকাটা থানার কেদার ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের চরবিঞ্চুপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং আজিজুল হকের স্ত্রী।
মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর) সূত্রে জানা যায়, বাদী পরিজান বেগম অভিযোগ করেন যে, গত ১৭ মার্চ তার বসতবাড়িতে অভিযুক্তরা অনধিকার প্রবেশ করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত, শ্লীলতাহানি, অগ্নিকাণ্ড, ক্ষতিসাধন ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ৩,২৯,০০০ টাকা ক্ষয়ক্ষতির দাবি করে তিনি ফৌজদারি আইনের ১৫৪ ধারায় গত ৬ মে ২০২৫ তারিখে কচাকাটা থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেন। যার স্মারক নম্বর ৯২২(৩)/১, তারিখ- ০৬/০৫/২৫।
তবে সরেজমিনে মামলায় উল্লেখিত ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। বাদীর বাবা ও মামলার ৬নং সাক্ষী পনির উদ্দিন বলেন, “রমজান মাসে রাতের বেলায় ঘরের ফাঁক দিয়ে আগুন দেখে পাশের ঘরে থাকা ছেলের বউকে ডাকি। বাইরে এসে দেখি খড়ের ঢিপিতে আগুন লেগেছে, তবে ঘরবাড়িতে কোনো ক্ষতি হয়নি। কে আগুন দিয়েছে, তা আমি দেখিনি।”
তার ছেলের বউ জাহানারা বেগমও একই কথা বলেন, “শ্বশুরের ডাকে ঘুম থেকে উঠে দেখি খড়ের ঢিপিতে আগুন। আমরা সবাই মিলে আগুন নিভিয়ে ফেলি, তবে কাউকে আগুন লাগাতে দেখিনি।”
প্রতিবেশী লিলিয়া খাতুন বলেন, “আমরা আগুন লাগতে দেখেছি, কিন্তু কে দিয়েছে তা জানি না। বাড়িতে কোনো ক্ষতি হয়নি।”
বাদী পরিজান বেগমের স্বামী আজিজুল হক জানান, “আমি ইটভাটায় কাজ করি। গত ৬-৭ মাস ধরে বাইরে ছিলাম, মাত্র ৮-১০ দিন হলো বাড়ি ফিরেছি। বাড়িতে আগুন লাগার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
বাদীর শাশুড়ি বানু জানান, “জমি নিয়ে বিরোধ ছিল, তাই বউকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেই। আগুন বাপের বাড়িতে লেগেছে, আমাদের বাড়িতে না। আমরা আগুন দেখিনি।”
বাদীর শ্বশুর মশিউর রহমান বলেন, “গত দুই মাসে এ বাড়িতে আগুন বা অন্য কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।”
পরিজান বেগম নিজেও জানান, আগুন লাগার ঘটনা তার বাবার বাড়িতে ঘটেছে, তার শ্বশুরবাড়িতে নয়। এবং কে আগুন দিয়েছে, তা তিনি দেখেননি।
অপরপক্ষের পক্ষে বিবাদী আলম বলেন, “মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। আমি তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সঠিক তদন্তের দাবি জানাই।”
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম বলেন, “মামলাটি প্রাথমিকভাবে ফৌজদারি আইনের ১৫৪ ধারায় রেকর্ড হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর