
‘আমার ছেলে ছোট থেকেই মেধাবী, নম্র, ভদ্র স্বভাবের। প্রত্যেক শ্রেণির পরীক্ষায় প্রথম হতো। কোনোদিন কিছু নিয়ে আমার সঙ্গে জেদ করেনি। লেখাপড়ার প্রতি ছিল তার খুবই মনোযোগ। স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ডাক্তার বানাব। কল্পনাও করতে পারছি না। আমার ছেলেটা এভাবে মারা যাবে। সে পরীক্ষার রেজাল্ট আনতে গিয়ে লাশ হয়ে ঘরে ফিরবে।’ ছেলেকে হারিয়ে এভাবেই বিলাপ করছিলেন ধ্রুবব্রত দাসের মা তমা রানী শিং।
মঙ্গলবার (১৩ মে) সকালে গাইবান্ধা পৌরশহরের মধ্যপাড়ায় ধ্রুবব্রতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা থেকে তার মরদেহ আনা হয়েছে। ছেলের শোকে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন মা। ধ্রুবকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় করেছেন আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীরা। সহপাঠীরা ধ্রুবর স্মৃতি হাতড়ে কান্নাকাটি করছেন।
ধ্রুবর মা বলেন, ‘গাইবান্ধা সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে এ প্লাস নিয়ে পাস করে ধ্রুব। ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করতে আমরা ঢাকা গিয়েছি। সেখানে নটরডেম কলেজে ভর্তি করেছি। বিদ্যালয়ে বরাবরই ভালো রেজাল্ট করতো সে। এবার ওই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।’
তিনি বলেন, ‘সোমবার (১২ মে) বাবার সঙ্গে টেস্ট পরীক্ষার রেজাল্টের কার্ড আনতে গিয়ে লাশ হলো। আমার ছেলে ভবন থেকে পড়ে গেছে না কি পরিকল্পনা করে ফেলে দেওয়া হয়েছে, সেটি অজানা।
গাইবান্ধা শহরের মধ্যপাড়ার বাণীব্রত দাস চঞ্চলের ছেলে ধ্রুবব্রত দাস সোমবার বিকেল ৩টার দিকে মতিঝিলে নটরডেম কলেজের ভবন থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ধ্রুবব্রত দাসের মেসো (খালু) সঞ্জিত রায় মুক্তি খবরের কাগজকে বলেন, ‘ধ্রুবকে তার বাবা কলেজে নিয়ে যেতেন, ক্লাস শেষে আবার নিয়ে আসতেন। অন্য ছেলেদের থেকে সে আলাদা। পড়ালেখা ছাড়া অন্যকিছু সে করতো না। তার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর